বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যার বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই স্কুলের সামনে প্ল্যাকার্ড, ঝান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ধর্মঘটীদের একাংশ। এদিকে, প্রথম দিন কিছুটা আগেই স্কুলে চলে এসেছিলেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের অনেকে। ছিলেন অভিভাবকরাও। তবে, তাঁদের স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্যকে এসে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তিনি বোঝান বাম ছাত্রনেতাদের। সংবাদমাধ্যমও ছিল। শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হন ধর্মঘটীরা। তবে, তার মধ্যেই অনেকে ঝুঁকি না নিয়ে ফিরে যায়। কোনও কোনও ছাত্র মরিয়া হয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দিতে আসে। তবে, অভিভাবকরা তাদের সরিয়ে নিয়ে যান। এদিন একেকটি সেকশনকে ভেঙে পড়ুয়াদের একাধিক ঘরে বসানো হয়েছিল। উপস্থিতির হার তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না।
ধর্মঘটীরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেটের বাইরে মেন রোড বন্ধ করে ক্যারম, ক্রিকেট খেলছিলেন। কেউ আবার ফুটবল নিয়ে নাচাচ্ছিলেন। এর জন্য যাদবপুর থানা থেকেই রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে বন্ধ করা ছিল। ছুটির পর ডিপিএস রুবি পার্কের শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের একটি বাসকে এর ফলে ঘুরিয়ে দিতে হয়। অনেক পড়ুয়াকেই অভিভাবকদের হাত ধরে যানবাহনের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের একটি সাংবাদিক বৈঠক ছিল। তার পরে এসএফআই গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সদর দপ্তর অরবিন্দ ভবনেরর চারটি গেটেই তালা ঝুলিয়ে দেয়। বলা হয়, ধর্মঘট যতক্ষণ চলবে, অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেখান থেকে কাউকে বেরতে দেওয়া হবে না, ঢুকতেও দেওয়া হবে না। তবে, ঘণ্টাখানেক বাদে সায়েন্স ফ্যাকাল্টির একদল পড়ুয়া কোনও কাজে সেখানে যান। তাঁরা ঢোকার জন্য জোরাজুরি করেন। এরপর কর্মীদের একাংশ তালা কেটে গেট খুলে দেন। এসএফআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য এসব ঘটনাকে বড় করে দেখতে রাজি হয়নি।
হিন্দু স্কুলে এদিন পড়ুয়াদের একটি কোভিড কিট দেওয়া হয়। তাতে তরল সাবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক এবং টিস্যু ছিল। নবান্ন অভিযান এবং পরদিন ধর্মঘটের কারণে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি বেশ খানিকটা ব্যাহত হয়েছে হিন্দু স্কুল সহ কলেজ স্ট্রিটের স্কুলগুলিতে। কোভিড কিটের গাড়িও আগের দিন ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিল মিছিলের জন্য। এদিন শেষমূহূর্তে তা ঢুকতে পারে।
কলকাতা ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের অন্যত্র যথারীতি স্কুল খুলেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্কুলগুলিতে উপস্থিতি কম ছিল। বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়েছে। কোথাও কোথাও আবার অভিভাবকদের সম্মতিপত্র নেওয়া হয়েছে সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর বিষয়ে। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু স্কুলে ক্লাসেই প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল। তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের গেটে ছিল স্যানিটাইজার টানেল। থার্মাল চেকিংয়ের ব্যবস্থা ছিল অধিকাংশ স্কুলেই। মাস্ক পরার বিধিও যথাযথভাবে পালন করেছে পড়ুয়ারা। তবে, এসব মানতে হলেও তাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। উত্তরবঙ্গে ধর্মঘট উপেক্ষা করেই স্কুলে এসেছিল পড়ুয়ারা। শিলিগুড়ির বেশ কিছু স্কুলে পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার রসিদ নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল এদিন। দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি স্কুলে এদিন মোবাইলে গান বাজিয়ে, নেচে রীতিমতো পার্টি করে পড়ুয়ারা। ফেসবুক লাইভ করে তা ছড়িয়ে দেয় তাদেরই একজন। সেটা নিয়ে এলাকায় শোরগোল পড়েছে।