উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
আমার শৈশবের পুজো
শৈশবের পুজো মানেই কলকাতা। আমার বড় হয়ে ওঠা নয়া দিল্লিতে। কিন্তু পুজোর ছুটি মানেই এক ছুটে কলকাতা চলে যাওয়া। তাই শৈশবের স্মৃতি হাতড়ালে কলকাতাকে ঘিরে টুকরো টুকরো নানান কথা ভেসে আসে। কলকাতার একডালিয়াতে আমাদের পৈতৃক ভিটে। আর তার পাশেই খুব ঘটা করে পারিবারিক দুর্গাপুজো হয়। আজও ধুমধাম করে এই পুজো হয়। একডালিয়ার এই পুজোর হোতা ছিলেন আমার দাদু। তাই নিয়ম করে আমরা এই পুজোতে যেতাম। আর সেখানে সকলের প্রচুর আদর, ভালোবাসা পেতাম। তবে সব থেকে মজা লাগত সবাই মিলে একসঙ্গে বসে ভোগ খেতে। আর ফল কাটা, চন্দন বাটা, ফুল বাছা সহ ছোট ছোট নানান কাজে মেতে উঠতাম। আমি ছোট ছিলাম বলে আমাকে ফল কাটতে দেওয়া হতো না। দুর্গাপুজোর সবথেকে মজা ছিল নতুন নতুন জামা পরা। ছোট থেকে আমার বড় হয়ে ওঠা জুড়ে মা দুর্গা। আমি সবসময় মনে করি মা দুর্গাই আমার শক্তি। উনি আমার পাশে সর্বদা আছেন। ছোটবেলায় পুজো মানেই ছিল এক রাশ আনন্দ। তখন এর আধ্যাত্মিক দিকটি উপলব্ধি করার ক্ষমতা আমার ছিল না।
পুজো মানেই নতুন কাপড়
পুজো মানেই নতুন কাপড়ের গন্ধ। দুর্গাপুজোর ষষ্ঠী থেকে দশমী নতুন জামা চাই-ই চাই। পুজোর দু’বেলা নতুন জামা পরতাম। সকালে একটা জামা। আবার রাতের পোশাক বদলে যেত। এই পাঁচদিন নিজেকে সেরা দেখানোর সবরকম চেষ্টা করতাম। জানি না আমাকে সেরা লাগত কি না! তবে সকাল থেকে সেজেগুজে ঘুরতে দারুণ লাগত। পরিবার, বন্ধু সকলের সঙ্গে পুজো কাটানোর এক মজাই আলাদা ছিল।
ডায়েট নয়
আমি ডায়েট করতে খুব একটা পছন্দ করি না। তাই ডায়েট সে অর্থে করা হয় না। আর দুর্গাপুজোর সময় কলকাতাতে থাকলে ডায়েটের কোনও প্রশ্নই নেই। আমি পেট পুরে ভোগ খাই। ভোগের খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, লাবড়া, মিষ্টি, পায়েস সবকিছু মনের আনন্দে খাই। এই ক’দিন কোনও খাওয়া থেকে কেউ আমাকে আটকাতে পারে না।
এবারের পুজো
এবারের দুর্গাপুজো একটু অন্য হতে চলেছে। এবার অন্য রকমভাবে পুজো কাটানোর পরিকল্পনা করছি। বাবা-মা এখন কলকাতাতে। এই পাঁচদিন তাঁরা কলকাতাতেই কাটাবেন। তবে আমরা তিন বোনের কেউই কলকাতাতে যাব না। তিনজনে মিলে এবারের পুজো মুম্বইতে উদযাপন করব। এবার এমন কিছু করতে চলেছি যা কখনও করিনি। অষ্টমীর দিন অঞ্জলি তো দেবই। আর দশমীতে সিঁদুর খেলব। আমরা তিন বোন এখন বিবাহিত। তাই একসঙ্গে সিঁদুর খেলব। এবছর আমি প্রথমবার সিঁদুর খেলতে চলেছি। যদিও আমার বিয়ের বয়স তিন বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজ অবধি কখনও সিঁদুর খেলিনি। সেজন্য আমি খুব এক্সাইটেড।
বিসর্জনের স্মৃতি
দুর্গাপুজোর শেষদিন মানে বিদায়ের সুর। তবুও তার মধ্যে এক অন্য ধারার মজা লুকিয়ে ছিল। আমরা সবাই ট্রাকে করে বিসর্জনে যেতাম। ট্রাকে নানারকম বাদ্যযন্ত্র থাকত। আমরা গান গেয়ে হুল্লোড় করতে করতে যেতাম। প্রতিমার থেকে অস্ত্র নিতাম। আমার দায়িত্ব ছিল মা দুর্গা আর মা লক্ষ্মীর সব সাজসজ্জা খুলে নেওয়ার।
করণ আর পুজো
আমার মনে হয় আমার স্বামী করণ সিং গ্রোভার আগের জন্মে বাঙালি ছিল। ও বাংলা বলতে চেষ্টা করে, বাঙালি খাবার খেতে ভালোবাসে। ওর মধ্যে শিল্পীসত্তা আছে। ও ভাল লিখতে পারে, গান গাইতে পারে। আর মা দুর্গাকে খুব ভালোবাসে। বিয়ের পর প্রথম দুর্গাপুজোতে আমি আর করণ কলকাতায় গিয়েছিলাম। মাত্র একদিন সেখানে ছিলাম। কিন্তু ও দারুণভাবে উপভোগ করেছিল। সন্ধিপুজো দেখেছিল। ‘কসৌটি জিন্দেগি’ ধারাবাহিকে ও ধুনুচি নাচও করেছে যা আমি দেখার অপেক্ষায় আছি। আমি আর করণ দুজনেই আধ্যাত্মিক চেতনায় বিশ্বাসী। মা দুর্গাকে স্মরণ না করে আমি কোনও কাজ করি না। আমার সঙ্গে থাকতে থাকতে করণও তাই করে।
পুজোর বার্তা
সকলকে পুজোর শুভেচ্ছা জানাই। প্রত্যেকে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যেন পুজো উপভোগ করেন।