বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
বারলার কথায়, এটা নাকি স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। ১০০ বছরের পুরনো এই দাবি। অথচ স্বাধীন ভারতে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবিতে কোনও আন্দোলন বা সরকারের কাছে কোনও স্মারকলিপি জমা পড়েছে বলে প্রবীণরা মনে করতে পারছেন না। সঙ্গতভাবেই তৃণমূলের এক সাংসদ পাল্টা বলেছেন, এসবই বারলার মস্তিষ্কপ্রসূত। আগে কোনওদিন এমন দাবির কথা শোনা যায়নি। মন্ত্রী হওয়ার আগে বারলা যখন প্রথম এই দাবিটি করেন তখনই রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব এটা বারলার ব্যক্তিগত মতামত বলে জানিয়ে দেন। মন্ত্রীর চেয়ারে বসে তিনি একই কথা বলায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, মন্ত্রী হয়ে এমন দাবি করলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাতে হবে। কারণ বিজেপি রাজ্যভাগের বিরুদ্ধে। এখানেই ঘিরে রয়েছে যাবতীয় প্রশ্ন ও সংশয়। বারলা যে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি করেছেন, তা কি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অজানা? অবশ্যই নয়। তার পরেও তাঁকে মন্ত্রী করার অর্থ হল, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার পর হয়তো অন্য কোনও ‘খেলা’ মাথায় আছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। তাহলে কি ভোটে তৃণমূলের কাছে গোহারা হয়ে বাংলার সরকারকে চাপে ফেলার জন্যই এমন প্রচেষ্টা? বঙ্গভঙ্গের মতো এমন অন্যায্য দাবিকে সামনে রেখে বাংলাকে অশান্ত করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর কোনও উদ্দেশ্য এর পিছনে কাজ করছে কি না তাও লাখ টাকার প্রশ্ন। তাই রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, বারলার দাবি যে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব মানতে নারাজ তা তিনি নিজেও ভালোই জানেন। তবু মন্ত্রীর চেয়ারে বসে ফের আরও একবার ওই একই দাবি তোলায় এবং তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানানোয় একটি প্রশ্ন উঠে আসছে। তা হল, তবে কি দলের একটি শক্তিশালী অংশের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে এর পিছনে? ভবিষ্যৎ ভবিষ্যতের কথা বলবে। কিন্তু সদ্য হওয়া এক মন্ত্রীর মুখে পৃথক রাজ্যের কথা শুনে মোদি-শাহের চুপ থাকাটা অন্য কৌশলেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর পিছনে পশ্চিমবঙ্গকে টুকরো করার মতো হীন প্রচেষ্টা যদি না থাকে তাহলে সংকীর্ণ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রীর উচিত, তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যকে সংযত করা।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সবসময়েই বিভাজন, জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রত্যাখ্যান করে। তাই বারলার এই মন্তব্যের পিছনে পরিকল্পনা, কৌশল যদি কিছু থেকে থাকে তাহলেও একটা বিষয়ে নিশ্চিত, বাংলার মানুষই বাংলা ভাগের যে কোনও চেষ্টা বা চক্রান্ত রুখে দেবেই।