শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
জঙ্গিপুরের নয়ানমুকুন্দপুর গ্রামের জিয়ারুল শেখ পাঁচ বছর পর ১৮০ দিনের ছুটি নিয়ে গ্রামে ফিরেছেন। তিনি বলেন, আমার কাছে পাসপোর্ট এবং ভোটার কার্ড রয়েছে। তারপরেও বলছে নাকি আধার কার্ড আর জমির দলিল থাকতে হবে। বিদেশে থাকার জন্য সেই সময় আধার কার্ড করতে পারিনি। এবার করতেই হবে। ভাগ্যিস এই সময় বাড়ি ফিরেছিলাম। নাহলে যে কি হতো কে জানে। সৌদিতে যাঁরা আছেন তাঁরা আমাকে প্রতিদিনই ফোন করছেন। এনআরসির জন্য কী কী করতে হবে তা জানতে চাইছেন। অনেকে পাঁচ-সাত বছর ধরে টানা আরবে রয়েছেন। তাঁদের ডিজিটাল রেশন কার্ড বা আধার কার্ড নেই। তাঁরা ছুটি নিয়ে দেশে ফিরতে চাইছেন।
জিয়ারুলের বন্ধু শেখ সাদ্দাম রিয়াধে একটি সংস্থায় থাকেন। তিনি কনফারেন্স কলে বলেন, খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমার ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই। জমির দলিলেও মনে হয় কিছু ভুল রয়েছে। কোম্পানিকে ছুটির জন্য বলেছি। ছুটি পাওয়া গেলেই দেশে ফিরবে। আমাদের সংস্থায় মুর্শিদাবাদ জেলার ১১ জন রয়েছেন। সবাই আতঙ্কিত। তবে, উত্তরপ্রদেশেরও অনেকে আছে। ওরা বলছে সে রাজ্যে নাকি ওইসব হবে না। আমাদের রাজ্যে এসব করে কী লাভ বলুন তো।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে এনআরসি নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সব কাজ ছেড়ে ডোমকল, জলঙ্গি, বড়ঞ্চা সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা সকাল হলেই সরকারি অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌদি আরব ছাড়াও এই জেলার বহু যুবক কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। কান্দি মহকুমার সবচেয়ে বেশি যুবক বাইরে রয়েছেন। এখানকার হিজোল গ্রামের অধিকাংশ যুবকই বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। তবে সৌদি আরবেই আয় সবচেয়ে বেশি হয়। সেকারণে বহু যুবক সেখানে রয়েছেন। কেউ গাড়ি চালানো, কেউ যন্ত্রাংশ চালানো আবার কেউ অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সেদেশে এই জেলার যুবকরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকলেও একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। এখন তাঁরা সৌদি আরবে বসেই খোঁজ নিচ্ছেন এনআরসি নিয়ে। অনেকে ছুটির অপেক্ষায় রয়েছেন। কিছুদিনের জন্য কোম্পানি ছুটি দিলেই তাঁরা এসে নথি ঠিক করে যাবে। তা না হলে নিজ দেশে পরবাসী হওয়ার আতঙ্ক গ্রাস করেছে।