আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
এব্যাপারে আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, গৃহ নির্মাণের জন্য কাউকে টাকা না দেওয়ার কথা আমরা রবীন্দ্রভবনে উপভোক্তাদের নিয়ে বৈঠক করেই বলে দিয়েছি। তারপরও বিজ্ঞপ্তি জারি করে উপভোক্তাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে গৃহ নির্মাণের জন্য কাউকে টাকা দিতে হয়েছে এমন অভিযোগ পাইনি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে গৃহহীনদের জন্য হাউস ফল অল প্রকল্প আনা হয়েছে। মোট ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই গৃহ নির্মাণ হবে। এক্ষেত্রে অবশ্য উপভোক্তাদের নিজস্ব জমি থাকতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকাও জমা রাখতে হবে। বাকি কেন্দ্র সরকারের তরফে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, রাজ্য সরকারের তরফে ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এছাড়াও পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকার ও পুরসভার তরফে ১৮ হাজার ৪০০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
তাছাড়া পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, গত ২০১৭-’১৮ আর্থিক বর্ষে (দ্বিতীয় তালিকায়) অন্তর্ভুক্ত হওয়া অসম্পূর্ণ গৃহগুলি অবিলম্বে উপভোক্তাদের নিজেদের দায়িত্বে নির্মাণ করতে হবে। পুরসভার দাবি, উপভোক্তাদের নিজেদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে। তারা নিজেদের মতো করে খরচ করবেন। পুরসভার তরফে কোনও ঠিকাদার দেওয়া হবে না। অসম্পূর্ণ গৃহ নির্মাণ না হলে অন্য উপভোক্তাদের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে দেরি হচ্ছে। ফলে তাঁরা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত ২০১৫-’১৬ আর্থিক বর্ষ থেকে আরামবাগ শহরে হাউস ফল অল প্রকল্পে গৃহ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ওই বছরে পুরসভায় ৮৩৩টি গৃহ নির্মাণ হয়। এছাড়া দ্বিতীয় তালিকায় ৮৩৩টি গৃহ নির্মাণ হওয়ার কথা। প্রথমদিকে পুরসভা ৪৬৫টি গৃহ নির্মাণের বরাদ্দ ছাড়লেও শুরু হয়েছে ৩৬৪টি। বাকিগুলি শুরু করতে তদ্বির করা হচ্ছে। আগামী ২০২২ সাল পর্যন্ত পুরসভা এলাকায় প্রায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষের হাউস ফল অল প্রকল্পে গৃহ নির্মাণ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বলে চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।
তবে আরামবাগে এখনও পর্যন্ত যা গৃহ নির্মাণ হয়েছে সেক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। স্থানীয় বাসিন্দারাও অনেক সময় চাপে পড়ে উৎকোচ দিতে বাধ্য হয়েছেন। পুরসভার কাউন্সিলারদের একাংশের বিরুদ্ধেই এমন অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির অভিযোগ, অনেক সময় টাকা না দিতে পারলে গৃহ নির্মাণের বরাদ্দ আটকে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের নজিরও রয়েছে। যদিও পুরসভার দাবি, এই ধরনের কোনও অভিযোগ আসেনি।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই কাটমানি ইস্যুতে আরামবাগ পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নওপাড়ায় গণ্ডগোল হয়। তাছাড়া অন্য এলাকাতেও বাসিন্দাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে।
বিজেপির আরামবাগ পৌর মণ্ডলের যুব সভাপতি শৌভিক কুণ্ডু বলেন, শহরে হাউস ফল অল প্রকল্পে পুরসভার কাউন্সিলারদের পরিচিত লোকেরা ঠিকাদার হিসেবে গৃহ নির্মাণের কাজ করেছেন। তার জন্য বাসিন্দাদের অতিরিক্ত টাকাও দিতে হয়েছে। তাছাড়া উপভোক্তাদের দেওয়া ২৫ হাজার টাকাও ফেরত পান না। এখন পুরসভা এব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও কোনও লাভ নেই। মানুষ সব জানেন। আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করছি।