পেশাদারি উচ্চশিক্ষায় দ্রুত অগ্রগতি ও সেই সূত্রে কর্মপ্রাপ্তির সুবর্ণ সুযোগ আসতে পারে। মিত্রবেশী শত্রু দ্বারা ... বিশদ
দশম শ্রেণির ছাত্রী অনিশার বইয়ের অভাবে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে পড়েছিল। ছিল না স্কুলে নিয়ে যাওয়ার মতো ব্যাগও। চা বাগানের ১০ নম্বর লাইনের শ্রমিক মহল্লায় অনিশাদের ছোট্ট ঘরে গিয়ে দেখা যায়, ছেঁড়া ব্যাগের ফাঁকা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে পুরনো ক্লাসের বই। পড়াশোনার পাশাপাশি ওই ছাত্রী ফুটবলেও খুব ভালো। কিন্তু মাঠে নামার মতো বুট, জার্সি কিংবা বল নেই তার। ফলে মাঠ থেকেও ধীরে ধীরে সরে দাঁড়াতে হচ্ছিল অনিশাকে। এই অবস্থা দেখে এদিন তার পাশে দাঁড়ান জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। অনিশার হাতে তুলে দেন বই, ব্যাগ, জুতো, ফুটবল এবং জার্সি। এ ঘটনায় যারপর নাই খুশি চা বাগানের ওই ছাত্রী। এদিনই সিপিএমের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে ছাত্রীর হাতে পড়াশোনা ও খেলাধুলোর উপকরণ তুলে দেয়।
জলপাইগুড়ির বেগম ফয়জেন্নেসা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া অনিশার কথায়, বাবা ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। মা ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের শ্রমিক। ফলে সবদিন কাজ জোটে না। বইপত্র, ব্যাগ, জুতোর অভাবে নতুন ক্লাসে এখনও পা রাখতে পারিনি। সেইসঙ্গে মাঠ থেকেও দূরে সরে যেতে হচ্ছিল আমাকে। এদিন যেভাবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাড়িতে এসে আমার পড়াশোনা ও খেলাধুলো চালিয়ে যেতে যা দরকার ছিল, তা দিয়ে গেলেন, এতে সত্যিই আমি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে প্রত্যেকের মুখ উজ্জ্বল করার চেষ্টা করব।
জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনয় রায় বলেন, পড়াশোনা ও খেলাধুলোয় চা বাগানের ওই ছাত্রীর যাতে কোনও প্রতিবন্ধকতা না আসে, সেটাই চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও তার পাশে থাকব বলে কথা দিয়েছি।
অনিশার মা রঞ্জিতা ওরাওঁ বললেন, প্রশাসন পাশে থাকায় আমার মেয়ে পড়াশোনা ও ফুটবল খেলা চালিয়ে যেতে পারবে। মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র হয়নি। সেটাও করে দেওয়ার উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। পাশাপাশি, এদিন বিকেলে অনিশা ওরাওঁয়ের বাড়িতে যান জলপাইগুড়ি সদরের বিডিও মিহির কর্মকার। তিনি জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর মা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান না। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও নেই তাঁদের। এদিন সমস্ত নথিপত্র নিয়ে আসা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব, ওই পরিবারটিকে সরকারি সহায়তা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।