ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
এবারের এত বড় বন্যার ক্ষয়ক্ষতির জন্য মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গকে প্রাথমিকভাবে ৪৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে দিল্লি। কেন্দ্র আরও ঘোষণা করেছে, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল খুব শীঘ্রই তারা পাঠাবে। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পরই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল (এনডিআরএফ) থেকে মিলবে আরও কিছু আর্থিক সাহায্য। প্রথম দফায় বাংলাসহ ১৪টি বন্যাদুর্গত রাজ্যকে মোট ৫৮৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে ৯টিতে হয়ে গিয়েছে দিল্লির পরিদর্শন এবং সর্বাধিক কেন্দ্রীয় সাহায্য পেয়েছে মহারাষ্ট্র (১৪৯২ কোটি), অন্ধ্রপ্রদেশ (১০৩৬ কোটি) ও অসম (৭১৬ কোটি)। লক্ষণীয় যে উপর্যুক্ত তিন রাজ্যই গেরুয়া সংস্কৃতি অনুসারে ‘ডাবল ইঞ্জিন যুক্ত’। খটকা রয়েছে অবশ্য গোড়াতেই—কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের রাজ্য পরিদর্শন নামক কর্মসূচিতে। একশো দিনের কাজ এবং আবাস-সহ বেশকিছু কেন্দ্রীয় যোজনা বা প্রকল্পে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তিনবছর যাবৎ লাগাতার বঞ্চনা করা হচ্ছে। নবান্ন থেকে যতবার দাবি ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে মোদি সরকার ততবারই ধুয়ো তুলেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের পরিদর্শন ও রিপোর্টের। বিশেষ করে মনরেগা ও আবাস ইস্যুতে তারা কতবার যে টিম পাঠিয়েছে তা মনে রাখা কঠিন। তারপরও রাজ্যকে কোনওভাবেই বাগে না পেয়ে মৌনব্রত নিয়েছে মোদি সরকার। মাঝখান থেকে কেটে গিয়েছে তিন তিনটি নিষ্ফলা বছর। অতীতেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ক্ষতিপূরণে দিল্লিকে অবিকল ভূমিকায় পাওয়া গিয়েছে।
কেন্দ্রের এই মতলবি রাজনীতির শিকার আসলে হয়েছে অসংখ্য গরিব মানুষ। বহু পরিবার নিজ গ্রামে বা এলাকায় কাজ না পেয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন বেছে নিয়েছে। অন্যদিকে, পাকাবাড়ি না পেয়ে বন্যার সময় একাধিক মানুষ মারা গিয়েছে কাঁচা দেওয়াল চাপা পড়ে। তাতে হুঁশ ফেরেনি দিল্লিওয়ালাদের। তারা ফের নতুন মতলবি অস্ত্রে শান দিচ্ছে। সাম্প্রতিক বন্যার কারণে জনজীবন এবং ফসল মিলিয়ে বাংলাজুড়ে যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য নিঃসন্দেহে বহু হাজার কোটি টাকা। সেখানে কেন্দ্র প্রথম দফায় যে টাকা দিয়েছে তা ‘সান্ত্বনা’ মাত্র। তৎসহ কেন্দ্রীয় টিম পাঠানোর গপ্পোটিও সিঁদুরে মেঘ বইকি! কেননা, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পরম্পরায় বাংলার মানুষের ঘর পোড়া গোরুরই দশা। আর এখানেই প্রশ্ন, এত বড় বিপর্যয়ে বাংলার মানুষ সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাশে পেল না কেন? তাঁরা কি লোকসভার ভোটে রামধাক্কার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন? এর পরেও কি বুঝতে বাকি থাকে, কেন কেন্দ্রীয় শাসক দল ক্রমে জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে, এমনকী টাকা ছড়িয়েও দলীয় সদস্য জোগাড় করতে গলদ ঘর্ম তারা?