পেশাদারি উচ্চশিক্ষায় দ্রুত অগ্রগতি ও সেই সূত্রে কর্মপ্রাপ্তির সুবর্ণ সুযোগ আসতে পারে। মিত্রবেশী শত্রু দ্বারা ... বিশদ
১৯৫৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মুরারইয়ের খুঁটকাইল গ্রামে জন্ম মুনকির সাহেবের। যদিও তাঁর বেড়ে ওঠা মুরারইয়ের ভীমপুর গ্রামে। দারিদ্র ও প্রতিকুলতার মধ্যে লাগোয়া নয়াগ্রাম জুনিয়র হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে তিনি পাইকর হাইস্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। পরে তিনি হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ থেকে কেমিস্ট্রিতে অনার্স করেন। পরবর্তী সময়ে বর্ধমান ইউনিভার্সিটি থেকে এমএসসি এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ। ৮৯ সালে মুম্বই আইআইটি যাওয়া রিসার্চের কাজে। সেখানে সাড়ে সাত বছর কাটানোর পর ১৯৯৬ সালে তাইওয়ানে গবেষণার কাজে যান। দীর্ঘ ১৭ বছর তাইওয়ানের তাইপোর ‘অ্যাকাডেমিয়া সিনিকা ইন্সটিটিউট অব কেমিস্ট্রিতে, কেমিস্ট্রির ‘ক্যাটালিসিস’ বা অনুঘটক নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। তার ৫৫টি গবেষণাপত্র ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
২০১৬ সালে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। ফেলোশিপের টাকায় ভীমপুরে ৬০ বিঘে জমি কেনেন। এলাকায় শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ২০ বিঘে জমির উপর কেরলের দারুল হুদা ইসলামিক ইউনিভার্সিটির মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। যদিও মালিকানায় তিনি ছিলেন না। ট্রাস্ট্র গঠন করে দিয়েছিলেন। সেখানে বিনামূল্যে পাঠদান হয়ে আসছে। বাকি জমির উপর তিনি মাতৃসদন হাসপাতাল গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই মতো উদ্যোগ নিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন প্রসূতিদের চিকিৎসা মহিলা ডাক্তার দিয়ে করাতে। কিন্তু সেটা আর হল না। বুধবার রাতে রামপুরহাট মেডিক্যালে তিনি মারা যান। জানা গিয়েছে, তিনি অবিবাহিত ছিলেন। দারুল হুদা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে একটা ঘর তাঁর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেখানেই থাকা এবং খাওয়া দাওয়া করতেন। দুদিন আগে তাঁকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছিল।
এদিন ভীমপুরে তাঁর দেহ সমাধিস্থ করা হয়। প্রচুর মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ ও এলাকার বিধায়ক মোশারফ হোসেন প্রমুখ। বিধায়ক বলেন, মুনকির সাহেবের মৃত্যুতে আমরা অত্যন্ত মর্মামত। গোটা বিশ্বে মুনকির সাহেবের নাম রয়েছে। সমস্ত উপার্জন তিনি দান করে গিয়েছেন।
অন্যদিকে কাজল সাহেব বলেন, মুনকির সাহেব তাঁর কর্মজীবনের উপার্জন মানুষের জন্য ব্যায় করেছেন। সমাজের উন্নয়নে শুধু সরকার এগিয়ে এলে হবে না, এই ধরনের মহামানবরা এগিয়ে এলে সমাজ এগিয়ে যাবে। তিনি এলাকায় অমর হয়ে থাকবেন। তিনি বলেন, মুনকির সাহবের ইচ্ছে পূরণে এলাকাবাসী সমবেতভাবে এগিয়ে এলে সরকার ও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।