শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্তকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অন্যদিকে ৪৯৮এ ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড, তিন হাজার টাকা জরিমানা এবং তা অনাদায়ে আরও এক বছর অতিরিক্ত কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। দু’টি সাজাই একসঙ্গে চলবে। এই মামলায় মোট ১৬জন সাক্ষ্য দেন। কিন্তু মামলার অপর দুই অভিযুক্ত গৃহবধূর ভাশুর পবন দাস ও শ্বশুর ভরতেশ্বর দাসকে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করে দিয়েছেন বিচারক। আর এক অভিযুক্ত গৃহবধূর শাশুড়ি বেহুলারানি দাস বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীনই মারা গিয়েছেন।
মামলার সরকারি আইনজীবী গৌতম সামন্ত বলেন, ১৯৯২ সালে মারিশদা থানার নাচিন্দা গ্রামের সঞ্চিতার সঙ্গে বাহারছনবেড়িয়া গ্রামের শচীন্দ্রনাথের বিয়ে হয়। শচীন্দ্রনাথ চাষবাস করে এবং মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে তাকে যথেষ্ট যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের কয়েকমাস পরই আরও পণ দিতে হবে বলে দাবি করে শচীন্দ্রনাথ সহ তার পরিবারের লোকজন। আরও পণের দাবি সহ নানা অজুহাতে সঞ্চিতার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলতে থাকে। এরই মধ্যে সঞ্চিতা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু কন্যাসন্তান হওয়ার পর অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। পরবর্তীকালে শচীন্দ্রনাথ শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের কাছে একটি জলসেচের মেশিন দেওয়ার দাবি জানায়। হয় তাকে জলসেচের মেশিন দিতে হবে, নয়তো ৭০০০ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করে সে। বাপেরবাড়ি কাছ থেকে সেই টাকা আনার জন্য সে সঞ্চিতার উপর চাপ দিতে থাকে। কিন্তু বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনতে রাজি হননি সঞ্চিতা। এরপর থেকে সঞ্চিতার উপর শারীরিক অত্যাচার শুরু হয়। এভাবে দিনের পর দিন তার উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে।
১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল শ্বশুরবাড়ির কড়িকাঠে দড়ির ফাঁসে সঞ্চিতার (২২) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। নিজের দেড় বছরের মেয়েকে রেখেই মারা যান সঞ্চিতা। ঘটনার পর ২৭ এপ্রিল সঞ্চিতার দাদা নাচিন্দা গ্রামের ভগীরথ মণ্ডল কাঁথি থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করে জানান, তাঁর বোনকে মারধর এবং শ্বাসরোধের পর দড়ির ফাঁসে ঝুলিয়ে দিয়েছে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিস বধূহত্যার মামলা রুজু করে এবং ঘটনার তদন্তে নামে। গ্রেপ্তার করা হয় শচীন্দ্রনাথ, তার মা, বাবা ও দাদাকে। তবে মামলা চলাকালীন সকলেই জামিনে মুক্ত ছিল। ভগীরথ বলেন, আমরা বোনকে খুনের ঘটনায় দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এতদিনে আমার বোনের আত্মা শান্তি পেল।