নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বিগত তিন বছরে সবথেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছে তথ্য-প্রযুক্তি (আইটি) ক্ষেত্র। লক্ষাধিক কর্মী ছাঁটাই হয়েছে শুধু ভারতেই। ২০২৪ সালে অবশ্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু এবার অন্যান্য বাণিজ্য সেক্টরেও শুরু হয়েছে এই বিপজ্জনক প্রবণতা। ২০২৫ সাল আসার আগে থেকে আইটি এবং স্টার্ট আপের পাশাপাশি কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে ভোগ্যপণ্যের খুচরো বাণিজ্য, পরিষেবা বা সার্ভিস সেক্টর, ফ্যাশন তথা টেক্সটাইল ব্র্যান্ডের চেইন, অ্যাপ ক্যাব থেকে অনলাইন বাণিজ্য সংস্থায়। ওই সব কোম্পানিতে পুনরায় নোটিস পাঠানো হচ্ছে স্বেচ্ছা ইস্তফার জন্য। সব মিলিয়ে যা ইঙ্গিত, তাতে ভারতের এই কর্মী ছাঁটাই প্রবণতা আগামী আর্থিক বছর অর্থাৎ এপ্রিল মাস থেকেই জোরকদমে বাড়তে চলেছে। এর নেপথ্যে অন্যতম কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা করা বাণিজ্য যুদ্ধ। মার্কিন দেশে শেয়ার বাজারে ধস নামছে। বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধির হার। আর সেই আবহকে আরও আতঙ্কিত করে মেটা, গুগল, আমাজনের মতো সংস্থাগুলি জানিয়েছে, পুনর্গঠন কর্মসূচির জন্য ফের কর্মী সংকোচন করবে। এরকম মোট ৫৪টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ভারতের ২৭টি সংস্থায় বড়সড় কর্মী সংকোচন প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। ফলে তীব্র শঙ্কা ছড়িয়েছে কাজের বাজারে।
২০২৪ সালে ৩৮ হাজার তথ্য-প্রযুক্তি কর্মী ছাঁটাই হয়েছে ভারতে। মোদি সরকার সবথেকে বেশি যে সেক্টরকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন এবং বিপুল কর্পোরেট করছাড় যারা পায়, সেই স্টার্ট-আপে প্রায় ১০ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এহেন পরিসংখ্যান সবই নামজাদা বিভিন্ন কোম্পানির। আর্থিক সমীক্ষক সংস্থাগুলির কাছে সেব্যাপারে বিশদ তথ্য রয়েছে। এর বাইরেও বহু সংস্থায় হয়েছে কর্মী ছাঁটাই। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকে তথ্য-প্রযুক্তি থেকে পরিষেবা, ভোগ্যপণ্য, রিটেল, ম্যানুফাকচারিং ক্ষেত্রের বেশ কিছু সংস্থায় কখনও ৫০০, কখনও এক হাজার কর্মী কাজ খুইয়েছেন। সেই প্রবণতা গত নভেম্বর পর্যন্ত বজায় থাকে। নতুন বছর পড়তে না পড়তে আবারও সেই আশঙ্কার মেঘ ভারতের চাকরির বাজারে। আর এমন সময় মিলেছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত। ফলে চাকরির এই সঙ্কট আগামী দিনে আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।