ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
এদিন সম্মেলনে যোগ দেওয়া অধ্যাপকরা একেকজন একেক রকম ব্যাখ্যা করেছেন এই ঘোষণার। কেউ বলছেন, নোশনাল বেনিফিট দেওয়ার অর্থ, ২০১৬ সাল থেকেই সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতনবৃদ্ধির হিসেব কষা হবে। কিন্তু তা হাতে পাওয়া যাবে না। এই বৃদ্ধি অনুযায়ী ২০২০ সালের জানুয়ারিতে যা বেতন দাঁড়াবে, সেটাই দেওয়া হবে শিক্ষক ও অধ্যাপকদের। আবার কেউ বলছেন, তা দেওয়া হবে না। বকেয়াও মিলবে না। সেই জন্যই ৩ শতাংশ বর্ধিত বেতন দেওয়া হচ্ছে। এই ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী এদিন নিজেই বলেন, সব কিছু একসঙ্গে করা যায় না। আমি অর্থ দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা না করে কিছু করি না। মুখে বলা এক জিনিস, আর হাতে সেই টাকা তুলে দেওয়া আরেক জিনিস। যেটুকু দিতে পারব, সেটাই বলব। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের আর্থিক অবস্থার কথাও ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন তিনি। অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে ডেকে তিনি বলেন, এখন সরকারের বার্ষিক আয় কত? তিনি উত্তর দেন, ৯০ হাজার কোটি টাকা। তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকা ধার শোধ করতেই চলে যায়। কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। সেই ভার চেপেছে। কিন্তু আমরা কর না বাড়িয়েই সংস্কার করে আয় বাড়িয়েছি। তবে এখানেই তো সব শেষ নয়। ধাপে ধাপে উন্নতি হতে থাকবে।
শুধু স্থায়ী শিক্ষকই নন, কলেজের অস্থায়ী শিক্ষক, যাঁদের এখন স্টেট এডেড কলেজ টিচার্স বলা হচ্ছে, তাঁদেরও বেতন বাড়ানো হচ্ছে। ইউজিসির যোগ্যতামান সহ এবং সেই যোগ্যতামান ছাড়া—দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে তাঁদের। যে যত টাকাই পান, সেই বেতন পাঁচ হাজার টাকা বেড়ে যাবে। অবসর পরবর্তী এককালীন অর্থ (গ্র্যাচুইটির মতো) তিন লাখ টাকা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার তা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের প্রায় ১৭ হাজার কলেজ শিক্ষক ও অধ্যাপক উপকৃত হবেন বলে জানা যাচ্ছে।
কিছু বিষয়ে ধন্দে থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষা দপ্তরকে এই ঘোষণার জন্য স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার। তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার মেম্বারশিপ এনরোলমেন্ট সেলের চেয়ারম্যান মণিশঙ্কর মণ্ডলও মুখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রীকে এর জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এদিনের অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনীতিতে নোবেল প্রাপ্তির জন্যই লোহিয়াকে এই সম্মান জ্ঞাপন। একটি আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং সংস্থার বিচারে এ দেশের রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকেও উত্তরীয় দিয়ে বরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ইঙ্গিতপূর্ণভাবে সমস্ত শিক্ষক এবং অধ্যাপকদের বলেন, আপনারা সবাই ভালো থাকুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ব্যাপারে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করবে না।