বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ডাম্পারের তলা থেকে পুলিস মৃতদেহ তুলতে গেলেই জনতার সঙ্গে প্রথমে বচসা ও পরে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। উত্তেজিত জনতার রোষের মুখে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায় পুলিস। এরপরেই এলাকার মানুষ পুলিসের গাড়ি রাস্তায় উলটে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হন সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিনিধিও। পরে মগরা, পাণ্ডুয়া ও বলাগড় থানা থেকে বিশাল পুলিসবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিস ঘাতক ডাম্পারটিকে আটক করলেও চালক পলাতক। পাশাপাশি পুলিসের উপর হামলার ঘটনায় পাঁচ স্থানীয় বাসিন্দাকে আটক করেছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতোই এদিন সকালে খেজুরিয়ার বাসিন্দা অর্চনাদেবী স্কুটিতে করে ছেলেকে বাঁশবেড়িয়ার একটি স্কুল থেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময়ে পেছন দিক থেকে একটি বালি বোঝাই তাঁকে ধাক্কা মারলে স্কুটি থেকে ছিটকে গিয়ে পড়েন। এরপর ওই ডাম্পারটি তাঁকে পেছনের চাকায় পিষে দেয়। যদিও কপাল জোরে মহিলার ছেলে সামান্য আঘাত পেলেও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়।
পাড়ার মহিলার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই মিঠাপুকুর ছোট খেজুরিয়া থেকে প্রচুর মানুষ এসে জড়ো হন। প্রথমে তারা ঘাতক ডাম্পারে ভাঙচুর চালায়। যদিও মহিলাকে চাপা দেওয়ার পরেই ডাম্পারের চালক ও খালাসি পালিয়ে যায়। এরপরে পুলিস মহিলার দেহ উদ্ধার করতে গেলে পুলিসকে ঘিরে জনতা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। স্থানীয় মানুষের অবরোধ বিক্ষোভের ফলে অসম লিঙ্ক রোড জুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। কলকাতা ও বর্ধমানমুখী সমস্ত যানবাহন আটকে যায়। পুলিস অবরোধ ও মৃতদেহ তুলতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাদের লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে। পাল্টা লাঠি উঁচিয়ে প্রতিরোধ করতে গিয়েই সংখ্যায় কম থাকায় জনরোষের শিকার হয় পুলিস।
পুলিসের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অসম লিঙ্ক রোডে মিঠাপুকুর মোড়টি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও অধিকাংশ সময়েই ট্রাফিক পুলিস বা সিভিক ভলান্টিয়ার থাকে না। ফলে বেপরোয়া গতিতে লরি, ডাম্পার সহ অন্যান্য গাড়ি যাতায়াত করে। এর আগেও এই একই জায়গায় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও পুলিস কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে মিঠাপুকুর মোড়ে ট্রাফিকের ব্যবস্থা না করলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন।
স্থানীয় তৃণমূলের এক নেতা বলেন, মিঠাপুকুরে বিজেপির নেতারা বালি-মাটির ব্যবসা করেন। তাঁদের ডাম্পারের ধাক্কাতেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। পরে বিজেপির লোকেরাই পরিকল্পিতভাবে পুলিসকে মারধর করে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের পর থেকেই ওরা নানাভাবে এলাকায় অশান্তি করছে। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপির ওবিসি মোর্চার নেতা সুরেশ সাউ বলেন, পুলিসের ব্যর্থতার কারণেই মানুষের অসন্তোষ। ওই এলাকায় ট্রাফিকের ব্যবস্থা করলেই সমস্যা মিটে যেত। কিন্তু পুলিস সেটা করেনি। তাই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।