শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থ লাভের যোগ। ডাক্তার, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, হস্তশিল্পী প্রভৃতিদের পক্ষে দিনটি শুভ। ... বিশদ
কিন্তু কীভাবে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের অধীনে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা হাতানোর জাল বিস্তার করেছিল জুয়েল? স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে দাবি, মাঝিয়ালি হাইস্কুলের টিআইসি হওয়ার সুবাদে জুয়েল মাস্টার জালিয়াতিকাণ্ডে বাড়তি সুবিধা পেয়েছিল। কারণ ধৃত জানত রাজ্য সরকার কবে, কীভাবে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের অধীনে ছাত্র ছাত্রীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবে। এক্ষেত্রে নিজের ছাড়াও অন্যান্য স্কুলের পাসওয়ার্ড কী হতে পারে আন্দাজ ছিল জুয়েল মাস্টারের। সেইমতো স্থানীয় কিছু যুবককে নিয়ে রাতারাতি সাইবার জালিয়াত গ্যাং তৈরি করে ফেলে সে। তারা নোডাল অফিসার পরিচয় দিয়ে একেকটি স্কুলের শিক্ষককে ফোনে বোকা বানিয়ে পাসওয়ার্ড বাগিয়ে নিত। যেমনটা ব্যাঙ্কের টাকা হাতানোর জন্য ব্যাঙ্ক ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফোনে প্রতারণা করে থাকে সাইবার প্রতারকরা। প্রায় একই কায়দা। আর সেই ফাঁদেই কিছু স্কুলের শিক্ষক পা দিতেন। না বুঝে ছদ্মবেশী নোডাল অফিসারকে ফোনে বলে ফেলতেন সরকারি শিক্ষা পোর্টালের পাসওয়ার্ড। আর সেই পাসওয়ার্ডকে হাতিয়ার করেই সরকারি শিক্ষা পোর্টালের অ্যাকসেস পেত প্রতারকরা। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে চক্রটি সরকারি পোর্টালে নথিভুক্ত থাকা পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে দিত নিমেষে। পরে অনলাইনে সরকারিভাবে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের টাকা ছাড়া শুরু হতেই অন্যান্যদের মতো জালিয়াতদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও ট্যাবের টাকা ঢুকত। আবার শুধুমাত্র পরিচয় ভাঁড়িয়ে ফোন করে পাসওয়ার্ড হাতানোই নয়। অনেকসময় সংশ্লিষ্ট স্কুলের নাম, তার প্রতিষ্ঠা দিবস দিয়েও একটি সহজ পাসওয়ার্ড আন্দাজ মতো বসিয়ে শিক্ষা পোর্টালে ঢুকতো জুয়েল মাস্টারের সাইবার হ্যাকাররা। এর কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, শিক্ষা দপ্তর থেকে শিক্ষা পোর্টাল ব্যবহারের জন্য পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়ছিল স্কুলগুলিকে। সেই পাসওয়ার্ড যাতে শিক্ষকদের মনে থাকে, সেজন্য সহজ করে সেট করত স্কুল কর্তৃপক্ষ। জুয়েল মাস্টার নিজেও যেহেতু টিআইসি ,তাই বিষয়টি আগে থেকেই সে জানত।
বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া জুয়েল মাস্টারকে বৃহস্পতিবার ইসলামপুর মহকুমা আদালতে হাজির করে পুলিস। আদালতের সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় ভাওয়াল বলেন, ইসলামপুর সাইবার থানার পুলিস জুয়েল মাস্টারকে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিল। আদালত ধৃতকে ১০ দিনের পুলিস হেফাজত মঞ্জুর করেছে। কিচকটোলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অজ্ঞাত পরিচয়ের নামে স্কুলের ১৩ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায়নি বলে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই মামলাতেই জুয়েল মাস্টারকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। পুলিস আদালতে স্পষ্ট জানিয়েছে তদন্ত প্রক্রিয়ায় উঠে এসেছে জুয়েল মাস্টার ট্যাব কেলেঙ্কারিকাণ্ডে মাস্টারমাইন্ড। তাই জুয়েলের ব্যাপারে এখন থেকেই বিস্তারিত খোঁজখবর রাখছে কলকাতা পুলিস সহ বেশকয়েকটি জেলার পুলিস।
তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষা সংগঠনের সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা বলেন, দীর্ঘদিন মমতাজুল ওরফে জুয়েল সংগঠনের চোপড়া ব্লকের দায়িত্বে ছিলেন। গত বছর কমিটি গঠন করা হয়নি বলে সদস্য হিসেবে ছিলেন তিনি।