সামাজিক কল্যাণ কর্মে সাফল্য ও জনখ্যাতি। বাতজ সমস্যায় বিব্রত হতে পারেন। কাজ কারবারে শুভ। ... বিশদ
কথিত আছে, একসময় রাঢ়বঙ্গ জুড়ে মহামারি দেখা দিত। তাতে প্রচুর মানুষ মারা পড়তেন। সেসময় মৃতদেহ সৎকারের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হতো। আর সেই ভাগাড়ে শকুন ও শেয়ালের যাতায়াত থাকত। সেই থেকেই ওই দুই প্রাণীকে ভাগাড়ের প্রাণী ধরা হয়। পরিবারের কারও, বিশেষ করে শিশুদের উপর যাতে ওই দুই প্রাণীর ‘নজর’ না পড়ে, সেজন্য তাঁদের তুষ্ট করতে পুজোর প্রচলন হয়। ধীরে ধীরে পুরো রাঢ়বঙ্গে এই পুজো ছড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে এখনও জিতাষ্টমীর দিন শেয়াল ও শকুনের মূর্তি বসিয়ে পুজো করা হয়। বিষ্ণুপুর সহ বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এদিন শেয়াল- শকুনের পুজো হয়েছে।
এই পুজোর জন্য বাড়ির উঠোনে তুলসী মঞ্চের সামনে বটগাছের ডাল পোঁতা হয়। তার নীচে বটপাতার আসনে শেয়াল ও শকুনের ছোট ছোট মাটির মূর্তি বসানো হয়। ফুল দিয়ে সাজানো হয়। ছোলা, শসা সহ নানা শস্য দিয়ে পুজোর নৈবেদ্য সাজানো হয়। ধূপ ও প্রদীপ জ্বেলে সারারাত পুজো করা হয়। এই পুজো নিয়ে প্রচলিত কিছু গানও পরিবেশন করা হয়। পরদিন সকালে জলাশয়ে ওই মূর্তি ভাসানো হয়। সেখানে কচিকাঁচারা শসা ও মুড়ি খেয়ে বাড়ি ফেরে। মঙ্গলবার সকালে বিষ্ণুপুরের চকবাজার ও বাহাদুরগঞ্জে মৃৎশিল্পীদের থেকে শেয়াল ও শকুনের মূর্তি কিনতে ভিড় লক্ষ্য করা হয়। কাঁচা মাটির মূর্তিতে রং করে তা বিক্রির জন্য রাস্তার ধারে থরেথরে সাজানো হয়। মৃৎশিল্পীরা জানান, এসময় তাঁরা দুর্গাপ্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। তাই শেয়াল-শকুন মূলত বাড়ির মেয়েরাই তৈরি করেন। তা বিক্রি করে যে টাকা পান, তা দিয়ে পুজোর কেনাকাটা সারেন। পুজোর জন্য বাজারে প্রচুর বটপাতাও বিক্রি হয়েছে। বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল রক্ষিত বলেন, মহামারির কবল থেকে সন্তানদেরকে রক্ষায় জিতাষ্টমীর সন্ধ্যায় পুজো হয়।