যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
এছাড়াও দার্জিলিং চৌরাস্তায় রামকৃষ্ণ বেদান্ত আশ্রম সহ আরও কয়েকটি পুজো হয়। কিন্তু, দার্জিলিং ও কার্শিয়াংয়ের শতবর্ষ পেরনো এই দু’টি পুজোতেই প্রাণের ছোঁয়া খুঁজে পান সকলে। একসময় পাহাড়ে বাঙালিদের সংস্কৃতির পীঠস্থান ছিল কার্শিয়াং। সেই সূত্রে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়। পাহাড়ে এসে বাংলার প্রথম রাজ্যপাল প্রয়াত হরেন্দ্রকুমার মুখোপাধ্যায় সংগঠনটি গড়েছিলেন। ১৯১৫ সালে এই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দুর্গাপুজো শুরু হয়। আজও হয়ে আসছে সেই পুজো। তবে কখনও তিনধারিয়ায়, কখনও কার্শিয়াং স্টেশনে পুজো হয়েছে। তিনধারিয়া থেকে বিসর্জনের সময়ে টয় ট্রেনে কার্শিয়াং স্টেশন পর্যন্ত প্রতিমা আনা হতো। তারপর ১৯৩০ সালে সংস্কৃতিচর্চার জন্য তৈরি হয় রাজ রাজেশ্বরী হল। এরপর থেকে এই হলঘরে পুজো করে আসছেন কার্শিয়াংয়ের বাঙালিরা। ২০১৭ সাল পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের সময়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাঙালিদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অহঙ্কার রাজ রাজেশ্বরী হলে। সেবছর কোনওরকমে পুজো করা হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর নতুন করে রাজ রাজেশ্বরী হল তৈরি করে দেয়। পঞ্চমীর সন্ধ্যায় প্রতিমা মণ্ডপে পৌঁছনোর পর থেকেই উৎসবের শুরু হয়েছে। অষ্টমী থেকে হবে খাওয়াদাওয়া। নবমীতে হাজার দেড়েক লোকের খিচুড়ি ভোগের আয়োজন করা হয়েছে। দশমীতে এখানে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মহিলারা। তারপর দেবীর বিসর্জন শেষে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন হয় হলঘরে।
এদিকে, দার্জিলিংয়ের নৃপেন্দ্র নারায়ণ বাঙালি হিন্দু হল ১৮৯০ সালে তৈরি হয়। এটি কোচবিহারের মহারাজার সম্পত্তি ছিল। বাঙালিদের সংস্কৃতি চর্চার জন্য দার্জিলিং পুরসভা ওই সম্পত্তি হস্তান্তর করেছিল বলে জানান বর্তমান সম্পাদক ডাঃ প্রতাপাদিত্য গুহ। এখানে পুজো শুরু হয় ১৯১৪ সালে। এখানে স্থায়ী কালীমন্দির রয়েছে। মন্দিরের পুরোহিতই দুর্গাপুজো করেন।
ডাঃ প্রতাপাদিত্য গুহ বলেন, সপ্তমী থেকে নবমী তিনদিনে মোট ২০০ কুইন্টাল চাল-ডালের ভোগ রান্না করা হয় এখানে। সদস্যদের সঙ্গে পাহড়ের সব ভাষাভাষীর মানুষ, পর্যটকরা তিনদিন এখানে খাওয়াদাওয়া করেন। সঙ্গে প্যাকেটে করে ভোগ দিয়ে দেওয়া হয়। আর প্রতিদিন সন্ধ্যায় নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নবমীতে সদস্যরা নাটক মঞ্চস্থ করেন। বাঙালির পুজো হলেও পাহাড়ের সব ধর্ম বর্ণের মানুষ পুজোর খরচ জোগাতে সাধ্যমতো অংশগ্রহণ করেন।