ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
তবে কাছে গেলে বোঝা যায় মাঠ নয়, এ হল বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। সেখানে গভীর রাতে চাষ করছেন কৃষকরা। বারাসত মহকুমার অধিকাংশ জায়গায় গরমে মাটি প্রায় ফুটিফাটা। রোদের তাপে দিনের বেলা মিনিট খানেক জমিতে তিষ্টানোর উপায় নেই। ফলে সূর্য পাটে বসার পর সন্ধ্যা থেকে চাষের কাজ শুরু করছেন কৃষকরা। কাজ চলছে রাতের শেষ প্রহর পর্যন্ত। বারাসত মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। হাবড়া থেকে অশোকনগর কিংবা দেগঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা কৃষিকাজ করেন। এমনিতেই ফসল ফলিয়ে লাভ কমছে। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। তার ওপর প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ নতুন করে তৈরি করেছে সমস্যা। বিঘের পর বিঘে জমিতে সব্জি, পাট ও তিল রোপণ করেছেন। প্রবল গরমে সব নষ্ট হতে বসার জোগাড়। শুকিয়ে মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে ফসল। এবার নিরুপায় হয়ে রাতের অন্ধকারে চাষ করার এই নয়া পরিকল্পনা।
সন্দীপ মণ্ডল নামে দেগঙ্গার এক কৃষক বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে পটল লাগিয়েছিলাম। সবই নষ্ট হতে বসেছে। খরচ তুলতে চার্জার লাইট নিয়ে রাতে চাষ করছি।’ আরজিনা বিবি নামে এক পাট চাষি বলেন, ‘সাড়ে তিন বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছি। গরমে সব শুকিয়ে যাচ্ছে।’ আব্দুল রহিম নামে কদম্বগাছির এক কৃষক বলেন, ‘এই সময় ফসল বাঁচানো বড় লড়াই। সকালে জল দিলে শুকিয়ে যাবে। ঠিকমতো সেচ হবে না। কীটনাশকও কাজ করবে না। তাই বাধ্য হয়ে রাতে চাষ করছি।’ রহমত আলি নামে এক কৃষক বলেন, ‘চড়া রোদে জল দিলে তা চড়চড় করে টেনে নেয় জমি। গাছ জল পায় না। ফলে গভীর রাতে জল দিতে হচ্ছে জমিতে।’
উত্তর ২৪ গরগনা জেলার ডিস্ট্রিক্ট ডাইরেক্টর অফ এগ্রিকালচার (ডিডিএ, অ্যাডমিন) ডা. আশুতোষ মণ্ডল এ বিষয়ে বলেন, ‘রাতে চাষ করার কারণ আছে। ১, কীটনাশক স্প্রে করার সময় প্রখর রোদে কৃষকরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। ফলে রাতে কাজ করাটাই নিরাপদ। ২, রোদের কারণে দিনের বেলা পোকামাকড় চলে যায়। সেগুলি অন্ধকার হলে ফের জমিতে চলে আসে। ফলে সেসময় কীটনাশক দিলে তবেই কার্যকর হয়।’
এখন বাংলার মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে গোটা রাত জেগে চাষ করছেন কৃষকরা। আর বারাসতের চাষের জমিতে অন্ধকারে জোনাকির মতো আলো ছড়াচ্ছে টর্চ।