সামাজিক কল্যাণ কর্মে সাফল্য ও জনখ্যাতি। বাতজ সমস্যায় বিব্রত হতে পারেন। কাজ কারবারে শুভ। ... বিশদ
কালী সিং বলেন, আমি ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাই হাঁটতেও কষ্ট হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গলা জলে দুই সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলাম। দুই সন্তানকে নিয়ে গলা জলে কয়েক কিলোমিটার হাঁটতে খুব কষ্ট হয়েছে। শ্বশুর, শাশুড়ি গ্রামের অন্য প্রান্তে আশ্রয় নিয়েছে। ত্রাণ শিবিরে খাবার পাচ্ছি। কিন্তু চিকিৎসকের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ডাক্তার চেক আপ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
এদিন জেলা পরিষদের নারী ও শিশু কল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ শান্তি টুডু বলেন, কালীকে কুর্নিশ জানাচ্ছি। ওর লড়াই মনে থাকব। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গলা অবধি জলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা খুব সহজ নয়। ওদের পাশে জেলা প্রশাসন সব সময় আছে। মাতৃ শক্তির চেয়ে বড় শক্তি আর কিছুতে নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেবরা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে বহু মানুষ। চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ডেবরা ব্লকের মলিহাঁটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বনমালীপুর সহ একাধিক গ্রামের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
কালী সিংয়ের স্বামী শিবু সিং গুজরাত রাজ্যে দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁদের দুই শিশু সন্তান রয়েছে। কালী ফের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই থাকেন। কিন্তু আচমকা বন্যা পরিস্থিতি যেন বদলে দিয়েছে জীবনের গতিপথ। গ্রামবাসীদের কথায়, এলাকায় প্রচুর পরিমাণে সাপের উপদ্রব রয়েছে। গলা জলে দুই সন্তানকে সাথে নিয়ে যাওয়া সহজ নয়। কালীদেবী অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। ওই ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা মালতী মাণ্ডি। তিনি বলেন, খুব সমস্যায় আছি। আমাকেও গলা অবধি জল পেরিয়ে ত্রাণ শিবিরে আসতে হয়েছে। পা ফুলে যাচ্ছে। খাবার পাচ্ছি বলে বেঁচে আছি। আদৌ ঘর বাড়ি আছে নাকি ভেসে গেছে তা বুঝতে পারছি না।
ত্রাণ শিবিরে আছেন আয়না মাণ্ডি। তিনি বলেন, খুব সমস্যায় পড়েছি। ত্রাণ ছাড়া বেঁচে থাকতে পারতাম না। পুজোর আগে বাড়ি ফিরতে পারব তো? এটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।