শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
আমাদের বাড়ীতে বৈদ্যুতিক আলো হঠাৎ নিভে গেলে রাজপথ বা পার্শ্ববর্তী বাড়িতে বৈদ্যুতিক আলো জ্বলতে থাকলে আমরা বুঝে থাকি বাড়ীর সঙ্গে মূল বৈদ্যুতিক কেন্দ্রের সংযোগ নষ্ট হয়েছে। তখনই আমরা বৈদ্যুতিক অভিজ্ঞ মিস্ত্রি ডেকে তাঁর নির্দেশমত দ্রব্যাদি এনে দেওয়ায় তিনি তা লাগিয়ে সংযোগ ক’রে আলো জ্বেলে দেন। সেরূপ আমরা মহাশক্তি মাতার সহিত সম্বন্ধ হারিয়ে শক্তিহীন হয়ে পড়ছি। তাই আমরা যদি তথ্যাভিজ্ঞ পুরোহিত সন্ধান করে এনে তাঁর নির্দেশ মত মহাশক্তির পূজা করি, আমরা শক্তিশালী হ’য়ে সংগ্রাম শক্তি কালীমাতার কৃপা লাভে ধন্য হব।
বাড়ীতে কোন সম্মানিত অতিথি এলে তাঁকে যেমন আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়ে সত্বর যথাযোগ্য স্থানে উপবেশনের ব্যবস্থা করি ও হস্তপদাদি ধৌত করার জন্য যথোপযুক্ত জল সরবরাহ করি। অতঃপর তাঁর জলযোগ, স্নানাহার, শয়ন ইত্যাদির ব্যবস্থা ক’রে নিষ্ঠার সহিত বিবিধ উপহার দিয়ে অতিথি-নারায়ণকে পরিতৃপ্ত করতে প্রয়াসী হই। সেরূপ পটে বা প্রতিমায় আরাধ্যা দেবীকে আহ্বান ক’রে তিনি ঐ পটে বা প্রতিমায় সূক্ষ্ম চৈতন্যময় সত্তায় অধিষ্ঠিত ভাবটি মনে প্রাণে উপলব্ধি ক’রে তাঁর উদ্দেশ্যে একাগ্রচিত্তে এক একটি ক’রে পূজার উপচার নিবেদন করার নামই পূজা। আসলে পূজা একটি জীবন্ত অধ্যাত্ম সাধনা। মাতৃপূজায় আমাদের ভক্তিপুষ্পে অঞ্জলি দিতে হবে। গঙ্গাজলের স্থলে চোখের জলে অভিষেক করতে হবে। প্রেম, ভক্তি, অনুরাগ ভালবাসা ইত্যাদিই তাঁর সেবার উপকরণ। সদানন্দময়ী মায়ের শক্তি ও করুণার দান উপলব্ধি তখনই সম্ভব যখন অন্তর্যোগে অন্তরের রত্নসিংহাসনে বসিয়ে তাঁর আরাধনায় সাধক হন ব্রতী। রসনায় কালী নাম, আর ধ্যানে মাতৃমূর্তি—এই সার সাধন নীতি যাঁর, তিনিই যথার্থ মাতৃভক্ত, তাঁর পূজাই সার্থক।
পূজা কাকে বলে? এ প্রশ্নের উত্তরে গুপ্ত যোগিবর শ্রীশ্রীরামঠাকুর বলেছেন—‘আপন কর্তৃত্বাভিমান সহ সকল ইন্দ্রিয় ইচ্ছা-বাসনাদি দান করাকে।’ তাহলে পুষ্প, চন্দন, ধূপদীপ জ্বালিয়ে পূজা কথার অর্থ কি? ঠাকুরের উত্তর—‘জীব যাহা কিছু ভাল সুখকর বলিয়া বোঝে সে সমস্তই ভগবানেতে দান।’