ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
এই বারবার দামবৃদ্ধির অন্তরালে লুকিয়ে রয়েছে আরও এক অঙ্ক। গত লোকসভা ভোটের আগে দেখা যায়, দেশের মোট ৩৫টি ওষুধ কোম্পানি ১১টি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী বন্ডে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে। প্রশ্নাতীতভাবেই এর সিংহভাগ পেয়েছে বিজেপি। এই সংস্থাগুলি মানুষের রোজকার ওষুধের নির্মাতা ও জোগানদার। এক অজানা কারণে এদের ওষুধের দাম এমনকী ৫০ শতাংশ পর্যন্তও বেড়ে যায়! নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে এমন ‘গোপন’ লেনদেনের অভিযোগেই দেশের অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি কর্ণাটকের এক থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। কিন্তু শুধুই কি ওষুধের দামবৃদ্ধি? দেখা গিয়েছে, দাতা সংস্থাগুলির কোনও কোনও ওষুধের গুণমান নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এদের মধ্যে কোভিডের টিকা প্রস্তুতকারী এক সংস্থাও রয়েছে। অভিযোগ, শাসকগোষ্ঠীকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে এরা রেহাই পেতে চেয়েছে। ওষুধের গুণমান নিয়ে আরও এক কুকীর্তি সামনে এসেছে সম্প্রতি। ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোল সংস্থা জানিয়েছে, ৫০টিরও বেশি ওষুধ গুণমান নির্ধারণের পরীক্ষায় ‘পাশ’ করতে পারেনি। অথচ এইসব ওষুধ বাজারে রমরমিয়ে চলছে! গুণমান পরীক্ষায় ফেল মানে ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠা। চিকিৎসকদের অনেকেই বলছেন, এই ধরনের ওষুধ থেকে রোগী সুস্থ হবেন না, দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ চলবে, তাতে চিকিৎসা খরচও বাড়বে। কিছু নামী কোম্পানির এমন ‘ফেল’ করা ওষুধের সঙ্গে সমান্তরালভাবে চলছে জাল ওষুধের কারবার। হুবহু একইরকম দেখতে, কিন্তু খেলে কাজ হবে না। উল্টে বিপদ বাড়তে পারে। ছেলেখেলার এরচেয়ে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে। অথচ যে কোনও জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে মানুষের যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রেও মোদি সরকার ‘ডাহা ফেল’। ফলে আতান্তরে গরিব মধ্যবিত্ত।
সরকারি বদান্যতায় ওষুধের ব্যবসায় আর জি করের ‘সন্দীপ ঘোষ’দের মতো মানুষদের এই দাপাদাপির সঙ্গেই মোদি জমানায় বেপরোয়াভাবে বেড়ে চলেছে সাধারণের চিকিৎসাখরচও। একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য বিমা সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন বছরে চিকিৎসাখাতে খরচ ১৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। আবার অন্য এক সংস্থার মতে, খরচ বৃদ্ধির হার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। শুধু ওষুধ ইঞ্জেকশনই নয়, হাসপাতাল, নার্সিংহোমে ঢুকলে নানা কিসিমের টেস্ট, ডাক্তারদের ফিজ, ভর্তি হলে শয্যা খরচ, অস্ত্রোপচারের খরচ— সব মিলিয়ে কোনও কোনও পাড়ার পুজো বাজেটকেও তা হার মানাতে পারে। আম জনতার কথায়, প্রতিদিন প্রকাশ্য দিবালোকে চিকিৎসা নিয়ে ‘ডাকাতি’ চলছে। ‘লুট’ চলছে। চিকিৎসা এখন একটা অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা, যেখানে পরিষেবাটাই গৌণ। তাই মোদির ‘বিকশিত’ ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বহু মানুষকে ধারবাকি করেই খরচ মেটাতে হচ্ছে। গরিব মানুষ দেনার দায়ে ডুবে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে খরচের ধাক্কা সামলাতে আম জনতার নাভিশ্বাস উঠলেও সুরাহার কোনও ‘গ্যারান্টির’ কথা শোনা যাচ্ছে না দেশশাসকের মুখে!