শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
আগামী মাসেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। এবং এমন একটা সময়ে ভোট হচ্ছে, যখন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিজেপির অনুকূলে নেই বলে মনে করা হচ্ছে। বেসামাল অর্থনীতি নিয়ে প্রতিদিনই বিশেষজ্ঞদের সমালোচনা শুনতে হচ্ছে মোদি সরকাকে। শিল্পে সঙ্কট, মুদ্রাস্ফীতির চোখরাঙানি, কর্মহীনতা নিয়েও প্রতিনিয়ত তোপ দাগছেন বিরোধীরা। ফলে মহারাষ্ট্রের ভোটে যে এই ইস্যুগুলি বিজেপিকে বেশ বেগ দেবে, তা মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। আর সেই কারণে ভোট ময়দানে নেমেই আস্তিন থেকে রামমন্দির নির্মাণ ও কাশ্মীর তাস বের করলেন মোদি। এমনটাই পর্যবেক্ষণ ভোট বিশেষজ্ঞদের।
এদিন নাসিকের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির সিদ্ধান্ত শুধু সরকারের নয়। এই সিদ্ধান্তের পিছনে জড়িয়ে রয়েছে দেশের ১৩০ কোটি নাগরিকের আবেগ। তাঁদের সেই আবেগকে সম্মান দিয়েছে সরকার। কাশ্মীর হয়েছে নতুন স্বর্গোদ্যান। যেখানে আমাদের আলিঙ্গনে বাঁধা পড়েছেন কাশ্মীরিরা।’ ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি নিয়ে সরকারের সাফল্যের সঙ্গেই মোদি ঠেস দিতে ছাড়েননি কংগ্রেসকেও। তিনি বলেছেন, ‘দশকের পর দশক বঞ্চিত ও অবহেলিত ছিলেন কাশ্মীরিরা। এখন তাঁরা নতুন ভোরের খোঁজ পেয়েছেন। স্বপ্ন পূরণের দিশা দেখতে পাচ্ছেন জম্মু ও কাশ্মীরের আপামর মানুষ।’ তবে ‘নয়া স্বর্গোদ্যান’-এ অশান্তির বাতাবরণ যে কাশ্মীরিদের স্বপ্ন পূরণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘কাশ্মীরকে অশান্ত করে রাখার একটা চেষ্টা চলছে সব মহল থেকেই। হিংসায় মদত দেওয়া হচ্ছে। তবে কাশ্মীরের মা, বোন ও ভাইয়েরা হিংসার দীর্ঘ ইতিহাসকে ছুঁড়ে ফেলতে এখন বদ্ধপরিকর। তাঁরা চাইছেন উন্নয়ন আর কর্মসংস্থান। সরকারও কাশ্মীরে সেটাই চায়।’
প্রধানমন্ত্রীর বলেন, ‘আমরা জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এখন বলতে দ্বিধা নেই, কাশ্মীরবাসীর সামগ্রিক বিকাশে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ শুরু করে দিয়েছি।’ ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির সিদ্ধান্তের সাফল্য শুধু এখানেই নয়। সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি, ও বিচ্ছন্নতাবাদের চক্রব্যুহ থেকে জম্মু ও কাশ্মীর বেরিয়ে আসবে বলেও আত্মবিশ্বাসী মোদি। সেই সঙ্গে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী বিঁধেছেন বিরোধীদের। মোদি বলেছেন, ‘কংগ্রেস নেতার বক্তব্যকে পাকিস্তান তাদের ভারত-বিরোধী চিঠিতে উল্লেখ করছে। কিন্তু শারদ পাওয়ারের মতো একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিক কী করে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন, তা বোধগম্য হচ্ছে না। আসলে ভোটের জন্য পাওয়ার পাকিস্তানের শাসকের মতো কথা বলেছেন।’ মোদির এই বক্তব্যকে খারিজ করতে সঙ্গে সঙ্গেই আসরে নামেন এনসিপি’র মুখপাত্র নবাব মালিক। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মুখে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ মানায় না। দেশের বিরোধিতা করে পাওয়ার কোনও কথা যদি বলে থাকেন, তবে প্রমাণ দিন প্রধানমন্ত্রী।’
ভোট ময়দানে গেরুয়া বাহিনীর বহু পুরানো ‘অ্যাজেন্ডা’ রামমন্দির নির্মাণ। গত সোমবারই সেই ‘অ্যাজন্ডা’য় খানিক টোকা দিয়েছিলেন বিজেপির শরিক দল শিবসেনা। দলের সুপ্রিমো উদ্ধব থ্যাকারে বলেছিলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে সরকার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ নিয়েও এমন সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করুক সরকার।’ অবিলম্বে রামমন্দির নির্মাণে আইন নিয়ে আসার ব্যাপারেও জোরালো সওয়াল করেছিলেন তিনি। এদিন নাসিকের নির্বাচনী জনসভায় মোদি বলেছেন,‘রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে এখন আজেবাজে কথা বলার সময় নয়। বরং এসব অর্থহীন কথাবার্তা মূল কাজে বাধার সৃষ্টি করে। ঈশ্বরের অভিপ্রায় পূরণ হবে। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের ভরসা রয়েছে।’ প্রসঙ্গত, অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে দীর্ঘ ৭০ বছর আইনি লড়াই চলছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি চলছে প্রতিদিন। এদিন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সম্মান দিতে দেশবাসীর কাজে আর্জি রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী।