ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
বাজার চলতি বিভিন্ন ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে নজরদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা হল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)। সংস্থাটি প্রতিমাসে কিছু ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে। সেগুলি নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা চালান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এই গুরুত্বপূর্ণ যাচাই প্রক্রিয়ায় কোনও ওষুধ ‘ফেল’ করলে সংশ্লিষ্ট সকলকেই সতর্ক করে সিডিএসসিও। দেশজুড়ে জারি করা হয় সতর্কবার্তাও, যাতে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর ওষুধগুলি গ্রহণ থেকে সাধারণ মানুষও বিরত থাকেন। এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ারই অঙ্গ হিসেবে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে সিডিএসসিও’র গতমাসের ‘নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি’ তালিকা। তা থেকেই জানা যাচ্ছে, উপরে উল্লেখিত ওষুধগুলিসহ দেশে চালু মোট ৫৩টি ব্র্যান্ড গুণমান যাচাইয়ে উত্তীর্ণ নয়। এই যাচাই প্রক্রিয়ায় অনুত্তীর্ণ ওষুধের এবার দুটি তালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের অধীন সংস্থাটি। প্রথম তালিকায় আছে ৪৮টি পরিচিত ওষুধের নাম। দ্বিতীয় তালিকাভুক্ত হয়েছে আরও পাঁচটি ব্র্যান্ড। যেসব কোম্পানির ওষুধ এই টেস্টে ডাহা ফেল করেছে তাদের বক্তব্যও অবশ্য জায়গা পেয়েছে রিপোর্টে। স্বভাবতই অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়টি ঘিরে দেশজুড়েই হইহই পড়ে গিয়েছে। কারণ, তালিকাভুক্ত কিছু ব্র্যান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কয়েকটি বিখ্যাত ওষুধ কোম্পানির নাম। এই তালিকা প্রণয়নে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকেও রেয়াত করা হয়নি, এমন আপত্তিকর ওষুধ প্রস্তুতকারক একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকেও এই তালিকায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
স্বভাবতই বিতর্ক দানা বেঁধেছে এবং বাড়ছে। পাল্টা যুক্তি ও বক্তব্যও শোনা যাচ্ছে ওষুধ কোম্পানিগুলির তরফে। তাদের অনেকের দাবি, যে-সমস্ত ব্যাচের ওষুধের নমুনা নিয়ে এমন গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে সেগুলি ‘জাল’ এবং অবশ্যই তাদের কারখানা বা সংস্থায় তৈরি নয়। মারাত্মক অভিযোগ খণ্ডন এবং দেশবাসীর যাবতীয় সন্দেহ, সংশয় নিরসনে সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন একটি প্রথম সারির ওষুধ কোম্পানির মুখপাত্র। সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার মধ্যে আলোচনা অবশ্যই চলতে পারে এবং তা চলুক। ওষুধ প্রস্তুতকারকদের দাবি সত্য প্রমাণিত হলে পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, দেশজুড়ে জাল ওষুধের রমরমা কারবার চলছে। এই ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ও তাদের কর্তাব্যক্তিরা কর্তব্যপালনে যারপর নাই ব্যর্থ অথবা জারি রয়েছে ‘টেবিলের নীচে অন্য খেলা’। তবে সিডিএসসিও’র রিপোর্ট নির্ভেজাল হলে ক্ষতিকর ওষুধগুলির প্রচার, সেগুলি ব্যবহারের বিধিবদ্ধ পরামর্শদান এবং বিক্রয় একযোগে বন্ধ হওয়া জরুরি। একইসঙ্গে বাজারে আনতে হবে ক্ষতিকর ওষুধগুলির নিরাপদ ও উপযুক্ত বিকল্পও। সবটাই হতে হবে দ্রুত বা একটি যুক্তিগ্রাহ্য সময়ের মধ্যে। কেননা, অসুখবিসুখের বাড়াবাড়ি হলে বহু মানুষ ধৈর্য হারাবেন এবং সাময়িক উপশমের আশায় মোটা দামেই খেতে থাকবেন ক্ষতিকর ওষুধও। মানুষের স্বাস্থ্য বা জীবন নিয়ে যেন কোনওভাবেই ছিনিমিনি খেলা না চলে। সিডিএসসিও’র রিপোর্ট থেকে এই আশাব্যঞ্জক বার্তা পাওয়া যাচ্ছে যে, ওষুধের গুণমান এবং জনস্বাস্থ্য নিয়ে ভারতও ভাবে তাহলে! বার্তাটি সাধারণ মানুষকে নিশ্চয় আশ্বস্ত করবে।