সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
দক্ষিণ ভারতীয় রান্না বললেই টকের আধিক্য আর কারিপাতা, সর্ষের স্বাদ যাঁদের মুখে লেগে থাকে, তাজ করোমণ্ডলের শেফ ই প্রকাশ তাঁদের উদ্দেশে বললেন, ‘দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের বৈচিত্র্য প্রচুর। দক্ষিণের প্রতিটি রাজ্যে খাবারের স্বাদ ভিন্ন। কোথাও টক খাওয়ার চল বেশি, কোথাও বা ঝালের প্রাচুর্য মুখে লাগে। আবার কোথাও আমিষের মেনুতে নানা ধরন ও স্বাদ লক্ষ করা যায়। চেন্নাই থেকে কর্নাটক বা কেরলে এইভাবেই রান্নার স্বাদ বদলাতে থাকে।’ বাড়িতে তৈরি করা মশলার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয় গোটা দক্ষিণ ভারত জুড়ে। সেই মশলার আবার ধরন ভিন্ন। কোথাও পাকা তেঁতুল শুকিয়ে তার বীজ ফেলে গুঁড়ো করে রাখা হয়। কোথাও বা শুকনো লঙ্কার বীজ ফেলে তা শুকিয়ে নিয়ে পেস্ট করে রাখা হয়। কোথাও আবার সর্ষে ব্যবহৃত হয় নানাভাবে। তবে এই যে ঘরোয়া মশলা তৈরি, তার একটা বিশেষ পদ্ধতি আছে। সাধারণত গোটা মশলা গরম চাটুতে ভেজে নেওয়া হয়। তারপর তা গুঁড়ো করে বা বেটে রেখে দেওয়া হয়। সেই মশলাই রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এতে স্বাদেও একটা বিশেষত্ব আসে বলে মনে করেন শেফ। তিনি একাধারে মিষ্টি ও নোনতা পদে পারদর্শী। তবে কিছু বিশেষ পদ রয়েছে যেগুলো বানাতে তিনি ভালোবাসেন। তার মধ্যে আছে পায়েসম, রসম, শুখা মাটন, মীন মাংগা কারি ইত্যাদি।
রসম বিষয়ে বলতে গিয়ে শেফ জানান, চীন দেশে যেমন সয়া স্যসের নানারকম ব্যবহার করে রান্নায় স্বাদের হরেক মাত্রা যোগ করা হয়, দক্ষিণ ভারতে তেমনই রসমের নানারকম পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন পদের সঙ্গে। কোনওটায় সর্ষে ও নারকেল থাকে, কোনওটায় আবার ডলের সঙ্গে নারকেল মেশানো হয়। কোথাও আবার টক মিষ্টি স্বাদ আনা হয় তাতে।
চব্বিশ বছর ধরে এই পেশায় রয়েছেন। তিনি দেখেছেন দক্ষিণ ভারতীয় রেস্তরাঁয় গেলে লোকে কয়েকটি বিশেষ পদই অর্ডার করতে চান। তার মধ্যে রয়েছে শুকনো করে রাঁধা মাটন কারি (কারি সুক্কা), মুচমুচে ভাজা চিংড়ি (এরাল পোরিচাতু) ইত্যাদি। এইসব পদেই নতুনত্ব আনার চেষ্টায় মগ্ন শেফ।
ভাইগাই কারি সুক্কা
(মাদুরাই থেকে মাংসের শুকনো কারি)
উপকরণ: মাংসের বোনলেস টুকরো ৭৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ২টো মাঝারি, আদা-রসুন বাটা ১ চামচ করে, টম্যাটো কুচি ১টা, শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো চামচ, ধনে গুঁড়ো ১ চামচ, মৌরি গুঁড়ো ১ চামচ, গরমমশলা গুঁড়ো চামচ, নুন স্বাদ মতো, কারিপাতা ৮-১০টা, ধনেপাতা কুচি ১ মুঠো, সর্ষের তেল কাপ, ঘি ২ চামচ।
পদ্ধতি: মাংসে নুন দিয়ে অন্তত ৮০ শতাংশ সেদ্ধ করে নিন। স্টকটা রেখে দিন। কড়াইতে তেল ও ঘি একসঙ্গে গরম করে নিন। তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজে লালচে রং ধরলে আদা রসুন বাটা দিয়ে ভাজুন। টম্যাটো কুচি দিন। মোটামুটি গলে গেলে সেদ্ধ করা মাংস দিন। বাকি সব মশলা একে একে মিশিয়ে দিন। নুন দিয়ে নেড়েচেড়ে কষিয়ে নিন। সব মশলা মাংসের সঙ্গে মিশে গেলে মাটন স্টক দিয়ে দিন। ঢিমে আঁচে ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। ইতিমধ্যে একটা তড়কা প্যানে অল্প ঘি গরম করে কারি পাতা ভেজে নিন। মাংস পুরো সেদ্ধ হলে এবং গ্রেভি বেশ গা মাখা হলে উপর থেকে ভাজা কারি পাতা ছড়িয়ে দিন। সব শেষে ধনেপাতা ছড়িয়ে একটুক্ষণ আঁচ বাড়িয়ে মাংস ফুটিয়ে নিন। তারপর নামিয়ে পরিবেশন করুন।