কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
আপনি কি সত্যিই ভূতে বিশ্বাস করেন? আর চুনির মতো ভূত দেখতে চান?
ভূতে বিশ্বাস আছে। তবে তাই বলে যে খুব ভয় করে তা নয়। একটু গা ছমছমে ব্যাপার তো আছেই। তবে আমি চটপটে ডানপিটে হলেও চুনির মতো অত সাহসী নই যে রাত্রিবেলা টর্চ হাতে হানাবাড়িতে ভূত খুঁজতে যাব।
অভিনয়ে এলেন কী করে?
ছোটবেলায় স্কুলে অ্যাঙ্কারিং, নাটক এসব করেছি। কলেজে পড়ার সময় ঠিক করি যে, অভিনয়টাকে আমি পেশা হিসেবে বেছে নেব। তখন একটা অ্যাকটিং স্কুলে অ্যাকটিং শেখার জন্য ভর্তি হই। সেটা করার পর সেই স্কুল থেকেই পোর্টফোলিও বানানো হয়, যেটা বিভিন্ন হাউজে চলে গিয়েছিল। এরপর আমি সরাসরি একটা ধারাবাহিকে অডিশনের সুযোগ পাই। আর এভাবেই আমার অভিনয়ে আসা।
আপনার প্রথম অভিনয় কী?
‘কাজললতা’। তবে বড় কাজ আকাশ আট চ্যানেলে ‘বৃদ্ধাশ্রম’ ধারাবাহিক।
প্রথম শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
আমার একটুও ভয় লাগেনি। শ্যুটিং ফ্লোরে গিয়ে মনে হচ্ছিল হাতে স্বর্গ পেয়েছি। কোনও সমস্যা হয়নি।
এখন কোন সিরিয়ালে অভিনয় করছেন?
স্টার জলসায় নতুন ধারাবাহিক চুনিপান্না শুরু হবে। ওখানে আমি চুনির অভিনয় করছি।
যখন অভিনয়কে পেশা করবেন ঠিক করলেন, বাড়িতে কোনও সমস্যা হয়নি?
একদমই না। বাবা বলেছিলেন যাই করো না কেন, সেটা মন দিয়ে করবে। আর সে জন্যই আমি ভালো করে অভিনয় শেখার জন্য অ্যাকটিং স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম।
আপনারা কয় ভাই বোন?
আমি একা।
পড়াশোনা কোথায় করেছেন?
আমার বাড়ি বর্ধমানের মেমারিতে। আমি ক্লাস ফোর অব্দি ওখানে জ্ঞানভারতীতে পড়াশোনা করেছি। এরপর ক্লাস ফাইভ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত কৃষ্ণভামিনী নারী শিক্ষা মন্দিরে পড়াশোনা করেছি। এরপর যোগমায়া দেবী কলেজ থেকে সাইকোলজিতে অনার্স নিয়ে পাশ করেছি।
ছোটবেলায় দুষ্টু ছিলেন?
দুষ্টু বলতে আমি প্রচণ্ড ছটফটে, আর দুরন্ত ছিলাম। আমি সবাইকে খুব প্রশ্ন করতাম। তবে সেগুলো কাউকে পাজল করে দেয় না। সেই প্রশ্ন করার স্বভাবটা এখনও আমার আছে।
আপনার বাড়িতে কে কে আছেন?
আমাদের যৌথ পরিবার। বাড়িতে বাবা, মা, ঠাকুমা, জেঠু, জেঠিমা, ভাই, দিদি আর আমি থাকি। এখন আমি আর দিদি কলকাতাতে থাকি আর ভাই ব্যাঙ্গালোরে থাকে।
প্রেম করেন?
একদমই নয়। আমার কোনও দিনই কোনও প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। আমার মনে হয় যখন যেটা করব, সেটাকে একশো শতাংশ দিয়ে করা উচিত। এখন আমি আমার কাজটা নিয়েই ভীষণ ব্যস্ত। তবে আমার জীবনে কেউ এলে সে অবশ্যই আদর্শবান হবে আর তার মেরুদণ্ড থাকতে হবে। যাকে আমি পুরোপুরি ভরসা করব।
রান্না করতে পারেন?
আমাকে দেখিয়ে দিলে বা বলে বলে দিলে করতে পারব। একটা ঘটনা ঘটেছিল কাজললতাতে। সেখানে দেখানো হয়েছিল কাজল লুচি ভাজছে। তো আমি লুচিটা এতটাই উপর থেকে ছেড়েছিলাম যে তেলটা ছিটকে এসে ডান হাতের বুড়ো আঙুলসহ হাতে অনেকটা লেগেছিল। মনে আছে সেটা মজার দৃশ্য ছিল। আমি হাত পোড়া নিয়ে হা হা করে হাসছি আর কাট বলার পর আমি যন্ত্রণাতে মাথা ঘুরে বসে পড়েছিলাম।
রোজগারের টাকা কীভাবে খরচ করেন?
