বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আঘাত নেমে এসেছে। এটাই মোদি জমানায় আমজনতার ললাট লিখন। দুর্ভোগ অব্যাহত। তার মধ্যে রবিবার ফের দাম বৃদ্ধির কারণে উদ্বেগ আরও বাড়ল। পেট্রল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি কোভিডক্লিষ্ট অর্থনীতির সেরে ওঠার পথে অন্তরায়। এটা জেনেও হয়তো জ্বালানি তেলকে জিএসটির আওতায় এনে রাজস্ব হারানোর পথে হাঁটতে চাইছে না কোনও সরকারই। এতদিনে এটা স্পষ্ট। শুধুমাত্র ভোটের সময় সরকারের জনদরদি ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করে কেন্দ্র। তাই বেছে বেছে ঠিক ভোটের সময়েই জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধির বিষয়টি থমকে থাকে। ভোটপর্ব মিটলেই ফের শুরু হয় মানুষকে দুর্ভোগে ফেলার খেলা। কয়েক মাস আগে বিহার এবং সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গসহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ভোটের আগে পরে এই ট্রেন্ডই দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে শাসক ও সরকার বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক তরজা হলেও আম জনতার কোনও সুরাহা হচ্ছে না। মানুষের মনে জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। তেলের লাগামছাড়া দামের কারণে অনেক বাস ট্যাক্সির মালিক রাস্তায় গাড়ি নামাতেই অনিচ্ছুক। তাই সবকিছু স্বাভাবিক হলে ভাড়াবৃদ্ধির আশঙ্কাটি থেকেই যাচ্ছে। তেলের দামের ধাক্কা এসে লাগছে গোটা পরিবহণ ব্যবস্থার উপর। তবু অদ্ভুতভাবে নিশ্চুপ সরকার। দুর্ভোগ বাড়ছে জেনেও সরকারের এমন অমানবিক আচরণ অতীতে এতটা দেখা যায়নি।
জ্বালানির চড়া দর জিনিসপত্রের দামে আগুন ধরালেও অর্থনীতিবিদদের সতর্কতা মেনে উৎপাদন শুল্ক কমানোর কথা ভাবেইনি কেন্দ্র। বরং দায়টা তারা রাজ্যের ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছে। কখনও-বা তেল রপ্তানিকারী সংস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করেও দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে সরকার। অর্থনীতি-রাজনীতি-সমাজনীতি প্রায় সবক্ষেত্রে বেনিয়মই মোদি জমানায় নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন হল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি তাঁর অতীত ভুলে গেলেন? মনমোহন জমানায় পেট্রলের দাম ৮০ টাকার দিকে পা বাড়াতেই তিনিই তুলোধোনা করেছিলেন কেন্দ্রকে। তিনি তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী? এখন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে। তাহলে এখন কেন নির্বাক? কেন আশ্বস্ত করতে পারছেন না দেশবাসীকে? কেন উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন না তিনি? কেন কর কমানোর দায় রাজ্যগুলির উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন? কথায় বলে, আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শেখাও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত কথাটি মানেন না। না-হলে মানুষের এই বিপৎকালে তাঁদের স্বার্থরক্ষার কথা ভেবে উৎপাদন শুল্ক কমানোর পথে হাঁটতেন। এতটা নির্দয় হতে পারতেন না ভারতেশ্বর।