শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থ লাভের যোগ। ডাক্তার, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, হস্তশিল্পী প্রভৃতিদের পক্ষে দিনটি শুভ। ... বিশদ
ওই চিরকুটের ভরসায় প্রয়াগরাজের মোতিলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ থেকে দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তাঁদের। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই কী ভাবে পরিবার পরিজনকে দিয়ে মৃতদেহের প্রাপ্তি স্বীকার করাচ্ছে যোগী প্রশাসন, তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে। ডেথ সার্টিফিকেট না থাকায় উত্তরপ্রদেশ সরকার ঘোষিত ক্ষতিপূরণ মেলারও কোনও সম্ভাবনা রইল না দুর্গত পরিবারগুলির। যোগী সরকারের গোটা প্রক্রিয়াটাই বেআইনি বলে সাফ জানাচ্ছেন আইনি বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহল। ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু না করায় যোগী সরকারের বিরুদ্ধে মৃতের সংখ্যা ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মা বাসন্তী দেবীর মৃত্যু সামনে থেকে দেখেছেন কলকাতার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের গল্ফগ্রিনের অশ্বিনী নগরের বাসিন্দা সুরজিৎ পোদ্দার। হঠাৎ ব্যারিকেড ভেঙে হুড়মুড়িয়ে আসা ভিড়ের মাঝে পড়ে যান তাঁরা। টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পরে যান সুরজিতের মা বাসন্তীদেবী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তার পরের ঘটনা আরও মর্মান্তিক। ডেথ সার্টিফিকেট দেবেন না? জানতে চাওয়ায়, তাঁকে ওই সরকারি চিরকুটে সই করিয়ে মায়ের মৃতদেহ দিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, বাড়ি চলে যান, পরে সব পেয়ে যাবেন হোয়াটস অ্যাপে। ভিন রাজ্যে অসহায় পরিবার বেশি ভাড়ার একটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে বাসন্তীদেবীর মৃতদেহ নিয়ে কলকাতায় ফেরে। বৃহস্পতিবার মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা টালিগঞ্জের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস, স্থানীয় কাউন্সিলার তপন দাশগুপ্ত। অরূপবাবু জানিয়েছেন, এটা নির্মম ঘটনা! মৃতের সংখ্যা ধামা চাপা দেওয়ার জন্য যোগী সরকারের কৌশল ছাড়া এটা আর কিছু নয়। একইমত কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী নীলাদ্রি শেখর চক্রবর্তীর। তিনি জানান, এই ভাবে কোনও জায়গা থেকে মৃতদেহ ছাড়া যায় না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। এতে তো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রয়াগরাজে মৃত্যু হয়েছে, তার কোনও নথিই রইল না। এতে পরিবার ডেথ সার্টিফিকেট পেতে সমস্যায় পড়বে। ফলে মৃত ব্যক্তির বিমা থাকলে, ক্লেইম পেতেও সমস্যা হবে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ডঃ নীরদরঞ্জন ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, যে অভিযোগ শুনছি তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রয়োজনে পরিবারটি আইনের পথে যেতেই পারেন। একই ভাবে ডেথ সার্টিফিকেট ও পোস্টমর্টেম ছাড়াই দেহ নিয়ে চলে আসতে শালবনীর উর্মিলা ভুইয়াঁর পরিবারকেও বাধ্য করা হয়েছে। উর্মিলাদেবীর মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়েছে খড়্গপুরের কৌশল্যার বাসিন্দা তাঁর কন্যা অঞ্জনা মাইতির হাতে। কিন্তু কেন ডেথ সার্টিফিকেট ও পোস্টমর্টেম ছাড়াই মৃতদেহ হস্তান্তর? মোতিলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ অরুণ তিওয়ারিও এর কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তাঁর কথায়, যেমন নির্দেশ এসেছে, তেমন কাজ করা হয়েছে।