সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
রাজগ্রাম পঞ্চায়েতের রাজগ্রাম পূর্ব বাজার, আম্ভুয়া, ডুমুরগ্রাম সহ মুরারই ১ ব্লকের বিস্তৃণ এলাকায় ফি বছর গরমে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়। এলাকার টিউবওয়েলগুলিও অধিকাংশই অকেজো। যেগুলি সচল রয়েছে সেগুলিও অনেকক্ষণ ধরে পাম্প করার পর তা থেকে সামান্য জল বের হচ্ছে। গ্রামের ব্যক্তি মালিকানাধীন কুয়োগুলিও প্রায় শুকিয়ে যায়। ফলে জল নিয়ে হাহাকার দেখা দিয়েছে ওই এলাকাগুলিতে।
সব থেকে করুণ অবস্থা রাজগ্রাম গভর্নমেন্ট মডেল স্কুলে। সেখানে আড়াইশো পডুয়া রয়েছে। পানীয় জলের উৎস বলতে কুয়ো। সেখান থেকে পাম্পে জল তুলে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু দিন কয়েক ধরে কুয়োও শুকিয়ে গিয়েছে। ফলে বাড়ি থেকে বোতলে করে জল এনে খেতে হচ্ছিল পডুয়াদের। প্রধানশিক্ষক সাবির শেখ বলেন, পানীয় জলের খুবই কষ্ট। এদিন থেকে পঞ্চায়েত থেকে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। পড়ুয়াদের সেখান থেকে বালতিতে করে জল নিয়ে গিয়ে রাথরুম করছে। একইভাবে চলছে মিড ডে মিল।
জানা গিয়েছে, পাথুরে হওয়ায় এলাকাটি রুখাশুকা। মাটির ৩৫০ ফুট নীচেও জল মিলছে না। স্থানীয়রা বলেন, মোটা টাকা খরচ করে গভীর নলকূপ বসিয়ে জল মিলবে তারও ভরসা নেই। ফলে অনেককে দূরবর্তী এলাকা বা অন্য কোনও নলকুপ থেকে জল এনে পান করতে হচ্ছে। পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় সেই জলেই স্নান থেকে গৃহস্থালির কাজ সারতে হচ্ছে। বাসিন্দারা বলেন, ফি বছর গরমে একই সমস্যা, তবু প্রশাসন এর সমাধান করে না।
রাজগ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দলাল বিশ্বাস বলেন, বছর কয়েক আগে কলিতোড়া গ্রামের কাছে বাড়ি বাড়ি পৌঁছতে একটি কেন্দ্রীয় পানীয় জল প্রকল্প হয়েছিল। কিন্তু রাজগ্রাম বাজার এলাকার মানুষ সেই প্রকল্প থেকে এক ফোঁটাও জল পায়নি। পাইপ লাইনের কাজই এখনও হয়নি। উত্তরকাশিল্যা গ্রামের পর আর জল আসে না। অধিকাংশ টিউবওয়েল অকেজো। রাতভর দু’-একটি কুয়োতে কিছুটা জল জমে। যদিও সেটা তুলতে ভোর তিনটে থেকে মানুষের ভিড় লেগে যায়। বেলা হতেই সেই জল সাফ।
বাসিন্দারা বলেন, রাজগ্রামের কারগিল পাড়া ও দুর্গামন্দির তলায় পঞ্চায়েত থেকে ওই এলাকার বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের প্রকল্প করা হয়। জলস্তর নেমে যাওয়ায় সেটাও বন্ধ হয়ে পড়েছে।
যদিও এ ব্যাপারে পিএইচই দপ্তরের জেলা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ কুণ্ডু বলেন, রাজগ্রামে জলের অনেক সমস্যা আছে। ওখানে মাটির নীচে জলের কোনও সোর্স পাইনি। সাতকিমি দুরের নদী থেকে জল তুলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে রাজগ্রাম এলাকায় সরবরাহ প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন গ্রামের কাছে পাইপ ফুটিয়ে জল নেওয়ায় রাজগ্রামে এসে পৌঁছেছে না। ওই গ্রামগুলিতেও জলের সমস্যা। ফলে বলারও কিছু নেই। তবে সম্প্রতি বরুয়া গোপালপুরে একটি পরিত্যক্ত খাদান সিলেক্ট করেছি। যেখানে প্রচুর জল রয়েছে। ডিপিআর করে ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়েছি। দিল্লি থেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছি। অন্যদিকে বাঁশলৈ নদী থেকে জল তুলে রাজগ্রামে সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। যাদবপুর থেকে বিশেষজ্ঞরা এদিনই ওই এলাকায় গিয়েছে। নদীর কোথায় কী পরিমাণ জল পেতে পারি তার অনুসদ্ধান চালিয়ে তাঁরা রিপোর্ট দেবেন। তবে ওই এলাকায় পাইপ ফুটিয়ে জল নেওয়ার থেকে অপচয় বেশি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।