গৃহে শুভ অনুষ্ঠান উপলক্ষে কর্মব্যস্ততা। অর্থকরী আয়ের ক্ষেত্রটি অনুকূল। ব্যয়ের চাপ কিছুটা বাড়তে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ
অত্যন্ত দুঃস্থ পরিবারের ছাত্রী সাহিদা। সে গোঁসাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ত। দিনকয়েক ধরে জ্বরে ভুগছিল। পরিবারের লোকজন গ্রামের হাতুড়েকে দেখান। কিন্তু জ্বর কমেনি। উল্টে সে ভুল বকছিল। এমনকী, কাউকে চিনতে পারছিল না। ওই নাবালিকাকে নাকি জিনে ধরেছে। তাই গত রবিবার সন্ধ্যায় তাকে দূর সম্পর্কের আত্মীয় পাশের শুকরাবাদ গ্রামের বছর ১৯-এর এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মারধর করে জিন তাড়াতে ঝাড়ফুঁক শুরু করে সে। পেশায় দিনমজুর ছাত্রীর দাদা সমীর শেখ বলেন, একাধিকবার বোনের গালে কষিয়ে থাপ্পড় মারা হয়।
সেইসঙ্গে চেপে ধরে গোবড় ও লঙ্কার গুঁড়ো গুলে খাওয়ানো হয়। এতেও কাজ না হওয়ায় চুলের মুঠি ধরে মেঝেয় ঠুকে দেওয়া হয়। এরপরই ওর কান ও নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। বোন অচৈতন্য হয়ে পড়ে। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ রামপুরহাট মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে সেখানেই বোনের মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন, কবিরাজের নির্যাতনের ফলেই বোন মারা গেল। কিন্তু হাসপাতালে না এনে কেন কবিরাজের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন? উত্তরে তিনি বলেন, আমরা খুবই দুঃস্থ। পড়াশোনাও সেভাবে জানি না। অনেকে বলল কবিরাজের কাছে নিয়ে গেলে সুস্থ হয়ে যাবে। সেকারণে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গ্রামের বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল সায়েম বলেন, ওই ছাত্রী কুসংস্কারের বলি হল।
অভিযুক্ত নলহাটির লোহাপুর এমআরএম হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র কবিরাজ নয় বলে দাবি করে। সে বলে, সাহিদাকে আমার বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। খুব ভুল বকছিল। ওদের কথামতোই মারধর করা হয়েছে। গ্রামবাসীরাও জানিয়েছে, ও কবিরাজ বা ঝাড়ফুঁক করে বলে আমরা কোনওদিন দেখিনি।