প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
ব্যতিক্রমী পেয়েছিলাম একজনকেই। নিজের পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন এক বহুজাতিক সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তা। বাবার প্রথম কথাই হল— এই হল আমার ছেলে। এর দ্বারা পড়াশোনা হবে বলে মনে হয় না, মাধ্যমিক দিয়েছে। সারাদিন বন্ধুদের নিয়ে মত্ত। বয়স না হওয়ার দরুন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স জোটেনি। কিন্তু পাড়ার মধ্যে বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়ানোই পছন্দ। একেবারে বখাটে হয়ে যাচ্ছে। একটু দেখুন কী করা যায় একে নিয়ে। সেই দিন পর্যন্ত কোনও অভিভাবককে অমনভাবে অকপট স্বীকারোক্তি দিতে দেখিনি। সেই দিন বললে ভুল হবে, এখনও অমন বাবার দেখা জোটেনি।
এবার শুধু ছেলেটিকে আলাদা করে নিয়ে বসা হল। বোঝা গেল বাবার কথা ঠিকই, পড়াশোনা টানা এ ছেলের কম্মো নয়। কী ভালো লাগে? ছেলেটির জবাবও কাঠ কাঠ— ‘বাইক, গাড়ি চালাতে, বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে।’ বাইক-গাড়ি খারাপ হলে? উত্তর এল— ‘ছোটখাট সমস্যা নিজেই সামলে নিই।’ আরও কিছু কথাবার্তা বলে এবার বাবার সঙ্গে একান্তে কথা। আপনার যে সামাজিক সম্মান বা মর্যাদা আছে, ছেলে যদি সেই তুলনায় একেবারে অন্য ধরনের কাজ করে আপনার আপত্তি আছে? বাবার উত্তর একদমই না। চুরি-ছিনতাই না করলেই হল। আমি চাই ও যেন সৎপথে রোজগার করে। ইতস্তত করে সমাধানসূত্র বাতলানো হল অটোমোবাইল রিপেয়ারিং-এর কোর্স করতে বলে। তুষ্ট হয়ে বিদায় নিলেন পুত্রকে নিয়ে। বছর তিনেক পর ভদ্রলোক ফোন করে বললেন, ‘দেড় বছরের কোর্স করানোর পর বাড়ির পাশেই একটা গ্যারাজ করে দিয়েছি। দিব্যি সামলাচ্ছে। নিজে কালিঝুলি মেখে কাজ করছে। লাইসেন্স হয়ে যাওয়াতে গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মেজাজে। আপনাকে ধন্যবাদ।’ প্রত্যেকের জীবনেই এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যা সারাজীবন মনে থাকে। ওই ভদ্রলোককেও ভোলা সম্ভব নয়। যিনি বুঝেছিলেন ছেলের সাধ্য কতটা। অযথা মরীচিকার পিছনে না ছুটে ছেলেকেও স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। আর পাত্তা দেননি ঠুনকো সামাজিক সম্মান-অসম্মানবোধকে।