বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
(কোলাডো ২, বিদ্যাসাগর ২, পিন্টু, বইথাং)
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জামশেদপুর এফসি’কে হেলায় হারিয়ে কার্যত ডুরান্ড কাপের শেষ চারে উঠে গেল কোয়েস ইস্ট বেঙ্গল। লাল-হলুদের ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট। গ্রুপ থেকে একটি টিমই সেমি-ফাইনালে খেলবে। যদিও বেঙ্গালুরু এফসি’র দুটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। এরপর ১৪ আগস্ট ইস্ট বেঙ্গল গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলবে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে।
যা পরিস্থিতি, তাতে নিজেদের গ্রুপে বড় বাধা পাওয়া প্রত্যাশিত নয় আলেজান্দ্রোর দলের। আইএসএলের টিমগুলি রিজার্ভ টিম নিয়ে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল কোচের দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার সাহস দেখানোরই কথা। যেমন মঙ্গলবার নিজেদের মাঠে জামশেদপুর এফসি’র বিরুদ্ধে সাত মিনিটের মধ্যে দু’গোল করে ফেলে ইস্ট বেঙ্গল। এরপর কোনওভাবেই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি জামশেদপুরের জুনিয়র ছেলেরা। তাদের ফুটবলারদের গড় বয়স ১৮। একজন অনূর্ধ্ব ১৬ ফুটবলার রয়েছে। তবে জামশেদপুরের কোচ এই হার মেনে নিয়েই বললেন, ‘আমরা একটা বেড়ে ওঠার পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে এগচ্ছি। ডুরান্ড কাপ আমার ফুটবলারদের কাছে এক্সপোজার টুর্নামেন্ট। এই দল থেকেই আইএসএলে জামশেদপুরের সিনিয়র দলে কয়েকজনকে স্পট করা হবে।’
কোচ কুন্দন চন্দ্র’র প্রশিক্ষণে জামশেপুর টিমের প্রথম একাদশে টাটা ফুটবল আকাদেমির পাঁচজন ফুটবলার খেললেন। এদের মধ্যে একজনেরও খেলা চোখে পড়ল না। যে আকাদেমি অতীতে একের পর এক ফুটবলার উপহার দিয়েছে ভারতীয় ফুটবলকে। তবে প্রশ্ন ওঠে, টিএফএ’র মান কি পড়তির দিকে?
মঙ্গলবার ইস্ট বেঙ্গল কোচ প্রথম একাদশে একাধিক পরিবর্তন করেন। অন্তত জনা সাতেক। ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে কোলাডো জামশেদপুর গোলরক্ষক অমৃত গোপের হাতে শট মারেন। দলে ভালো মানের পজিটিভ স্ট্রাইকার না থাকায় লাল-হলুদ কোচ গোলের জন্য উইং অ্যাটাক ও থ্রু-পাসের উপর জোর দিচ্ছেন। স্প্যানিশ ফুটবলার জেমি স্যান্টোস কোলাডোই আপাতত আলেজান্দ্রোর তুরুপের তাস। ৫ মিনিটে জামশেদপুরের ডিফেন্ডারদের ভুল অফসাইড ট্র্যাপের সুযোগ নিয়ে কোলাডো গতি বাড়িয়ে বক্সে ঢুকতে গেলে গোলরক্ষক বিশ্রি ফাউল করেন। পরের মিনিটেই স্পটকিক থেকে গোল করেন কোলাডো (১-০)। ৭ মিনিটে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের পায়ে লেগে ছিটকে আসা বল ধরে সুযোগ সন্ধানী কোলাডো প্রথম পোস্ট দিয়ে প্লেসিং করে জালে জড়িয়ে দেন (২-০)। কয়েক মিনিট পরেই পিন্টু মাহাতোর সেন্টার থেকে ব্র্যান্ডন এরিয়াল বলে মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন।
জামশেদপুর ডিফেন্ডাররা অ্যাটাকিং ও ডিফেন্সিভ থার্ডে মনে রাখার মতো একবারও বলের দখল নিতে পারেননি। দু’গোল করার আগেই কোলাডো কাঁধে চোট পান। আলেজান্দ্রো ১২ মিনিটে তাঁর বদলে বইথাং হাওকিপকে নামান। কোলাডোর চোট প্রসঙ্গে স্প্যানিশ কোচ বললেন, ‘কাঁধে ভালো চোট পেয়েছে কোলাডো। তবে কাঁধের হাড় ভাঙেনি। পরের ম্যাচে খেলতে পারবে কিনা তা এখনই বলতে পারব না।’২১ মিনিটে ইস্ট বেঙ্গলের কমলপ্রীতের মাইনাস গোলরক্ষকের হাতে লেগে ছিটকে এলে বইথাংয়ের শট পোস্টে ধাক্কা খায়। ৩২ মিনিটে সেন্টার লাইনের একটু উপর থেকে ব্র্যান্ডনের থ্রু ধরে পিন্টু মাহাতা গতি বাড়িয়ে বক্সে ঢুকে দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে গোল করেন (৩-০)। এদিন বারবার জামশেদপুরের ডিফেন্ডাররা সমান্তরাল লাইনে চলে এলেন। যার ফলে দুই প্রান্তে অপারেট করার অনেক সুযোগ পেলেন পিন্টু, অভিষেক আম্বেকররা। ৪০ মিনিটে জামশেদপুর একমাত্র পজিটিভ চান্স পায়। ফরোয়ার্ড পুখরামবাম মনিসেনার শট একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে ব্লক করেন ইস্ট বেঙ্গল গোলরক্ষক মির্শাদ। ৭৫ মিনিটে ব্র্যান্ডনের মাইনাস ধরে বিদ্যাসাগর সিং ব্যবধান বাড়ান (৪-০)। চার মিনিট পরই সেই ব্র্যান্ডনের থ্রু ধরে বিদ্যাসাগরের শট গোলরক্ষকের গায়ে লেগে গোলে ঢোকে (৫-০)। ম্যাচের শেষ লগ্নে গোল করে বইথাং হাফডজন গোল সম্পন্ন করেন (৬-০)। এদিন ব্র্যান্ডন ছাড়াও মোহন বাগান থেকে আসা পিন্টু মাহাতো নজর কাড়লেন। আলেজান্দ্রো বললেন, ‘পিন্টু খুব ভালো ফুটবলের ছাত্র। কঠিন পরিশ্রম করে। মাথা পরিষ্কার। ওর প্রতিটি মুভমেন্ট গোলমুখী। আমার দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। তিনি দলের খেলায় খুশি। টিমগেম ভালো হয়েছে। এটাই ধরে রাখতে হবে।’ মোহন বাগান থেকে ইস্ট বেঙ্গলে এসে জঙ্গলমহলের ছেলে পিন্টু বেশ উপভোগ করছেন। বললেন, ‘বিদেশি কোচের প্রশিক্ষণে উইথ দ্য বল খেলায় উন্নতি করেছি। আলেজান্দ্রোর কোচিংয়ে সবকিছুই নতুন মনে হচ্ছে।’
ইস্ট বেঙ্গল: মির্শাদ কে, কমলপ্রীত সিং, আশির আখতার, মার্তি ক্রেসপি (বোরহা গোমেজ), অভিষেক আম্বেকর, কাসিম আইদারা, টনডোম্বা নাওরেম (প্রকাশ সরকার), পিন্টু মাহাতা, ব্র্যান্ডন, বিদ্যাসাগর সিং, কোলাডো (বইথাং)।