আমার টাকাটা পুরোটাই ব্যাঙ্কে জমা থাকে। আমার হাতখরচ পুরোটাই আমার বাবা দেয়। শুধুমাত্র কলকাতায় যে বাড়িটাতে আমি ভাড়া থাকি, সেই ভাড়ার টাকাটা আমি দিই।
নিজের গাড়ি বা বাড়ি কেনার ইচ্ছে নেই?
অবশ্যই আমি নিজের টাকায় একটা মার্সেডিজ কিনব। আর একটা বাড়িও বানাব। তবে অবশ্যই আগে বাড়ি এবং তারপর গাড়ি কিনব।
আজ যে আপনি অভিনেত্রী হয়েছেন এর পেছনে কার অবদান বেশি?
অবশ্যই আমার পরিবারের। আমার বাবা, জেঠু, ঠাকুমা সমর্থন না করলে আমি অভিনেত্রী হতে পারতাম না। এখনও ওরা আমাকে অনেক সাপোর্ট করেন।
লোকে যখন আপনাকে চিনতে পারে, কেমন লাগে? লাইফ স্টাইল কতটা বদলেছে?
লাইফ স্টাইল একদমই বদলায়নি। আগেও যেমন ঘরে থাকতে ভালোবাসতাম, এখনও ঘরে থাকি। বাইরে বেরতে, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরতে খুব একটা ভালো লাগে না। আর এখনও আমাকে সেভাবে কেউ চেনে না। তবে একবার কোয়েস্ট মলে সায়ন মুন্সির মা আমাকে চিনতে পেরে কথা বলেছিল আর মেট্রো স্টেশনে কয়েকজন চিনতে পেরে কথা বলতে এসেছিল। তখন বেশ ভালো লেগেছিল। মন ভরে গিয়েছিল।
পশুপাখি ভালোবাসেন?
ভীষণ ভালোবাসি। কুকুর আমার খুব প্রিয়। আমাদের বাড়িতে একটা কুকুর ছিল। মারা গিয়েছে। আমার কুকুর দেখলেই চটকাতে ইচ্ছে করে। কুকুরকে জড়িয়ে ধরলে একটা অদ্ভুত শান্তি পাওয়া যায়।
বর্তমান সমাজে মেয়েদের অবস্থান কেমন বলে মনে হয়?
মেয়েদের একটা নিজস্ব বক্তব্য থাকা দরকার। মেয়েরা এখনও যেন একটু ভয়ে ভয়ে থাকে। না হলে কেন রাত্রিবেলা ফেরার সময় মা-বাবারা বলেন, সঙ্গে কেউ আছে তো? বা অত রাত কোরো না, তাড়াতাড়ি ফিরে এসো। নিশ্চয় কোথাও না কোথাও মেয়েদের একটা ভয় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে কোনও বিপদ ঘটে যাওয়ার। এগুলো কিন্তু আমাদের দাদা বা ভাইরা পায় না। সুতরাং মেয়েদের আরও শক্ত হতে হবে। নিজের দায়িত্ব নিজেকে নিতে হবে।
বর্তমানে ধারাবাহিকগুলোতে অনেক মহিলা ভিলেন দেখানো হচ্ছে। সত্যিই কি আমাদের সমাজে মহিলারা এত জটিল হয়?
দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী সিরিয়ালগুলো বানানো হয়। আর সেখানে একটি মেয়ে ভিলেন হিরোকে নিয়ে টানাটানি করে আর হিরোইন গিয়ে সমস্তটা ঠিক করে দেয়, এটা দেখতে দর্শক ভালোবাসে বলেই সিরিয়ালে মহিলা ভিলেন দেখানো হয়। আর সমাজে কে কেমন, সেটা জানা খুব মুশকিল। আর আমি কতটাই বা সমাজ দেখেছি। তবে আমি যেখানে থাকি, তার চারপাশে দেখেছি, এখনও সেরকম কিছুর সামনাসামনি হইনি। তবে এটুকু বলতে পারি মানুষ চেনা খুব মুশকিল। কারণ আমরা ক্যামেরার পেছনে সব থেকে ভালো অভিনয় করি।
ভগবানে বিশ্বাস আছে?
ভগবানে আমার একশোভাগ বিশ্বাস আছে। একটা শক্তি তো আছেই। আর সে আমাদেরকে চালনা করছে। আর আমার মনে হয় ভগবানের মর্জির উপর কোনও লজিক কাজ করে না। তখন শুধু ম্যাজিক কাজ করে।
সিনেমায় অভিনয় করতে চান? স্বপ্নের চরিত্র কী?
আমি অলরেডি একটা সিনেমা করেছি। নাম ‘তুমি ও তুমি’। ওটা হয়তো পুজোর পর রিলিজ হবে। আর আমার স্বপ্নের চরিত্র মর্দানির শিবানী, মণিকর্ণিকা আর ডিডিএলজে-র সিমরণ।
পরজন্মে বিশ্বাস করেন?
না। যা হওয়ার এ জন্মেই হবে।
অবসর সময়ে কী করেন?
মায়ের সঙ্গে গল্প করি। মায়ের পেছনে লাগি। বাবাকে ফোন করি। এক্সারসাইজ করি, বই পড়ি।