বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এখানে একদিকে যেমন উদয়নারায়ণপুর বিধানসভার এই গ্রামগুলি রয়েছে, তেমনই শ্রীরামপুর লোকসভার অন্তর্গত জাঙ্গিপাড়া বিধানসভার রসিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রামগুলি রয়েছে। পাশাপাশি বাড়িতে দু’টি কেন্দ্রের প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন। এই রকম চিত্র রাজ্যের খুব কম এলাকাতেই দেখা যায়। এলাকার লোকজন বলেছেন, প্রার্থীরা এসে অনেক সময় অন্য কেন্দ্রের প্রার্থীদের কাছেও ভোট চেয়ে বসেন। এলাকার লোক ছাড়া কোন বাড়িটি কোন কেন্দ্রের মধ্যে পড়ছে, তা বোঝার ক্ষমতা কারও নেই।
এমনিতেই উদয়নারায়ণপুর ব্লকটি সীমান্তবর্তী। এর একদিকে যেমন হুগলির জাঙ্গিপাড়া, তেমনই একটি অংশে পুড়শুরা। ফলে ২০০০ সালের পরবর্তী সময় এই এলাকায় সিপিএমের হার্মাদবাহিনী আরামবাগ, খানাকুল, পুড়শুরা থেকে খুব সহজেই এই ব্লকে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু, এখন এই এলাকায় সিপিএম খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, ভৌগোলিক দিক থেকে এখনও এই এলাকার গুরুত্ব কম নয়। সেই কারণে জেলা পার হয়ে অপরাধীরা যাতে হুগলি যেতে না পারে, বা হুগলি থেকে জেলায় আসতে না পারে, তার জন্য দুই জেলা পুলিস অতিরিক্ত নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। প্রতিটি গাড়ি চেকিংয়ের পাশাপাশি সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ভৌগোলিক কারণেই এই ব্লক নিয়েই প্রশাসনের চিন্তা সবচেয়ে বেশি। এখানে পাশাপাশি বাড়ি দু’টি জেলায়। ফলে এক জেলার লোক খুব সহজেই অন্য জেলায় চলে যেতে পারে। তবে যাতে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র বা গোলাবারুদ পাচার যাতে হয়, তার জন্য প্রতিটি মোড়ে অতিরিক্ত পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।
শুধু শ্রীরামপুর লোকসভার জাঙ্গিপাড়ার এই এলাকাই নয়, আরামবাগ লোকসভার পুড়শুরার কয়েকটি গ্রামও কার্যত ঢুকে আছে উদয়নারায়ণপুর ব্লকে। তাই যে কোনও রাজনৈতিক দলকে উদয়নারায়ণপুরের দিহিভুরসুট থেকে রামপুর মিছিল করতে গেলে পুড়শুরার তিনটি গ্রাম পার হয়ে যেতে হয়। আর তাই এখানে দু’টি কেন্দ্রের প্রার্থীদের সমর্থনেই পোস্টার নিয়ে বের হতে হয় সমস্ত রাজনৈতিক দলকে। দিহিভুরসুট থেকে রামপুর যাওয়ার রাস্তাতেই পড়ে আরামবাগ লোকসভার শ্যামপুর। রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছে, এই ভৌগোলিক সীমান্তের কারণেই সাধারণত প্রতিবার এই এলাকার ভোটের ফলও একই হয়।
২০১১ সাল থেকেই এখানে তৃণমূলের দাপট দেখা যাচ্ছে। আবার বাম জমানায় এই এলাকায় সিপিএমের দাপট দেখা যেত। আরামবাগ, খানাকুল, পুড়শুরা উত্তপ্ত হলে একই সঙ্গে তেতে উঠত উদয়নারায়ণপুরও। তাই এই এলাকার ভোটের দিকেই তাকিয়ে থাকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি পুলিস-প্রশাসনও।
উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে ভোট দেবেন। তাই আমরা যখন উলুবেড়িয়া কেন্দ্রের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করছি, তখন আরামবাগ বা শ্রীরামপুর কেন্দ্রের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে অসুবিধা কোথায়? তাছাড়া আমাদের ওই এলাকার মধ্যে দিয়েই যেতে হয়। একইভাবে ওই দুই কেন্দ্রের দলীয় নেতৃত্বও আমাদের এলাকার প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার চালান। সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, আমরা কাউকে দেখে ভোট করি না। আমরা কিছু নির্দিষ্ট নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখে ভোট করি। তাই রাজ্যের সর্বত্র আমাদের বক্তব্য একই। তাই কোনটা কোন কেন্দ্রের মধ্যে পড়ল, তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। বিজেপির জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, নরেন্দ্র মোদি যেভাবে গোটা দেশে উন্নয়ন করেছেন, সেটাই আমরা প্রচারে তুলে ধরছি। গোটা দেশেই আমাদের প্রচারের বিষয়বস্তু একই।