বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
স্কুল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার কলসুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পোলতার আটি গ্রামে নৌরিনের বাড়ি। সে দেগঙ্গার সপ্তপল্লি খয়েরুল্লা স্মৃতি বিদ্যালয়ের ছাত্রী। দেগঙ্গার কলসুর হাইস্কুলে তার পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছে। নৌরিনেরা এক ভাই, এক বোন। সে বড়। ভাই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা রিয়াজুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে সোমবার কলকাতার বাইপাসের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। বাবাকে নিয়ে নৌরিনের দুশ্চিন্তা ছিলই। মঙ্গলবার সকালে ছিল ভৌত বিজ্ঞান পরীক্ষা। তার জন্য প্রস্তুতি সেরে সে যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে বের হবে, তখনই কলকাতা থেকে বাড়িতে খবর যায়, তার বাবা মারা গিয়েছেন। মুহূর্তে কান্নায় ভেঙে পড়লেও নিজেই নিজেকে শক্ত করে।
তারপর কার্যত বুকে পাথর চাপা দেওয়ার মতো যন্ত্রণা নিয়েই পরীক্ষা কেন্দ্রে যায় সে। তার মনের অবস্থা ভাল না থাকায় আত্মীয়-স্বজনরা তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যান। নৌরিনের বাবা তাকে বার বার বলতেন, ভাল রেজাল্ট করতেই হবে। তাই পরীক্ষা দিতে বের হওয়ার পর বার বার তার বাবার মুখটাই ফুটে উঠছিল। এদিকে, নৌরিনের বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি মুখোপাধ্যায়ও তাঁর বাড়ি হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যান। তিনি তার পরীক্ষা কেন্দ্র তথা কলসুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককেও বিষয়টি জানান। নৌরিনের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয়, সে ব্যাপারে সহযোগিতা চান প্রধান শিক্ষক। তবে, পরীক্ষা কেন্দ্রের তরফেও আশ্বাস দেওয়া হয় তারা সবরকম ব্যবস্থা নেবে। তার দিকে খেয়ালও রাখবে। সে কোনওরকমে মন শক্ত করে পরীক্ষা দেয়। আজ, বুধবার তার জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষা।
প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রিবাবু বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। বাবার মৃত্যু সংবাদ শোনার পর ওর মনের অবস্থা কী হতে পারে, সেই আন্দাজ করেই আমরা ওর বাড়ি হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায়। ওকে মানসিক শক্তি জোগানোর চেষ্টা করি। ও এদিন পরীক্ষা দিয়েছে। বুধবার জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষা রয়েছে। ওটা শেষ পরীক্ষা। তাই ওকে বলেছি, শত কষ্টের মধ্যেও অবশ্যই যেন শেষ পরীক্ষাটাতেও বসে। আমরা সবাই ওর পাশে আছি।