অন্দরমহল

বিদেশে বড়দিন

ক্রিসমাস অনেক ক্ষেত্রেই পারিবারিক উদ্‌যাপন। তাতেই আনন্দের ষোলোআনা ঠাসা থাকে। ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান থেকে জানালেন তিন প্রবাসী।
 
দেশে যেমন দুর্গাপুজো, বিদেশে তেমনই ক্রিসমাস। এই উৎসবটি ঘিরে ইউরোপ আমেরিকায় তো বটেই, প্রাচ্যের বহু দেশেও উদ্‌যাপনের ঘটা দেখার মতো। ক্রিসমাসের বাজার, পার্টি ইত্যাদি শুরু হয়ে যায় বহু আগে থেকেই।

হ্যালোইনের পরেই ইংল্যান্ডে উন্মাদনা
ইংল্যান্ডে বহুদিন রয়েছেন বিদিশা দত্ত। তিনি বললেন, ‘ইংল্যান্ড সহ ইউরোপের অন্যত্রও নভেম্বরের শেষ নাগাদ, হ্যালোইনের পর থেকেই সকলের মনে একটা ছুটি ছুটি ভাব দেখা দেয়। পাড়ায় পাড়ায় ছোট বড় দোকান বসে যায় ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে। ইংল্যান্ডে ক্রিসমাস মার্কেট একটা বিশাল ব্যাপার। এই সময় সকলেই পরিবার, আত্মীয়, পরিচিত, বন্ধুদের জন্য ছোট বড় জিনিস কেনে। এইসব মার্কেটে পোশাক, ব্যাগ, গয়না, বাড়ির সাজসরঞ্জাম থেকে শুরু করে শখের জিনিস সবই পাবেন। এছাড়াও আছে ক্রিসমাস লাইট। শহরের বড় দোকানগুলো বড়দিনকে কেন্দ্র করে বিশেষ আলোর আয়োজন করে। শ্যানেল তো একটা গোটা রাস্তাই ঘিরে দেয় আলোর চাঁদোয়ায়। এছাড়াও জন লুইস, ফোর্টনাম অ্যান্ড মেসন সহ আরও বিভিন্ন বড় ব্র্যান্ড তাদের দোকানের ভিতরে এবং সংলগ্ন জায়গা জুড়ে আলোর মালা সাজিয়ে দেয়। এরপর ক্রিসমাসের দিন পনেরো আগে থেকে শুরু হয় সোশ্যাল পার্টি। শহরের বিভিন্ন অফিসে, ক্লাবে এইসব পার্টির আয়োজন করা হয়। সহকর্মীরা নিজেদের মধ্যে এই উদ্‌যাপনে মেতে ওঠেন। এসব শেষ হয় ডিসেম্বরের কুড়ি, বাইশ তারিখের মধ্যে। তখন ঘরে ফেরার পালা। বাড়িতে, বাবা মা, আত্মীয়দের জমায়েতে যোগদান করাই ক্রিসমাসের আসল উদ্‌যাপন। সেই কারণেই ক্রিসমাস বিদেশিদের কাছে পারিবারিক উৎসব। 
প্রবাসীরা এই সময় ঘরে ফিরতে না পারলেও বন্ধুদের জমায়েতে অবশ্যই যোগ দেয়। কোনও এক বন্ধুর বাড়িতে বসে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা আর হইহই চলে। ট্র্যাডিশনাল খাবারের মধ্যে টার্কি, বেকন আর ক্রিসমাস পুডিং রয়েছে। আর আছে ক্রিসমাস ক্র্যাকার। খাবার আগে প্লেটে সাজানো হয় এগুলো। একটা সুতো থাকে যা ধরে টানলে বিকট শব্দে বাজি ফেটে যায় আর তার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে এক টুকরো কাগজ। তাতে কখনও জোকস লেখা থাকে, কখনও কোনও মেসেজ থাকে। যাই থাক, তা সকলের সামনে পড়ে শোনাতে হয়। ক্রিসমাসের পরের দিন বক্সিং ডে। সেদিনও সব বড় ব্র্যান্ড সেলের আয়োজন করে। কোথাও অর্ধেক দামে, কোথাও বা চল্লিশ শতাংশ কমে জিনিসপত্র বিক্রি হয়। তা কেনার জন্য ভিড় লাগে। তারপর আবারও কাজে ফেরার পালা। নতুন বছরে নতুন উদ্যমে শুরু হয় কাজ।   
        
