বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খাওয়ার পর থেকেই দলীয় স্তরে ফলাফলের কাঁটাছেড়া শুরু করেন মমতা। প্রশাসনের প্রসাদপুষ্ট দলের একটা বড় অংশই নানাভাবে আমজনতার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জেলা ও রাজ্যের পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে সোজা সাপ্টা সেকথা বলে ভুল সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। একদিকে সংগঠনকে দুর্নীতিমুক্ত করা, অন্যদিকে জনসংযোগ বাড়ানোকেই প্রাধান্য দিয়েছেন মমতা। এদিন দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী সেই জনসংযোগের উপরেই সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। সেই লক্ষ্যপূরণে জনপ্রতিনিধিদের আচার-আচরণ বদলাতে বলেছেন নেত্রী। ঔদ্ধত্য ত্যাগ করে ভুল হয়ে থাকলে, তা মানুষের কাছে গিয়ে কবুল করার পাঠও দিয়েছেন।
দু’ সপ্তাহ বাদেই ধর্মতলায় দলের বার্ষিক সমাবেশ। শহিদ দিবসের জমায়েতে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেদিকেও বিধায়কদের তৎপর হতে বলেছেন মমতা। অর্থাৎ দলের ফল লোকসভা ভোটে খারাপ হলেও তার যেন কোনও প্রভাব ধর্মতলার সভায় না পড়ে। বৈঠকে হাজির থাকা একাধিক বিধায়কের মতে, অতিরিক্ত প্রশাসন নির্ভর হওয়াই জনবিচ্ছিন্নতার অন্যতম কারণ। ঘটনাচক্রে শহিদ দিবসের কর্মসূচি সেই হারানো জনসংযোগের অভ্যাস পুনরুদ্ধারের সুযোগ এনে দিয়েছে। তাই তৃণমূল ভবনে বসে নেত্রী যে নির্দেশ দিলেন, তা কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে, সেটা নিজেই যাচাই করবেন তিনি। সেই উদ্দেশ্যে শহিদ দিবসের পরপরই তিনি বস্তুত পরীক্ষা নেবেন। বিধায়কদের কলকাতায় ঘোরাঘুরি না করে যতটা বেশি সম্ভব নিজেদের বিধানসভা এলাকায় থাকতে বলেছেন। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা বাড়াতে বলেছেন তিনি। জীবনযাত্রা যেন আমজনতার থেকে তাঁদের দূরে ঠেলে না দেয়, সেদিকেও সতর্ক থাকতে বলেছেন মমতা।
রাজ্যের এক মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে এলাম আর চুপ করে নেত্রীর কথা শুনে চলে গেলাম, কাজে তার কোনও প্রতিফলন ঘটল না, তা চলবে না। এর আগে কোর কমিটির বৈঠকে মমতা সাফ জানিয়ে দেন, এখন থেকে দলের কাজে বেশি বেশি করে সময় দেবেন। এদিন সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। ওই মন্ত্রীর মতে, যে ‘হোম টাস্ক’ দেওয়া হল, তা কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেটা তিনি নিজেই পরখ করে দেখবেন। তাই চলতি মাসের শেষে ফের বিধায়কদের নিয়ে পর্যালোচনায় বসবেন বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বিধায়কদের মাধ্যমে এভাবেই রাজ্যের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের উপর দলনেত্রী নিজে নজরদারি চালাবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।