গৃহে শুভ অনুষ্ঠান উপলক্ষে কর্মব্যস্ততা। অর্থকরী আয়ের ক্ষেত্রটি অনুকূল। ব্যয়ের চাপ কিছুটা বাড়তে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ
সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধুপাড়ার বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের সুভদ্রা। জন্ম থেকেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। হাত বলতে কিছুই নেই। পায়ের কিছুটা অংশ রয়েছে। তা দিয়েই কাজকর্ম থেকে খাওয়াদাওয়া, জীবন নির্বাহের যাবতীয় কাজ সারেন। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হার মানতে নারাজ সুভদ্রা। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? অভাবের সংসারে মাঝেমধ্যেই উঁকি দেয় প্রশ্নটা।
সুভদ্রার পা বলতে যেটুকু রয়েছে, তা দিয়ে তিনি কোনওমতে দাঁড়াতে পারেন। একটু আধটু চলাফেরা করতে পারলেও বাইরে কোথাও যাওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমিয়ে রাখতে পারেনি তাঁকে। নাই বা থাকল হাত, কার্যত অকেজো পা দু’টোকে সম্বল করেই চেষ্টা করেছেন স্বনির্ভর হওয়ার।
পরিবারে মা ও দাদা। সংসারে যাতে বোঝা না হয়ে যান, সেজন্য সকাল হলেই ধারালো বটি নিয়ে বসেন। তারপর পা দিয়েই দিব্যি বটিতে সুপারির খোসা ছাড়ান সুভদ্রা। হাজার সুপারির খোসা ছাড়িয়ে দিতে পারলে পারিশ্রমিক মেলে ৫০ টাকা। এতেই হাসি ফোটে সুভদ্রার মুখে। পা দিয়েই পুজো দেওয়া, খাবার খাওয়া। সংসারের অন্যান্য কাজও নিজের কাঁধে নিয়েছেন। ঘর ঝাড় দেওয়া থেকে বাসন মাজা কষ্ট হলেও সবই করেন পা দিয়ে।
সুভদ্রা রাজ্য সরকারের দেওয়া ‘মানবিক’ পেনশন পান হাজার টাকা। কিন্তু তা দিয়ে কতটুকুইবা সাশ্রয় হয়। মনে কোণে আশা, অন্তত একটা ছোটখাট দোকানও যদি করতে পারতেন! সুভদ্রার কথায়, লড়াই করে বেঁচে থাকার নামই জীবন। তিনি পণ করেছেন, হার মানবেন না। তাই যত কষ্টই হোক না কেন, লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর আক্ষেপ, ভাতা ছাড়া আর কোনও সরকারি সহায়তা পান না। আবেদন করলেও মেলেনি। কিছু একটা ব্যবস্থা হলে বেঁচে থাকার লড়াইটা একটু সহজ হয়ে যেত।
অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজেশ মণ্ডল বলেন, বিষয়টি এভাবে জানা ছিল না। শীঘ্রই প্রশাসনের নজরে আনা হবে। পঞ্চায়েতের তরফেও কীভাবে ওই মহিলার পাশে দাঁড়ানো যায়, দেখছি।