মার্কিন দেশে ক্রিসমাসের মজা
বহু দিন ধরেই মার্কিন প্রবাসী, বিদিশা বাগচির কথায় ধরা পড়ল সেখানকার ক্রিসমাসের রূপ। ‘এদেশে ক্রিসমাস খুবই প্রাইভেট সেলিব্রেশন। বাড়িতে আত্মীয়দের সঙ্গে নিভৃতে কাটানো একটা দিন’, বললেন বিদিশা। আমেরিকা মহাদেশে ক্রিসমাস উদ্‌যাপন কীভাবে হবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করে কোথায় হচ্ছে তার উপর। বড় কোনও শহর হলে সেখানে হইচই আর উন্মাদনা থাকে দেখার মতো। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই সব বন্ধ— শুধু নানা রকমের আলো দিয়ে সুন্দর করে বাড়ি, ঘর, দোকান, বাজার সাজানো। এই নিয়েই মার্কিন ক্রিসমাস।
বাঙালিদের কাছে ক্রিসমাস একটা শীতের মরশুমের সঙ্গে জড়ানো আবেগ। আমেরিকা খ্রিস্ট ধর্মীয় দেশ হওয়ার কারণে তাদের জন্য ওই দিনটা পুরোপুরিই ধার্মিক। নিকট আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সময় কাটানোর দিন। গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করার দিন। আজকাল অনেক ভারতীয় পরিবারেই একটা করে ক্রিসমাস ট্রি লাগানো হয়। বিশেষ করে সেই পরিবারে যদি কোনও ছোট সদস্য থাকে তাহলে তো ক্রিসমাস ট্রি মাস্ট।  
দেশে যেমন প্রতি বছর দুর্গাপুজোর সময় নতুন জামাকাপড় কেনা হয়, বড়দিনে ঠিক তেমনই গাছ সাজানোর অর্নামেন্টস ও লাইট কেনার ঘটা লেগে যায়। বাড়ি ও গাছ সাজানোর রীতিও এখন ক্রিসমাসের অঙ্গ। বাঙালি বাড়িতেও তার ব্যতিক্রম দেখা যায় না। 
এছাড়া আছে ক্রিসমাস উদ্‌যাপন। ‘কখনও আমাদের বাড়িতে কখনও বা অন্য কোনও ভারতীয় বন্ধুর বাড়িতে ‘পটলাক’ করা হয়। অর্থাৎ সবাই মিলে রান্নাবান্না করে ক্রিসমাস পার্টির আয়োজন করা হয়’, বললেন বিদিশা। সবাই একটা করে পদ রান্না করে নিয়ে যাওয়া হয়। তার সঙ্গে থাকে সবার জন্য ছোট ছোট উপহার। গাড়ি করে শহরের নানা এলাকায় ঘুরে আলোকসজ্জা দেখে, বাড়িতে ফায়ারপ্লেসের ধারে বসে গানবাজনা করে বা কোনও ঘরোয়া খেলা খেলে প্রবাসীদের সন্ধেটা আনন্দে কেটে যায়। যখন ঝুপঝুপ করে বরফ পড়া শুরু হয়, বাইরে গিয়ে মুখে-চোখে বরফ কুচির হাল্কা ছোঁয়া অনুভব করেই মার্কিন প্রবাসীদের ক্রিসমাস উদ্‌যাপনের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে ওঠে।

জাপানে চোখ টানে সাজ আর আলো
প্রাচ্যের দেশ জাপানে ক্রিসমাস আবার একেবারেই অন্যরকম। বহুদিন জাপানে রয়েছেন অনিন্দিতা দত্ত। বললেন, কাজই তাঁদের সবচেয়ে বড় উদ্‌যাপন। যে কোনও অনুষ্ঠানই তাই ছুটিতে নয়, কাজেই পালন করা হয়। এখানে ক্রিসমাসে আলাদা করে অফিসকাছারি ছুটি থাকে না। মাঝেমধ্যে স্কুলগুলো ছুটি দেওয়া হয় অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়লে। তাই বলে ক্রিসমাস উদ্‌যাপনে কোনও খামতি দেখা যায় না। দিনের বেলা অফিসে ব্যস্ত থাকলেও ক্রিমসামের প্রায় দিন পনেরো বা এক মাস আগে থেকেই সন্ধেবেলা সকলেই কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর মতোই ক্রিসমাস মার্কেট বসে যায় জাপানের টোকিও শহরে। এইসব বাজারে চকোলেট, ওয়াইন, কুকিজের মতো টুকটাক জিনিস বিক্রি হয়। এছাড়াও বিদেশি ব্র্যান্ডের কসমেটিক্স, পোশাক ইত্যাদিও পাওয়া যায় ক্রিসমাস মার্কেটে। বড়দিনে উপহার দেওয়ার রীতি জাপানিদের মধ্যে খুবই বেশি। চা, চকোলেট, ঘর সাজানোর জিনিস, নানারকম ক্রিম ‌ইত্যাদি দেয় তারা একে অপরকে। আর চলে অবাধ খাওয়াদাওয়া। রেস্তরাঁ আর কাফেতে ভিড় লেগেই থাকে। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর মতো এখানে ক্রিসমাস পারিবারিক উৎসব নয়। লোকে বন্ধুদের সঙ্গে কাটায় এই দিনটা। তবে নতুন বছরের শুরু করে বাড়িতে, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গেই। সেদিন রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে, রেস্তরাঁয় ভিড় থাকে না। বরং নিভৃতে নতুন বছরের আনন্দ উদ্‌যা঩পিত হয় জাপানের প্রতিটি বাড়িতে।  
14h 14m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায়...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.১৩ টাকা৮৫.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৪.২৭ টাকা১০৭.৯৮ টাকা
ইউরো৮৬.৪২ টাকা৮৯.৭৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা