উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
ফৈজাবাদ বাসস্ট্যান্ডের থেকে কয়েক পা হাঁটলেই রাস্তার উপর সাদা রঙের বাড়িটির নাম রামভবন। এই বাড়িতেই ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ছিলেন গুমনামি বাবা। সঙ্গে এক মহিলা সরস্বতী দেবী। জানালেন গৃহস্বামী শক্তি সিং। বড় গেট খুলে ঢুকতেই একটা লন। আর সেখানেই ছোট ফুলের বাগানের মধ্যে নেতাজির মূর্তি। বাড়ির পিছনে আউটহাউস। মূল বাড়ির উজ্জ্বলতার সঙ্গে যেন মানানসই নয়। ভাঙাচোরা। প্লাস্টার উঠে গিয়েছে। এই আউটহাউসেই থাকতেন গুমনামি বাবা। যাঁর সম্পর্কে কেউ বলেছেন উনিই নেতাজি। আবার কোনও বইতে দাবি করা হয়েছে ইনি কে ডি উপাধ্যায়। নেতাজি সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিশনে উঠে এসেছে এসব নানাবিধ তথ্য, বিতর্ক, দাবি পালটা দাবি। বাড়িটির মধ্যে আপাতত অফিস চলছে। উপরে বড় করে লেখা সাইনবোর্ড, সুভাষ চন্দ্র বোস রাষ্ট্রীয় বিচার কেন্দ্র। এই কেন্দ্রেই অফিস। এই কেন্দ্রের কর্ণধার শক্তি সিং। যাঁর জীবনের একটাই লক্ষ্য। গুমনামি বাবাই নেতাজি কিনা সেটা প্রতিষ্ঠা করা।
অফিসে তিন যুবক বসে কাজ করছেন। তাঁরা বললেন, চিঠি ড্রাফট করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে চিঠি। তিনি যেন বিষয়টি দেখেন যে কেন গুমনামি বাবার মিউজিয়াম চালু হচ্ছে না। হাইকোর্টের অর্ডার সত্ত্বেও। ২০১৩ সালে শক্তি সিং মামলা করেছিলেন উত্তরপ্রদেশ হাইকোর্টে। গুমনামি বাবার সামগ্রী ফৈজাবাদের ট্রেজারিতে থেকে থেকে নষ্ট হয়েছে। ৯টি ট্রাঙ্কে ২৭৬০টি সামগ্রী। সেগুলি নিয়ে যেন মিউজিয়াম করা হয়। সেই আবেদন অনুযায়ী হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল মিউজিয়াম করার। উত্তরপ্রদেশ সরকার অযোধ্যায় রাম সংগ্রহালয়ে দুটি গ্যালারি পৃথকভাবে করে দেয়। ২৭৬০টি সামগ্রী। তার মধ্যে থেকে বাছাই করা হয় ৪২৮টি নথি ও ডকুমেণ্ট। সেগুলি রাখা হল অযোধ্যার ওই সংগ্রহশালায়। শক্তি সিং বললেন, তার পরই কিছু একটা রহস্য শুরু হল। কারণ সংগ্রহশালার দরজা আর খুলল না।
আপনার বয়স কত ছিল তখন যখন গুমনামি বাবা এসেছিলেন? শক্তি সিং বললেন, ২৫ বছর। আমি তখন আইন পড়ি ল কলেজে। উনি ঘর থেকে বেরোতেন না। প্রতিদিন প্রচুর কাগজ পড়তেন। আমার জন্য নিয়ম ছিল প্রতি মঙ্গলবার দেখা করবেন। বই পড়তেন অজস্র। তাঁর স্বভাব ছিল বইতে প্রচুর ফুটনোট দেওয়া। আপনি তো নেতাজির ভক্ত। নেতাজির যে চারিত্রিক শক্তি, তাঁর পক্ষে কি এভাবে উত্তরপ্রদেশের একটি আধা মফস্বল জনপদে এসে গোপনে সন্ন্যাসী সেজে কাটানো মানানসই? এই প্রশ্নের উত্তরে শক্তি সিং বললেন, নেতাজি ঠিক সেটাই করতে পারতেন, যা দুনিয়ার আর কেউ করতে এবং ভাবতেই পারবে না। আপনাকে যদি সবরকম দিনযাপনের ব্যবস্থা সহ একটা ঘরের মধ্যে রেখে বলা হয় বেরেতে পারবেন না। পারবেন আপনি? কেউ পারবে না। নেতাজিই পারতেন। নিজের চোখে দেখা এবং দিনের পর দিন প্রতি মঙ্গলবার কথা বলে শক্তি সিং এর নিশ্চিত বিশ্বাস গুমনামি বাবাই নেতাজি! আর তা নিয়েই বিতর্ক তুঙ্গে। আপাতত রহস্য একটাই। মিউজিয়াম খুলছে না কেন?