হস্তশিল্পীদের প্রতিভার স্বীকৃতি ও সুনাম। আর্থিক ঝুঁকি নেওয়ায় বিরত হন। কর্ম বিষয়ে সুখবর পেতে পারেন। ... বিশদ
মঙ্গলবার সকাল থেকেই সোমনাথ ওরফে কোচের খোঁজ পাচ্ছিলেন না তাঁর মাসি। দীর্ঘক্ষণ ধরে বাড়ির দরজা বন্ধই ছিল। পাড়ার লোকজন এসে ডাকাডাকি করলেও, দরজা খোলেননি কেউ। খবর দেওয়া হয় কসবা থানায়। দরজা ভাঙতেই শিউরে ওঠা দৃশ্য। ওড়নায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে রয়েছেন সোমনাথ রায় ও তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায়। বছর চল্লিশের সোমনাথের বুকে আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীলের দেহ বাঁধা। পুলিস সূত্রে খবর, এদিন দেহগুলির ময়না তদন্ত হয়নি। ময়না তদন্তের পরেই ওই তিনজনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বোঝা যাবে। তবে শিশুসন্তানের শরীরে আঘাতের (হেমাটোমা) চিহ্ন রয়েছে। অ্যাসবেসটাসের বাড়ির দুই দেওয়ালেই লেখা রয়েছে মোট পাঁচ জনের নাম। পুলিস সূত্রে খবর, ওই সুইসাইড নোটেই মামা-মামি-মাসি এবং ব্যাঙ্কের দুই রিকভারি এজেন্টের নাম রয়েছে। মৃত্যুর জন্য এই পাঁচজনকে দায়ী করেছে রায় পরিবার। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন সুমিত্রার দিদি সুপর্ণা ভৌমিক। এর পাশাপাশি তাঁর বাবা বিশ্বনাথ ভৌমিক খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমনাথের একটি অটো রয়েছে। তবে নিজে তা চালাতেন না। গড়িয়াহাট-রামলাল বাজার রুটের ওই অটোর চালক নিয়োগ করেছিলেন তিনি।
আত্মহত্যার পথ বাছলেন কেন এই দম্পতি? স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল সাহা বলছিলেন, হালতুর পূর্বপল্লিতে সোমনাথের মামাবাড়ি। ওকে জন্মাতে দেখেছি। ২০২০ সালে বিয়ে করে। শ্বশুরবাড়ি হালতুর তারাপীঠে। ছেলে রুদ্রনীলের জেনেটিক্যাল সমস্যা ছিল। তার চিকিত্সার পিছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছিল। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বছর দেড়েক আগে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল। কিন্তু সোমনাথ বা ওঁর স্ত্রী কেউই এই বিষয়ে পাড়ায় কিছু আলোচনা করতেন না। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি সেই চিকিত্সার খরচ মেটাতেই বিপুল ঋণের বোঝা চেপেছিল রায় পরিবারের মাথায়? স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমনাথের বাড়িতে ইদানিং পাওনাদাররা যাতায়াত শুরু করেছিলেন। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, খাওয়ার জল সরবরাহকারীকে জানানো হয়েছিল, আগামী তিন দিনের জন্য তাঁরা থাকবেন না। অটোর চাবিও মাসির কাছে দিয়ে রেখেছিলেন চালককে দেওয়ার জন্য। সেই মাসিকেও আজ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিস। স্থানীয়রা বলছিলেন, সোমবার রাতেও রাস্তার ধারে অটোর টুকটাক মেরামতি করতে দেখা গিয়েছিল সোমনাথকে। এদিন কলকাতা পুলিসের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বাড়ি থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাভেদ খানও।