নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মেদিনীপুর সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দির নামে জামিনের আবেদন জমা পড়েছে। অথচ সেই বন্দি বলছেন, তিনি কোনও জামিনের আবেদন জানাননি। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এবার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মেদিনীপুর সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন জাহেদ মহম্মদ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর নামে হাইকোর্টে একটি জামিনের আবেদন জমা পড়ে। সেই জামিনের আবেদনের সপক্ষে একটি হলফনামাও জমা পড়েছিল। তাতে শেখ জউদুল নামে এক ব্যক্তির স্বাক্ষর ছিল। এখানেই শেষ নয়, আবেদনের সপক্ষে সংশোধনাগার থেকে ওকালতনামাও জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গোটা বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় খোদ জামিনের আবেদনকারীর বক্তব্য জানতে চেয়েছিল বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে জাহেদ মহম্মদ ও মেদিনীপুর সংশোধনাগারের কন্ট্রোলারের তরফে যে উত্তর জমা পড়ে, তাতে জাহেদ মহম্মদ নিজেই জানান, তিনি কোনও জামিনের আবেদন জানাননি। এরপরই জামিনের সঙ্গে সংযুক্ত হলফনামায় স্বাক্ষরকারী শেখ জউদুল ও বিচারাধীন বন্দি জাহেদ মহম্মদের কন্যাকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলার শুনানিতে জামিনের আবেদনের সপক্ষে জমা পড়া হলফনামায় স্বাক্ষরকারী শেখ জউদুল গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেন। জাহেদ মহম্মদের কন্যাও জানিয়ে দেন, তাঁদের তরফে কোনও জামিনের আবেদন জানানো হয়নি। বিষয়টি শোনার পরই গোটা ঘটনায় সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। পর্যবেক্ষণে আদালত জানিয়েছে, এর পিছনে কোনও চক্র থাকতে পারে। তাই সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া হচ্ছে। এডিজি সিআইডিকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে পূজাবকাশের পর এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। পাশাপাশি আদালত জানিয়েছে, আবেদনের সপক্ষে সংশোধনাগার থেকে যে ওকালতনামা পাঠানো হয়েছে, তা কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাও রিপোর্টে উল্লেখ করতে নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। রেজিস্ট্রার জেনারেলকে অবিলম্বে সিআইডির কাছে নির্দেশ নামার কপি পাঠাতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। ১১ নভেম্বর ফের মামলার শুনানি।