শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
ডেপুটি কমিশনার (স্পেশ্যাল সেল) প্রমোদ সিং কুশওয়া বলেন, ‘সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পুলওয়ামা হামলার মূল চক্রী মুদাসির খানের মৃত্যু হয়েছে। এবার তার সহযোগীরও নাগাল মিলল। সাজ্জাদকে মুদাসির দিল্লিতে স্লিপার সেল তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।’ শহরে সে কাশ্মীরি শাল বিক্রেতার ছদ্মবেশে থাকছিল। প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলওয়ামা হামলার গোটা পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের নাড়ি-নক্ষত্র জানা ছিল ধৃতের। মূল ষড়যন্ত্রী মুদাসিরের সঙ্গে হামলার আগে ও পরে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছিল সে। জানা গিয়েছে, ভুয়ো নামে সিমকার্ড তুলে সাজ্জাদ একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিয়মিত মুদাসির এবং ইয়াসির নামে এক পাকিস্তানি জঙ্গির সঙ্গে যোগাযোগ রাখত।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক জয়েশ জঙ্গি বিস্ফোরক-বোঝাই গাড়ি নিয়ে শ্রীনগরগামী সিআরপিএফের কনভয়ে হামলা চালায়। ওইদিনই মুদাসির সাজ্জাদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগযোগ করে ওই হামলার খবর দেয়। ডেপুটি কমিশনার (স্পেশ্যাল সেল) প্রমোদ সিং কুশওয়া জানান, পুলওয়ামা-কাণ্ডে যে আত্মঘাতী জঙ্গিকে ব্যবহার করেছিল জয়েশ, সেই আদিল দারের একটি ভিডিও সাজ্জাদকে পাঠিয়েছিল মুদাসির, যা সে পরে ডিলিট করে দেয়। ডেপুটি কমিশনার বলেন, ‘ধৃতকে দিল্লিতে স্লিপার সেল তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছিল মুদাসির। বিশেষ করে হামলার চালানোর উপযুক্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গার রেকি করা এবং রাজধানীতে একটি গোপন ডেরা তৈরি করার দায়িত্ব ছিল সাজ্জাদের উপর।’ এছাড়াও উত্তরপ্রদেশ সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুসলিম যুবকদের কট্টরপন্থী ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করে সংগঠনে নিয়োগ করা, তাদের বিস্ফোরক তৈরি শেখানো এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি অর্থ সংগ্রহের কাজও করত ধৃত সাজ্জাদ।
বাছাই করা কাশ্মীরি যুবকদের আত্মঘাতী জঙ্গি হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সাজ্জাদকে নির্দেশ দিয়েছিল মুদাসির। সেইমতো সম্প্রতি সে জম্মু-কাশ্মীরের গাদপোরার বাসিন্দা বিলাল এবং ত্রালের মিদুরা এলাকার বাসিন্দা তনভিরকে নিয়োগও করে ফেলেছিল সে। সম্প্রতি, এনআইএ মুদাসিরের পাশাপাশি সাজ্জাদের নামেও মামলা দায়ের করেছিল। শুধু সাজ্জাদ নয়, তার দুই ভাইও জয়েশের সক্রিয় সদস্য ছিল। যদিও, পুলিসি অভিযানে আগেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
কুশওয়া জানান, অতীতে সাজ্জাদ ভাইয়েরা নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ত। ২০১৫ সালে ওই অপরাধে সাজ্জাদের দাদা ইশফাক গ্রেপ্তার হয়। প্রায় ন’ মাস শ্রীনগর জেলে ছিল সে। সেখানেই জয়েশ জঙ্গি নুর মহম্মদের সঙ্গে আলাপ হয় ইশফাকের। এরপর জেল থেকে ছাড়া পেয়েই জয়েশের সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠে ইশফাক। প্রায় ১৮ মাস সক্রিয় জঙ্গি হিসেবে বিভিন্ন অপারেশন চালানোর পর ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল ত্রাল এলাকায় পুলিসের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। ইশফাকের মৃত্যুর পর সাজ্জাদদের পুলওয়ামার বাড়িতে ঘনঘন যাতায়াত শুরু করে মুদাসির। ইশফাকের ভাই এবং সাজ্জাদের দাদা শওকতকেও ধীরে ধীরে মগজধোলাই করে নিজের দিকে টেনে নেয় সে। তারপর ২০১৮ সালে শওকতও জয়েশে যোগ দেয়। কিন্তু, ওই বছরই সেপ্টেম্বর মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যায় শওকত। শওকতের মৃত্যুর পর সাজ্জাদদের বাড়িতে যাতায়াত আরও বাড়িয়ে দেয় মুদাসির। জয়েশের ক্যাডার হিসেবে কাজ করার জন্য সাজ্জাদের মগজধোলাই শুরু করে সে। একসময় তাতে সফলও হয় মুদাসির। প্রথম দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি অভিযান, তাদের কনভয়ের গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্য জয়েশকে সরবরাহ করত সাজ্জাদ।