দেশ

‘কবচ’ প্রচারেই, কোথায় গেল রেল সুরক্ষা তহবিলের ১ লক্ষ কোটি টাকা, প্রশ্ন সরকারের অন্দরেই

নিজস্ব প্রতিনিধি, (নির্মলজোত) শিলিগুড়ি, নয়াদিল্লি ও কলকাতা: জ্যোতিষ শাস্ত্রে খারাপ সময় থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে ‘কবচ-তাবিজ’ পরার নিদান দেওয়া হয়। কিন্তু ভারতীয় রেলের ‘কবচ’ সাধারণ যাত্রীদের ট্রেনযাত্রাকে মারণ সফরে পরিণত করেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে বহু বছর ধরে ভারতীয় রেল ঘটা করে ‘কবচ প্রযুক্তির’ প্রচার চালাচ্ছে। তার মূল উদ্দেশ্যে একই লাইনে এসে যাওয়া দু’টি ট্রেনের মধ্যে সরাসরি ধাক্কা এড়ানো। সোমবার নির্মলজোতের ওই অংশে কবচ প্রযুক্তি থাকলে এড়ানো যেত এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। অভিযোগ, রেল লাইনে এই কবচ প্রযুক্তি ছিল না। স্বভাবতই পরিকাঠামো উন্নয়নে গালভরা বিজ্ঞাপন প্রচারিত হলেও বাস্তবে দেশের সার্বিক রেল পরিকাঠামো ও যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 
সরকার তথা রেলমন্ত্রকের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, সুরক্ষা তহবিলের ১ লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে কী হল? বাজেটে অর্থবরাদ্দের পাশাপাশি ২০১৭ সালে রেলমন্ত্রক ঘোষণা করেছিল, একটি বিশেষ তহবিল তৈরি হচ্ছে। ১ লক্ষ কোটি টাকার। পাঁচ বছরের মধ্যে সেই তহবিল ব্যবহার করে রেলসুরক্ষা আমূল বদলে ফেলা হবে। খোলনলচে পরিবর্তন করে রেলের দুর্ঘটনা প্রবণতাকে প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনার প্ল্যান ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০২২ সালের মধ্যে সেই তহবিল ও কাজ পূর্ণ হওয়ার কথা। অথচ ঠিক পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন মাসে বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়। আর তারও একবছরের মধ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা। অর্থাৎ গাফিলতি অথবা প্রযুক্তিগত ত্রুটি—দুই কারণেই দুর্ঘটনা প্রবণতা বিন্দুমাত্র কমেনি। প্রশ্ন উঠছে ওই ১ লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে কী করা হয়েছে? নাকি তহবিল নির্মাণের পরিকল্পনা বিশ বাঁও জলে? তহবিলের নাম ছিল রাষ্ট্রীয় রেল সংরক্ষণ কোষ। ইতিমধ্যেই এই তহবিল নিয়ে প্রশ্ন ও সন্দেহ উত্থাপন করেছিল ক্যাগ। রেলমন্ত্রক বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা করে ব্যয় করবে সুরক্ষাখাতে। প্রধানত দু’টি প্রকল্পে—রেলওয়ে ক্রসিং এবং রেল লাইনের সংরক্ষণ। আর দ্বিতীয় অগ্রাধিকার, নতুন কামরা নির্মাণ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, ইঞ্জিনের আধুনিকীকরণ, লোকো পাইলট, সহকারী লোকো পাইলট, গার্ডের প্রশিক্ষণ। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা ছিল, নিয়ম করে পুরনো রেললাইনের সংস্কার ও সুরক্ষা। বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের এবং ৫ হাজার কোটি টাকা করে রেলের। ক্যাগ রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরপর তিন বছরই রেল নিজের প্রদেয় ৫ হাজার কোটি টাকা তহবিলে দেয়নি। উল্টে গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা এই তহবিল থেকে নিয়ে অন্য খাতে ব্যয় করা হয়েছে। 
রেলের বার্ষিক রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে, গত ৬ বছর ধরে লাগাতার রেলমন্ত্রক পুরনো রেললাইনের সংস্কার, মেরামতি, আধুনিকীকরণে বেশি জোর দেওয়ার পরিবর্তে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে নতুন রেলপথ ঘোষণায়। চমকদার প্রচারের জন্যই এই উদ্যোগ বলে একাধিকবার অভিযোগ তোলা হয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য রেল ব্যয় করেছে ৮০ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। কিন্তু পুরনো রেললা‌ই঩নকে নিরাপদ রাখার কাজে? ৫৪ হাজার কোটি টাকা। 
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় প্রথম চালু করেন স্বয়ংক্রিয় অ্যান্টি কলিশন সিস্টেম। যা স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম। ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই কবচ রেল ট্র্যাকে বসানো থাকে। এদিন দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রচুর ট্রেন বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন সময় ট্রেন দুর্ঘটনার পরও কবচ চালু করার ব্যাপারে রেলমন্ত্রকের টনক নড়েনি। অথচ, বর্তমান রেলমন্ত্রীর সবথেকে জোরালো দাবি, ভারতীয় রেলকে ১০০ শতাংশ সুরক্ষিত করার জন্য আনা হয়েছে অপারেশন কবচ। অথচ এখনও এই বহুশ্রুত দাবি কার্যকর হয়নি সিংহভাগ জোনেই। গত বছর বালেশ্বরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত তিন ট্রেনেও যেমন এই রক্ষাকবচ ছিল না, একবছর পর কাঞ্চনজঙ্ঘাতেও নেই কোনও কবচ!
8d ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

হস্তশিল্পীদের কর্মে সাফল্য ও সুনাম। সন্তানের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। ধর্মকর্মে মনোযোগ বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৬৭ টাকা৮৪.৪১ টাকা
পাউন্ড১০৪.৩১ টাকা১০৭.৭৮ টাকা
ইউরো৮৮.১৪ টাকা৯১.২৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
26th     June,   2024
দিন পঞ্জিকা