ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
আয়কর হানা মূলত দু’রকমের হয়। একটি সার্চ, অন্যটি সার্ভে। কোনও একটি সংস্থা বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে বেআইনি আয়ের হদিশ পেলে, আয়কর কর্তারা ওই ব্যক্তি বা সংস্থার বিভিন্ন ঠিকানায় একই সময়ে একযোগে হানা দেন। একে বলে সার্চ। সার্ভের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অফিস টাইমে অফিসে হানা দেওয়া হয়। সার্ভের থেকে সার্চ আরও বড় আকারে হয় এবং তাতে পুলিসি নিরাপত্তাও জোরদার থাকে। আয়কর দপ্তরের সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সেপ্টেম্বরের গোড়ায় শহরে আসার পর থেকে বিগত দু’মাসে একটি মাত্র সার্চ হয়েছে। সার্ভে হয়নি একটিও। পুজো বা উৎসবের কারণেই কি সেই কাজে ঢিলেমি পড়েছে? দপ্তরের কর্তারা বলছেন, আয়কর তল্লাশি এমন একটি কাজ, যেখানে ছুটি থাকা বা না থাকা কোনও বিষয় নয়। অর্থমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির কারণেই দপ্তর আপাতত তল্লাশি নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে, এমনটাই মনে করছেন তাঁরা।
কী এমন বলেছিলেন নির্মলা সীতারামন? সেপ্টেম্বরের গোড়ায় কলকাতায় এসে আয়কর কর্তাদের তিনি বলেন, ছোট শিল্পকে অযথা উত্ত্যক্ত করা বন্ধ করুন। ভুয়ো কোম্পানিকে বাগে আনার জন্য যে নোটিস প্রযোজ্য, সেই নোটিস ছোট শিল্প সংস্থাকে পাঠিয়ে কেন অপদস্থ করছেন? করদাতাদের হেনস্তা করবেন না। মনে রাখবেন, গোটা আয়কর দপ্তরের বদনাম হচ্ছে শুধু গুটিকয়েক অফিসারের জন্য। এটা চলতে পারে না। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, তাঁর কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। তাঁর দাবি, অফিসাররা অভিযোগ করেন, লিখিত নির্দেশ না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। নির্মলাদেবী তারই জবাবে বলেন, এই অজুহাতে করদাতাদের হেনস্তা করা যাবে না। যদি কাগুজে নির্দেশিকার কথাই বলেন, তাহলে তা চাইতে ‘বস’দের উপর চাপ তৈরি করুন। খানিকটা রসিকতা করেই নাকি তিনি বলেন, বসদের হেনস্তা করুন, করদাতাদের নয়। এরপর অবশ্য মন্ত্রীর সাফাই, এইসব কথা বলে আমি জনপ্রিয় অর্থমন্ত্রী হতে চাই না। তবু বলছি, যদি কোনও অফিসারের কোনও সমস্যা হয়, তাহলে আমাকে সরাসরি জানান।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর এই ভোকাল টনিকই নাকি দপ্তরে কাজ করেছে, বলছেন কর্তাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, বছরে অন্তত ৫০টি সার্চ হয় রাজ্যে। সার্ভের সংখ্যা অসংখ্য। ফলে গত দু’মাসে বেশ কয়েকটি সার্চ ও সার্ভে হওয়ার কথা। কিন্তু সেসব কিছুই হয়নি। সার্ভের ক্ষেত্রে দপ্তরের তুলনামূলক নতুন অফিসারদের পাঠানো হয়। সেখানে তাঁদের কোনও ভুলত্রুটির কারণে পাছে ফাঁপরে পড়ে আয়কর দপ্তর, সেই কারণে সার্ভে একেবারে বন্ধ, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। এদিকে, আর্থিক বছরের প্রথম ছ’মাস কেটে গিয়েছে। কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে খানাতল্লাশি চালাতেই হবে। তাই সেই বিষয়ে কেন্দ্রের মনোভাবের দিকেই আপাতত তাকিয়ে আছেন তাঁরা।