শ্লেষ্মা ও বাতজ রোগ বৃদ্ধিতে কাজকর্মে ব্যাঘাত। গৃহাদি নির্মাণ বা সংস্কারে শত্রুর বাধা। ধর্মে মতি। ... বিশদ
কয়েকদিন আগেই ভেঙে পড়েছিল একটি ব্রিজ। তার রেশ কাটার আগেই বুধবার ভোরে গণ্ডকী নদীর উপর অন্য একটি সেতুর অংশবিশেষ ভেঙে পড়ল হুড়মুড়িয়ে। মহারাজগঞ্জের সঙ্গে বহু গ্রামের সংযোগকারী এই সেতু দুর্ঘটনায় অবশ্য হতাহতের খবর নেই। অপরদিকে, সারণে ভেঙে পড়েছে ধামাহি নদীর উপরে একটি ব্রিজ। ডেপুটি উন্নয়ন কমিশনার মুকেশ কুমার ঘটনাস্থল ঘুরেও বিপর্যয়ের কারণ জানাতে পারেননি, তদন্ত শুরুর সংবাদ দিয়েছেন কেবল। সরকারি কর্তাটি জানান, চারদশকের পুরনো সেতুটি ভেঙে পড়ে ওইদিন কাকভোরে। কয়েকদিন যাবৎ তাতে মেরামতির কাজ চলছিল। প্রসঙ্গত, পূর্ববর্তী দু’সপ্তাহে বিহারে ছয়টি ব্রিজ ভেঙে পড়া নিয়ে চলছে জোর রাজনৈতিক তরজা। গয়ার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতনরাম মাঝি আবার এসবের পিছনে চক্রান্তের গন্ধ খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর সন্দেহ, ‘রাজ্যের এনডিএ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই হয়তো এই চক্রান্ত।’ ব্রিজ নির্মাণ ও সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের সত্যও অবশ্য স্বীকার করেন তিনি। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব রাজ্যের এনডিএ সরকারকে একহাত নিয়েছেন। এক্স-এ প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘বিহারে বিজেপি ও নীতীশ কুমারের ১৮ বছরের সততায় বিরক্ত হয়ে মাত্র ১৫ দিনে এতগুলি ব্রিজ নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হল!’
যাঁরা নিত্যদিন ওই রাজ্যে বিভিন্ন সেতু বা ব্রিজ পেরিয়ে যাতায়াত করছেন তাঁদের মনের অবস্থা সহজেই অনুমান করা যায়। আন্দাজ করা যায় পর্যটক এবং সেইসব মানুষের মনের কথা, এখন বিহারের উপর দিয়ে দূর দূরান্তে যাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। কারণ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ছোট বড় নদী খাল প্রভৃতি। সড়কগুলি চলে গিয়েছে সেসবের উপর দিয়েই। পাকা সেতু এতদিন ছিল বিচ্ছিন্নতা দূরীকরণের এবং যোগ বা বন্ধনের প্রতীক। কিন্তু জনতা দল ইউনাইটেড সুপ্রিমো নীতীশ কুমারের জমানার সৌজন্যে সেতুর উদ্দেশ্য বিধেয় সবই বদলে গিয়েছে সে-রাজ্যে। এর পিছনে তিনটি সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না: (১) অত্যন্ত খারাপ উপকরণ দিয়ে সেতুগুলি তৈরি। একইসঙ্গে বিরাট প্রশ্ন থাকছে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের বিদ্যের দৌড় এবং আমলাতন্ত্রের স্বচ্ছতার পাঠ নিয়ে। (২) পুরনো ব্রিজগুলির দেখভাল এবং রক্ষণাবেক্ষণ একেবারেই হচ্ছে না। (৩) রাজনীতির কারবারিদের সঙ্গে দুর্নীতিবাজদের দোস্তি রাজ্যটিকে এক ধ্বংসের কিনারায় ঠেলে দিয়েছে। সব মিলিয়ে ঐতিহ্যবাহী বিহার জুড়ে আজ সেতুভঙ্গেরই ভয়াবহ আয়োজন বা পরিবেশিত হয়ে চলেছে বিপরীত গীত! মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দলের নামের শেষপদ ‘ইউনাইটেড’কেই বিদ্রুপ করে চলেছে উদ্ভূত পরিস্থিতি। যেসব সেতু নির্মীয়মাণ এবং কিছু পুরনো সেতু এখনও ‘নিরাপদ’ বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, বাস্তবে কতখানি তেমন তা, এখনই পরখ করা জরুরি। অন্যথায় সামনে আর কোন সর্বনাশ অপেক্ষা করে আছে, সেটি হয়তো কারও আন্দাজের মধ্যেও নেই!