ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
আদালতের নির্দেশ মতোই যাবতীয় তদন্ত চলা সত্ত্বেও আর জি কর ইস্যুতে আন্দোলনে ভাটা পড়েনি। মুখ্যমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবও বার বার সুবিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকী দোষীর সর্বোচ্চ সাজা দিতে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততম করার জন্য মমতার সরকার কিছুদিন আগে রাজ্য বিধানসভায় ‘অপরাজিতা’ নামে নতুন একটি বিলও পাস করিয়েছে। কিন্তু ভবি ভুলবার নয়। জুনিয়র ডাক্তারদের টানা কর্মবিরতি চলেছে দীর্ঘদিন। সঙ্গে ছিল সিনিয়র ডাক্তারদেরও সমর্থন। সম্প্রতি জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি উঠে গেলেও তাঁদের একাংশ ধর্মতলায় রাস্তার উপরেই শুরু করেছেন নতুন করে ‘অনশন’ আন্দোলন। দাবি একাধিক হলেও, বলা হচ্ছে মূল দাবি—অভয়া বা তিলোত্তমার ‘বিচার চাই’। তাঁদের মুহুর্মুহু স্লোগান চলছে, ‘অভয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ... ইত্যাদি।
অবশেষে সোমবার কী দেখলাম আমরা—আর জি কর ধর্ষণ-খুন মামলায় মাত্র ২৪ ঘণ্টায় লালবাজার যা করেছিল, ৫৫ দিন পর তদন্তের সেই অঙ্কেই চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। শিয়ালদহ আদালতে মস্ত চার্জশিটে কেন্দ্রীয় এজেন্সি জানিয়ে দিল, খুন-ধর্ষণ করেছে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। ধর্ষণ-খুনের তদন্তে নতুন কোনও নাম উঠে আসেনি। আর তারই প্রাথমিক সিলমোহর পড়েছে চার্জশিটে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৬ নম্বর ধারায় চার্জশিট দেওয়ায় এটা স্পষ্ট যে, তরুণী গণধর্ষণের শিকার হননি। কেন এই ঘটনা ঘটাল সে? ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মত্ত থাকাতেই এই নৃশংস অপরাধ ঘটিয়ে ফেলেছিল সঞ্জয়। একই তথ্য প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছিল কলকাতা পুলিসও। ‘আজিও নাকি কলিকাতায় এমন অনেক কৃতবিদ্য নরাধম আছে, যাহারা মাতৃভাষাকে ঘৃণা করে, যে তাহার অনুশীলন করে, তাহাকেও ঘৃণা করে, এবং আপনাকে মাতৃভাষা অনুশীলনে পরাঙ্মুখ ইংরেজিনবীশ বলিয়া পরিচয় দিয়া, আপনার গৌরব বৃদ্ধির চেষ্টা পায়। যখন এই মহাত্মারা সমাজে আদৃত, তখন এ সমাজ ঈশ্বর গুপ্তের সমকক্ষ হইবার অনেক বিলম্ব আছে।’ বঙ্কিমচন্দ্রের মৃত্যুর ১৩০ বছর পরেও বঙ্গসন্তান দাঁড়িয়ে আছে যেন একই জায়গায়। বাংলার কোনোকিছুই তার কাছে উঁচু দরের বা খাঁটি বলে মনে হয় না। আমাদের জন্য যা-কিছু ভালো সবই বহির্বঙ্গে, বিদেশি হলে তো কথাই নেই। যেখানে নিদেন পক্ষে বিদেশ ছুঁয়ে দেখার সুযোগ নেই, সেখানে অন্তত দিল্লি, বম্বের জিনিসই বাঙালির কাছে ‘বেটার’। হবে নাই-বা কেন? ১৯১১ সাল অব্দি কলকাতাই যে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল। কেবল বিলিতি জিনিসেই স্বর্গসুখ অনুভবের সেই হ্যাংওভার আজও নিশ্চয় কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমরা। সুন্দরভাবে উল্টে নিয়েছি ঈশ্বরবাক্য—‘বিদেশের কুকুর ধরি/ দেশের ঠাকুর ফেলিয়া’।