সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
সময়টা গত শতকের আশির দশক। বালি-জগাছা ব্লক ভেঙে অর্ধেকটা অংশ হাওড়া পুরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সব মিলিয়ে তৈরি হয় ৬টি নতুন ওয়ার্ড (৪৫ থেকে ৫০ নম্বর ওয়ার্ড)। এক-একটি ওয়ার্ডে এলাকা গোটা একটি পঞ্চায়েতের সমান প্রায়। পঞ্চায়েত এলাকার পুরসভায় অন্তর্ভুক্তির পর সাধারণ মানুষ ভেবেছিলেন, আমূল পাল্টে যাবে নাগরিক পরিষেবা। কিন্তু তাঁদের অভিজ্ঞতা বলছে, বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টো। রাস্তা, আলো, পানীয় জল কিংবা নিকাশি— সবক’টি পরিষেবা খাতেই অনুন্নয়নের ছাপ এসব এলাকায়। বাম শাসন হোক বা তৃণমূল আমল, কেউই তাদের দিকে সেভাবে উন্নয়ন করেনি বলে অভিযোগ। এই সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলির মধ্যে এমন বহু এলাকা রয়েছে, যেগুলির তুলনায় বালি-জগাছা ব্লকের কিছু পঞ্চায়েত এলাকার সাধারণ পরিকাঠামোও অনেক বেশি উন্নত।
দক্ষিণ হাওড়ার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মৌখালি শেখপাড়া সেই অনুন্নয়নের সাক্ষী। এই পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা হাজারখানেক। অথচ চার দশক ধরে তাঁদের জন্য পানীয় জলের কোনও স্থায়ী বন্দোবস্ত নেই। গোটা এলাকার মানুষের জন্য একটি মাত্র চাপাকল থাকলেও গত প্রায় এক মাস ধরে সেটি খারাপ হয়ে আছে। রমজান মাসের পুরোটাই তীব্র জলকষ্টে কাটাতে হয়েছে শেখপাড়ার বাসিন্দাদের। অথচ ঈদের দিন ওই এলাকা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে জনসংযোগ কর্মসূচি সেরে গিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা হাওড়ার তিনবারের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়!
জলের ব্যবস্থা তাহলে কীভাবে হয় ওই এলাকায়? বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, ‘বাড়িতে যে যার মতো বোরিং করে রেখেছেন। সেখান থেকে জল তুলে কাজ চালানো হয়। পকেটের পয়সা খরচ করে খাওয়ার জল কিনে আনতে হয়।’ যদিও আনিসুরের দাবি, প্রত্যেকের বাড়িতে বোরিং করে জল তোলার ব্যবস্থা নেই। সেক্ষেত্রে যাঁদের বাড়িতে তা আছে, সেখান থেকেই জল নিয়ে যান প্রতিবেশীরা। বছরের পর বছর এভাবেই বেঁচে আছেন এই এলাকার মানুষ। অত্যন্ত ক্ষোভের সুরে বৃদ্ধা মমতাজ বেগম বলছিলেন, ‘গোটা রমজান মাস চাপাকল খারাপ। বারবার কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ওই ব্যস্ত রাস্তা টপকে এক জ্ঞাতির বাড়ি থেকে জল আনতে হয়েছে। অথচ আমরা পুরসভাকে প্রতি বছর ট্যাক্স দিচ্ছি।’ এ বিষয়ে হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘পুরসভার সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলিতে পানীয় জল সরবরাহের বিষয়টি দেখভাল করে কেএমডিএ। ওই এলাকার পানীয় জলের সমস্যা যাতে দ্রুত মেটানো যায়, তার জন্য আমি সোমবার কেএমডিএর সঙ্গে কথা বলব।’