কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
সেচ দপ্তরের তিস্তা ব্যারেজ প্রজেক্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রসিতকুমার পাত্র বলেন, আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ১০ মে পর্যন্ত চারটি ধাপে এক লক্ষের বেশি জমিতে সেচের জন্য জল বণ্টন করা হবে। এরজন্য কোনওরকম জলকর দিতে হবে না। এদিনের প্রস্তুতি বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এদিনের বৈঠকে কিছু দাবি ও প্রস্তাব এসেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগামী জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হবে বোরো চাষের মরশুম। আসন্ন বোরো চাষের মরশুমে বীজতলা তৈরি থেকে পাকা ধান কাটার আগে পর্যন্ত জমিতে সেচের জল দিতে উদ্যোগী হয়েছে সেচদপ্তরের তিস্তা ব্যারেজ প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ। এদিন শিলিগুড়ির সেবক রোডে সেচদপ্তরের অফিসে প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে। বৈঠকে তিস্তা ব্যারেজ প্রজেক্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াও ব্যারেজ প্রজেক্টের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রশান্ত দাস, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মন, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ গোবিন্দ রায়, রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পূর্ণিমা রায় সহ কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা বৈঠকে সেচের জল বণ্টনের সময় সূচী নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেচদপ্তর সূত্রের খবর, তিনটি সেচখালের মাধ্যমে জমি সেচের জল বণ্টন করা হয়। সংশ্লিষ্ট খালগুলির মধ্যে তিস্তা-মহানন্দা মেন খাল অন্যতম। দীর্ঘ ২৯ কিমি লম্বা এই খালের মাধ্যমে জলপাইগুড়ি সদর এবং রাজগঞ্জ ব্লকে সেচের জল বণ্টন করা হবে। এই ক্যানের উপর নির্ভরশিল প্রায় ৩২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। এর বাইরে তিস্তা-জলঢাকা সেচখালের মাধ্যমে জল দেওয়া হবে মালবাজার ও ময়নাগুড়ি ব্লকে। প্রায় ২৭ কিমি লম্বা এই সেচখালের উপর নির্ভশীল প্রায় ৫৪০০ হেক্টর জমি। করতোয়া তালমা ব্যারেজ থেকে রাজগঞ্জ ব্লকে প্রায় ৬৩০০ হেক্টর জমিতে জল দেওয়া হবে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রজেক্টের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে সেচের জল বণ্টন শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে বোরো ধানের বীজতলা তৈরির জন্য জল দেওয়া হবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপে রোয়া বা চারা রোপন করতে ৯ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জল বণ্টন করা হবে। এভাবে মার্চ এবং এপ্রিল মাসে আরও দু’টি ধাপে জল বিলি করা হবে। প্রজেক্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, সবমিলিয়ে এবার জলপাইগুড়ি জেলায় চারটি ব্লকের প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার একর জমিতে সেচের জল বিলি করা হবে। এতে প্রচুর মৌজার কয়েক কয়েক হাজার কৃষক উপকৃত হবেন।
এদিনের বৈঠকে জলপাইগুড়ি জেলার সেচখালগুলির বেহাল অবস্থা নিয়ে সরব হন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। বৈঠকের পর তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তিনটি প্রধান খালের অধীনে থাকা বেশকিছু শাখা খাল বেহাল হয়ে গিয়েছে। পলি জমে কিছু খাল মজে গিয়েছে। আবার কিছু খাল জঙ্গলে ঢেকে গিয়েছে। তাছাড়া প্রচুর ফিল্ড চ্যানেল বা নালার দশাও বেহাল। সেগুলির পাকা গার্ডওয়াল ভেঙে গিয়েছে। ফলে জলের অপচয় হচ্ছে। তাই ২০০৪-০৫ সালে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান থাকাকালীন ওই সব খাল ও নালা সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছিল। তা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এবার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার দাবি বৈঠকে জানানো হয়েছে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রজেক্টের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, শীঘ্রই এই ব্যাপারে সমীক্ষা চালিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি সেচখাল ও ফিল্ড চ্যানেল রক্ষণাবেক্ষণ করতে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ, কৃষিদপ্তর এবং সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।