সামাজিক কল্যাণ কর্মে সাফল্য ও জনখ্যাতি। বাতজ সমস্যায় বিব্রত হতে পারেন। কাজ কারবারে শুভ। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, নবদ্বীপের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েকটি দূর্গাপুজো হলেও এতদিন সেই পুজোতে এখানকার মহিলারা এবং ছোটরা ঠিকমতো আনন্দ করতে পারত না। এবার তাই এই এলাকার মহিলারা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, সংসারের সমস্ত কাজ সামলে তাঁরা এলাকায় দুর্গা পুজো শুরু করবেন। যেমন ভাবনা, তেমনই কাজ। পুজোর বাকি হাতে গোনা মাত্র কয়েক দিন। তাই এখন থেকেই জোর কদমে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে মিতা, মামণি, রাখীরা চাঁদা সংগ্রহ থেকে প্রতিমা, প্যান্ডেল লাইট, মাইক বায়না করা সবই করছেন।
আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া এই এলাকায় বেশিরভাগ মানুষই শ্রমজীবী। কেউ তাঁত শ্রমিক, কেউ দিনমজুর, কেউ বা ছোটখাট ব্যবসা করেন। এমন পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা খুব সহজ কাজ নয়। তবে মাস দুয়েক আগে এলাকার মহিলারাই আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্য সরকারের দেওয়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের পাওয়া টাকা থেকে একমাসের টাকা দিয়েই সবাই পুজো করব।
নতুনপাড়ার মহিলারা জানান, আমরা সবাই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাই। সেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা থেকে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ যেমন হয় পাশাপাশি পুজোর জামাকাপড় কেনার খরচও করা হয়। এবার প্রত্যেকে এক মাসের টাকা দিয়ে এই পুজোর আয়োজন করেছি। প্রথম বছরেই পুরসভা থেকে পুজো করার অনুমোদন পেয়েছি। সরকারি অনুদানের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, আগামী বছর থেকে পুজোর অনুদানের টাকা যাতে আমরা পাই, সেই ব্যবস্থা করা হোক।
নারী শক্তির সম্পাদিকা রাখী বিশ্বাস বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা থাকলেও দুর্গাপুজো করার মতো সামর্থ্য ছিল না। কিন্তু লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় আমরা পুজো শুরু করতে চলেছি। পাশাপাশি এলাকার সহৃদয় ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাসও পেয়েছি।
নারী শক্তির পুজো কমিটির সভাপতি মিতা সাহা বলেন, আমাদের পাড়ায় কোনও দূর্গাপুজো না হওয়ায় পুজোর পাঁচ দিন এই এলাকা পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে থাকত। এবার আমাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অর্থে।
পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষা মামণি মণ্ডল বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা যখন হাজার টাকা হল তখনই আমাদের পাড়ার মহিলামহল এবার দূর্গাপুজো শুরু করার সিদ্ধান্ত নিই। পাড়ার মহিলাদের ইচ্ছা ছিল মাকে সিঁদুর ছুইয়ে নিজেরাও সিঁদুর খেলব। সেই ইচ্ছা পূরণ হতে চলেছে। এলাকার একটি কালীমন্দিরে ঢাক আছে। সে কারণে একজন ঢাকবাদকও অল্প টাকায় পাওয়া গিয়েছে।
নবদ্বীপ পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পারুল দেবনাথ বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প থেকে পাওয়া টাকায় রাজ্যের মহিলারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়েছেন। এসবই সম্ভব হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর জনউন্নয়নমুখী লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায়। মহিলাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।