শ্লেষ্মা ও বাতজ রোগ বৃদ্ধিতে কাজকর্মে ব্যাঘাত। গৃহাদি নির্মাণ বা সংস্কারে শত্রুর বাধা। ধর্মে মতি। ... বিশদ
ডাক্তারি পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে এবার ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী ছিল। ৪ জুন পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, ৬৭জন পরীক্ষার্থীর প্রত্যেকে মোট ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০-ই পেয়েছেন। অভিযোগের কেন্দ্রস্থল বিহার। পরে দেখা যায় নিটের প্রশ্ন ফাঁস সহ বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আরও কয়েকটি রাজ্যে। এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী। প্রসঙ্গত বলা যায়, দুর্নীতিমুক্ত ভারতের স্বপ্ন যাঁরা দেখান তাঁদের জমানাতেই দুর্নীতির নবতম সংযোজন ঘটল দুটি সর্বভারতীয় পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে। অন্যদিকে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর যোগ্যতা অর্জন, পিএইচডি গবেষণায় ইউজিসি’র বৃত্তি পেতে সর্বভারতীয় নেট পরীক্ষাতেও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় ১৮ জুন তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। এই পরীক্ষা দিয়েছেন ৯ লক্ষ পড়ুয়া। ঘটনায় পরিষ্কার দুটি পরীক্ষাতেই কোনও বৃহত্তর চক্র কাজ করেছে। এর মধ্যে প্রশাসনের কোনও কর্তাব্যক্তি, কোচিং সেন্টার, পড়ুয়া, মিডলম্যানদের মতো একাধিক অংশের যোগসূত্র থাকা স্বাভাবিক। ফলে প্রকৃত ‘নাটের গুরু’ কারা তা জানা যাবে এই আশা কম। কারণ সেটা খুঁজে পেলে শাসকপক্ষের নিজেদের গায়ে কালি লাগার সম্ভাবনা প্রবল। প্রশ্ন উঠেছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র কারা ছড়াল? যেহেতু দুটি পরীক্ষার দায়িত্বেই ছিল এনটিএ, তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে? প্রশ্ন আরও, নেট পরীক্ষায় ফের কেন ওএমআর শিট ফেরানো হল? কারা ফাঁকা ওএমআর শিট জমা দিয়েছে, কোন কোন রাজ্যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে—এমন নানা প্রশ্ন শিক্ষামহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রশ্নগুলির সদুত্তর খুঁজে বের করবেন প্রধানমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী, এমন ভরসা হচ্ছে না। অথবা এমন ঘটনা ভবিষ্যতে আর হবে না—‘অভাগা’ ছাত্রছাত্রীদের এমন নিশ্চয়তা তাঁরা দিতে পারবেন বলেও মনে হয় না। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ-ই অনিশ্চিত। শিক্ষা ব্যবস্থাটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিট ও নেট ইস্যুতে ব্যাকফুটে কেন্দ্রীয় সরকার।
আসলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েই দশ বছরের মোদি সরকার চরম উদাসীনতার নজির রেখে চলেছে। উচ্চশিক্ষায় কেলেঙ্কারি যদি একটা দিক হয়, তাহলে অন্যদিকে রয়েছে সিলেবাসে পরিকল্পিতভাবে গেরুয়াকরণের নির্লজ্জ প্রচেষ্টা। এবারে কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে ব্যাট করতে নেমেছে আরেক কেন্দ্রীয় সংস্থা এনসিইআরটি। যে নেট পরীক্ষা বাতিল নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল, সেই পরীক্ষাতেই নাটক সম্পর্কিত প্রশ্ন নিয়েও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কারণ দেশের এই প্রজন্মকে প্রশ্ন করা হয়েছে, অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার তারিখ কত? রামায়ণে শ্লোকে হনুমানের বর্ণনা, মহাভারতে মুণ্ডচ্ছেদ হওয়ার পরেও বেঁচে থাকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। কুরুক্ষেত্রে কোন যোদ্ধার মাথা কাটা হয়েছিল, কিন্তু তিনি যুদ্ধ দেখার জন্য শেষ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন? নেট পরীক্ষার্থীদের এমন প্রশ্নও করা হয়েছে। এসব দেখে বোঝা যায়, এনডিএ জমানায় আমাদের দেশের ছাত্রছাত্রীরা কতটা ‘অভাগা’!