নিজস্ব প্রতিনিধি: একদিকে করোনার জেরে দীর্ঘ লকডাউন। অন্যদিকে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় উমপুন। এই দুইয়ের জেরে উত্তর ২৪ পরগনায় মাছ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে মাথায় হাত পড়েছে মৎস্য চাষিদের। তাঁরা জানিয়েছেন, একাধিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। একে তো সময়ে ডিমপোনা উৎপাদন করা যায়নি। ফলে মাছের চারার জোগানে ঘাটতি দেখা দেবে। দাম বাড়বে মাছের। অন্যদিকে উমপুনের জেরে পুকুর নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কোথাও পুকুর ভেসে মাছ বেরিয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার পুকুরে গাছপালা ভেঙে পড়ে পাতা পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে জল। পুকুরে তৈরি হয়েছে বিষাক্ত গ্যাস। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় সেইসব পুকুরে মাছ মরে ভেসে উঠছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জেলায় উমপুনের কারণে প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জলাশয়ের মাছ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মিষ্টি জলের মাছের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন। নোনা জলের মাছ নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন। উত্তর ২৪ পরগনায় কমবেশি ৫ লক্ষ মানুষ মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত। এই বিপর্যয়ে তাঁরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। মাছ চাষিরা জানিয়েছেন, সাধারণভাবে চৈত্র-বৈশাখ মাসে ডিমপোনা ফোটানো হয়। কিন্তু এবার লকডাউনের কারণে বাড়ির বাইরে বেরতে পারেননি তাঁরা। তাছাড়া ডিমপোনা ফোটানোর কাজের জন্য শ্রমিক পাওয়া যায়নি। তার উপর পুকুর যেভাবে নষ্ট হয়েছে, তাতে নতুন করে তা তৈরি করতে হবে। পুরনো জল বের করে দিয়ে আবার নতুন জল ঢোকাতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে মাছচাষিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, তার রূপরেখা তৈরি করছে জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র। ওই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মৎস্য বিভাগের বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ অনিন্দ্য নায়েক বলেছেন, পুকুরের জল শোধন করতে বিঘা প্রতি ৫ কেজি চুন ও সাড়ে তিন কেজি ফটকিরি জলে গুলে প্রয়োগ করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অন্তত এক সপ্তাহ পর মাছ ছাড়তে হবে।