পেশাদার উকিল, সাহিত্যিক, বাস্তুবিদদের কর্মের প্রসার ও ব্যস্ততা বৃদ্ধি। বিদ্যা ও পুজোপাঠে শুভ দিন। ... বিশদ
(সুনীল-পেনাল্টি) (রহমত, শারিফ)
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগামী ১১ জুন কাতারের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের অন্তিম ম্যাচে মাঠে নামবে ভারত। সেদিনই হয়তো ডাগ-আউটে শেষবারের জন্য দেখা যাবে ইগর স্টিমাচকে। কিন্তু বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকলে মঙ্গলবারই পদত্যাগ করা উচিত ছিল তাঁর। ঘরের মাঠে আফগানিস্তনের বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেও হেরে মাঠ ছাড়ল ভারত। ক্ষীণতম হল পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার আশা। এদিন দেশের জার্সিতে ১৫০তম ম্যাচে স্কোরশিটে নাম তুলেও সতীর্থদের ব্যর্থতায় হারই সঙ্গী হল সুনীল ছেত্রীর। ম্যাচ শেষে তাঁর হতাশার মধ্যেই প্রকট হয়ে ওঠে ভারতীয় ফুটবলের দুরবস্থা। এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে কোচ থেকে ফেডারেশন— সব পর্যায়ে আমুল পরিবর্তনের প্রয়োজন। না হলে ভারতীয় ফুটবল এক কদমও এগবে না। তা সত্ত্বেও স্টিমাচের গলায় শোনা গেল সেই একই কথা, ‘আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। এখান থেকে আমরা পরবর্তী রাউন্ডে পৌঁছতে পারি।’ চার ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে আপাতত দ্বিতীয় স্থানেই ভারত। আর জিতে তিন নম্বরে উঠে এল আফগানিস্তান। ম্যাচে বিজয়ী দলের হয়ে স্কোরশিটে নাম তোলেন রহমত আকবেরি ও শারিফ মুখাম্মদ।
ভারতীয় কোচের পদে প্রায় পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলেন স্টিমাচ। এই দীর্ঘ সময়ে আপফ্রন্টে সুনীলের বিকল্প খুঁজে উঠতে ব্যর্থ ক্রোট কোচ। মঙ্গলবার তা ফের প্রমাণিত। অধিনায়ক মাঠ ছাড়ার পর গোল করার মতো জায়গায় পৌঁছতে পারলেন না মনবীররা। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে প্রথম লেগে একইভাবে আফগানদের কাছে আটকে গিয়েছিল স্টিমাচ-ব্রিগেড। শেষ পাঁচ ম্যাচে গোলের খরা কাটাতে ঘরের মাঠে আরও একবার সুনীলকে সামনে রেখেই দল সাজিয়েছিলেন ক্রোট কোচ। তৃতীয় মিনিটেই গোলের সুযোগ এসেছিল ভারত অধিনায়কের সামনে। প্রতিপক্ষ বক্সে ব্রেন্ডনের বাড়ানো পাস ধরে চকিতে শট নেন তিনি। এক্ষেত্রে পোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে ফিরতি বল জালে জড়ানোর সুযোগ ছিল মনবীরের সামনে। তবে বড়লোকের বখাটে ছেলের মতো সেই বল উড়িয়ে দেন তিনি।
পাঁচদিন আগে সৌদি আরবের মাটিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হতশ্রী ফুটবলে ড্রয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ভারতকে। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে মনবীরদের পারফরম্যান্স এতটুকু বদলায়নি। ব্যাক পাস আর স্কোয়ার পাসেই সীমাবদ্ধ থাকতে হল জ্যাকসনদের। প্রথম ৩০ মিনিটে আফগানদের খেলায় তাগিদ ছিল বেশি। তবে গতির বিপরীতে ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি পায় ভারত। ডানপ্রান্ত থেকে মনবীরের ক্রস হেড করতে গিয়ে হ্যান্ডবল করেন আমিরি। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিক থেকে জাল কাঁপিয়ে ভারতকে এগিয়ে দেন সুনীল (১-০)। লিড নিলেও মনবীরদের খেলার খুব একটা পার্থক্য ঘটেনি। দলের খেলায় বদল আনতে ৬৮ মিনিটে একসঙ্গে তিনটি পরিবতর্নের পথে হাঁটেন স্টিমাচ। ভারতীয় কোচের এই সিদ্ধান্ত কিছুটা বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়। সুনীলরা মাঠ ছাড়ার দু’মিনিটের মধ্যেই রহমত আকবারির গোলে ম্যাচে সমতায় ফেরে আফগানিস্তান (১-১)। বলের লাইনে দাঁড়িয়েও তা বিপন্মুক্ত করতে ব্যর্থ রাহুল ভেকে। লিড হাতছাড়া হতেই গোলের জন্য বিক্রমপ্রতাপকে মাঠে নামান স্টিমাচ। তবে গোল করা তো দূর অস্ত, ৮৭ মিনিটে গুরপ্রীতের ভুলে পেনাল্টি পায় আফগানিস্তান। তা থেকে লক্ষ্যভেদে আফগানদের জয় নিশ্চিত করেন শারিফ মুখাম্মদ (২-১)।
ভারত: গুরপ্রীত, নিখিল, রাহুল, আনোয়ার, শুভাশিস, জিকসন (বিক্রমপ্রতাপ), আপুইয়া, মনবীর, ব্রেন্ডন (অনিরুদ্ধ), লিস্টন (মহেশ) ও সুনীল (ছাংতে)।