কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
জেরসিড নামে এক মনোবিজ্ঞানী শিশু বিকাশের উপর গবেষণা করে জানিয়েছেন, শিশুর এই বিকাশে পরিবার তথা বিদ্যালয়ের বিশেষ ভূমিকা আছে। মা হিসেবে অথবা শিক্ষিকা হিসেবে নারীর অবদান তাতে অতুলনীয়। নারী স্নেহপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে শিশুকে সমাজের সঙ্গে, অন্য শিশুদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে শেখায়। সমাজের সঙ্গে এই সম্পর্ক স্থাপনের প্রক্রিয়াকে বলে সামাজিক অভিযোজন।
সামাজিক অভিযোজনে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা দেয়। সামাজিক বিকাশে নেতিবাচক মনোভাব ও আক্রমণাত্মক মনোভাব পরিলক্ষিত হয় যা কিছুটা আত্মরক্ষার তাগিদে অপরিহার্য। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সামাজিক বিকাশের পরিপন্থী। গবেষণাসূত্রে জানা গেছে, হতাশা থেকে নেতিবাচক মনোভাব আর আক্রমণাত্মক মনোভাব উদ্ভূত হয়। তাই শৈশব থেকেই যে কোনও ব্যর্থতায় নারীকে একটু বেশি যত্নবান হতে হবে। শিশুকে বোঝাতে হবে ব্যর্থতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। হতাশার সময়, প্রতিকূলতার সময় প্রিয়জনদের সাহচর্য একান্ত প্রয়োজন। নেতিবাচক মনোভাব, আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি শিশুকে হিংসাত্মক করে তোলে যা তার ব্যক্তিত্ব বিকাশকে প্রতিহত করে। অপরের সঙ্গে সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আবার শিশুর মধ্যে সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতার বীজ বপন করতে হবে। তা না হলে সামাজিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শিশু পিছিয়ে পড়বে। তার সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রয়োজন আছে বইকি। নারীই বিকশিত করতে পারেন গুড স্পোর্টসম্যান স্পিরিট।
অনেক সময় দেখা যায় শিশুরা অহেতুক লজ্জা আর অপরাধ বোধে ভুগছে। এই ক্ষেত্রে এই ধরনের মনোভাবের উৎস কী তা শিশুর পরিবার-পরিজনকেই বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। লজ্জা আর অপরাধবোধ একটি কয়েনের দুটি দিক। যখন শিশুটি কাজের উপর গুরুত্ব দেয়, তখন সেটি অপরাধবোধ— কাজটি ভুল হয়ে গেল। আর যখন সে ভাবতে আরম্ভ করে— আরে আমি ভুল করে ফেললাম! নিজের উপর গুরুত্ব দেয়, তখন সেটি লজ্জা। সামাজিক বিকাশে অপরাধ ও লজ্জা— উভয়েরই প্রয়োজন আছে, কিন্তু অত্যধিক বেশি কোনওটাই ভালো নয়।
সামাজিক বিকাশে শিশুদের আর যে দুটি গুণের বিকাশ একান্ত প্রয়োজন, তা হল সহানুভূতি আর সহমর্মিতা। অন্যের প্রেক্ষাপটে জগৎকে প্রত্যক্ষ করা আর অন্যের জন্য সমবেদনা অনুভব করা ঐকান্তিক প্রয়োজন। এই সংবেদনশীল মনোভাব গঠনে নারীর ভূমিকা অনবদ্য।
পরিশেষে বলতে হয় সামান্যতম ত্যাগও শিশুকে শান্ত, স্থিতিশীল করবে, সে বড় হয়ে আত্মস্থ হতে শিখবে।
কবির দৃষ্টিতে শিশুদের জন্য লেখা বাউল কবিতার লাইন দিয়ে লেখাটির ইতিরেখা টানি— ‘আর কিছু না চাই, যেন আকাশখানা পাই— আর পালিয়ে যাবার মাঠ।’
ড. তিন্নি দত্ত