বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যার বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
নর্দার্ন সিরকার-এর রান্নার বিশেষত্ব কী?
এই রান্নার বিশেষত্ব লুকিয়ে আছে লঙ্কার ব্যবহারে। অন্ধ্রপ্রদেশের নর্দার্ন সিরকার অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের লঙ্কার চাষ করা হয়। এক একটি লঙ্কার এক একরকম স্বাদ। আর সেই স্বাদই ধরে রাখে পদের বিশেষত্ব। মরশুম ভেদে এক এক ধরনের লঙ্কার চাষ হয়। কোনওটা ঝালের জন্য বিখ্যাত, কোনওটা বা ঝাঁঝের জন্য। এই রান্নার স্বাদ বাঙালি খাদ্যরসিকদের কাছে তুলে ধরার জন্যই এই ফুড ফেস্টের আয়োজন।
লঙ্কা ছাড়া আর কী কী উপকরণ ব্যবহার করা হয় এই অঞ্চলের রান্নায়?
তেঁতুল এই অঞ্চলে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া কারিপাতা ও সর্ষে ফোড়ন দেওয়া হয় রান্নায়। তবে এই অঞ্চলের মাছের কথা হয়তো বিশেষভাবে বলা হয় না, কিন্তু এখানকার মাছের বিভিন্ন পদও খুবই জনপ্রিয়। স্যামন ফ্যামিলির মাছ তেঁতুলের ক্বাথ দিয়ে বিশেষভাবে রান্না করা হয় এখানে।
লঙ্কার স্বাদ নাকি মরশুম অনুযায়ী আলাদা?
হ্যাঁ, শীতের লঙ্কার স্বাদ আর গ্রীষ্মের লঙ্কার স্বাদে আকাশপাতাল তফাত। তাই এক একটা লঙ্কা এক এক ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা হয়। যেমন শীতের লাল লঙ্কা বেটে মাছ রান্নায় ব্যবহার করা হয়, আবার গ্রীষ্মের মোটা বড় লঙ্কা দিয়ে আচার তৈরি করা হয়।
এই অঞ্চলের মরশুমি উপকরণ দিয়ে কেমন রান্না করা হয়?
মরশুম অনুযায়ী উপকরণ বদলায়। সব্জি, ফল সবই আলাদা হয়ে যায়। আমরা সেইসব উপকরণ দিয়ে রান্না করি। যেমন বসন্তকালে নিমফুল দিয়ে চাটনি বানানো হয়, শীতে গুড়ের সিরাপ তৈরি করা হয়, মাংসে বিটের মতো সব্জি ব্যবহার করা হয়। আবার বর্ষায় তেঁতুলের চাটনি বানানো হয়, গ্রেভিতে তেঁতুলের ক্বাথ ইত্যাদি মেশানো হয়। কয়েক পদ অন্ধ্রের রান্না চেখে দেখুন, স্বাদের তারতম্যগুলো স্পষ্ট হয়ে যাবে।
কারজাম ভেপুরু
(পেপার টসড মাটন লিভার)
উপকরণ: পেঁয়াজ স্লাইস করে কাটা ৩টে, মাংসের মেটে ৫০০ গ্রাম, আদা-রসুন পেস্ট
২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চিমটে, থেঁতো করা গোলমরিচ চা চামচ, কারি পাতা ফোড়নের জন্য, টা পাতি লেবুর রস, নুন স্বাদ মতো, মৌরি গুঁড়ো সামান্য, বাদাম তেল রান্নার জন্য পরিমাণ মতো।
প্রণালী: মেটে ফুটন্ত গরম জলে অল্প করে ভাপিয়ে নিন। এরপর কড়াইতে তেল গরম করে তাতে কারি পাতা ফোড়ন দিন। তারপর খানিকটা পেঁয়াজ দিয়ে ভাজুন। তাতে আদা-রসুন বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। মশলা খানিকটা কষা হলে বাকি পেঁয়াজ দিয়ে দিন। তারপর মেটে দিয়ে কষুন। কষতে কষতে তেল ছেড়ে এলে একে একে হলুদ, গোলমরিচ দিয়ে নেড়ে নিন। নুন দিয়ে ঢিমে আঁচে বসিয়ে রাখুন। তেল ছেড়ে এলে এবং শুকনো শুকনো হয়ে উঠলে পাতি লেবুর রস ছড়িয়ে নামিয়ে নিন। নামানোর আগে মৌরি গুঁড়ো ছড়িয়ে নামাবেন। এই পদটি অতিরিক্ত বেশিক্ষণ রান্না করবেন না। তাতে মেটে শক্ত হয়ে যাবে।
মেথি কুরা রয়ালু
(মেথি প্রন ইন এথনিক মশলা)
উপকরণ: মেথি পাতা ১ আঁটি, দারচিনি, লবঙ্গ, ছোট এলাচ ১ চা চামচ, গোটা সর্ষে ও মেথি ১ চা চামচ, পেঁয়াজ ২টো, টম্যাটো অর্ধেক করে পেস্ট, তেঁতুলের ক্বাথ ১ টেবিল চামচ, শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো ১ চা চামচ করে, ছোট চিংড়ি ৫০০ গ্রাম।
প্রণালী: কড়াইতে তেল গরম করে নিন। তাতে সর্ষে আর মেথি ফোড়ন দিন। এরপর পেঁয়াজ দিয়ে কষুন। পেঁয়াজ সোনালি হওয়া পর্যন্ত কষে নিন। তাতে টম্যাটো বাটা আর তেঁতুলের ক্বাথ মেশান। একটু ফুটিয়ে নিন। তারপর বাকি সব মশলা একে একে মেশান। অল্প জল দিয়ে গ্রেভি বানান। গ্রেভি ঘন হলে তাতে মেথি পাতা দিন। মেথি পাতা গ্রেভিতে মিশে গেলে চিংড়ি মাছ দিন। ঢিমে আঁচে একটুখানি রেখে চিংড়ি মাছ সেদ্ধ করে নিন। তারপর আঁচ বাড়িয়ে ঢাকা খুলে রান্না করুন। ঘন গ্রেভিতে চিংড়ি ফুটতে থাকলে পরিমাণ মতো নুন দিয়ে নামিয়ে নিন।
শিকামপুরি কাবাব
(মাটন কাবাব)
উপকরণ: ছোট এলাচ ও দারচিনি চা চামচ, কাঁচা লঙ্কা ২টো, কারি পাতা ১ মুঠো, তেঁতুলের ক্বাথ ১ টেবিল চামচ, ছোলার ডাল ১ কাপ, মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, নুন স্বাদ মতো, চিনি চা চামচ,বাদাম তেল টেবিল চামচ, ঘি ভাজার জন্য।
প্রণালী: ছোলার ডাল অল্প তেলে ভেজে নিন। তারপর তা ঠান্ডা করে নিন। এবার সব মশলা মাংসের কিমার সঙ্গে মিশিয়ে তা ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এই মিশ্রণে সামান্য বাদাম তেল মিশিয়ে আবারও ব্লেন্ড করুন। এবার এই মিশ্রণ থেকে গোল গোল প্যাটি তৈরি করে নিন। একটা ননস্টিক ফ্রাই প্যানে ঘি গরম করে নিন। তারপর মাটন প্যাটি তার ওপর দিয়ে একপিঠ একপিঠ করে ভাজুন। প্যাটিতে বাদামি রং ধরলে বুঝবেন ভাজা হয়ে গিয়েছে।